ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে কোন লাভ হবে না ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৬ মে ২০১৫

নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে কোন লাভ হবে না ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। জনগণ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করেছে। জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের দলীয় প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। তাই নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে কোন লাভ হবে না। মঙ্গলবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নার্সিং কলেজ প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ (ধাত্রী) দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নূরুল হক, নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার সুরাইয়া বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য সেক্টরে আরও জনবল নিয়োগের বিষয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সত্বরই আরও ১০ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে নার্সদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই চিকিৎসকদের সঙ্গে আনুপাতিক হারে তাঁদের নিয়োগ দিতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার গরিব মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এ জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। মেডিক্যাল প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশ বন্ধে আইন হবে ॥ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ (এমআর)রা যাতে যখন তখন হাসপাতালে প্রবেশ করতে না পারে সেই জন্য একটি আইন করা হবে। তিনি বলেন, মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভরা যখন তখন হাসপাতালে প্রবেশ করে ডাক্তারদের বিভিন্ন গিফট দিয়ে তাদের ওষুধ লেখার জন্য প্রলুব্ধ করে। তাই তাদের হাসপাতালে প্রবেশের জন্য একটি আইন করা হবে। যাতে এমআররা নির্দিষ্ট সময়ের আগে এবং পরে হাসপাতালে প্রবেশ করতে না পারে। আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ্যাজমা এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং দি চেস্ট এ্যান্ড হার্ট এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ্যাজমা এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক মির্জা মোহাম্মদ হিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বেধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি, বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন এ্যাজমা এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডাঃ মোঃ সাইদুল ইসলাম, দি চেস্ট এ্যান্ড হার্ট এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব ডাঃ মোঃ নইমুল হক শাম্মী, ডাঃ বশির আহম্মদ, ডাঃ বিশ্বাস আখতার হোসেন প্রমুখ। এ্যাজমা এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ রোগী ফুসফুসের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। শুধুমাত্র এ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। এ্যাজমা রোগের সমন্বিত চিকিৎসা প্রদানের জন্য এ্যাজমা এ্যাসোসিয়েশন নতুন গাইড লাইন প্রকাশ করেছে। অন্য বক্তারা বলেন, এ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালীর অসুখ। যদি কোন কারণে শ্বাসনালীগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয় তখন বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়। জেনেটিক পরিবেশগত কারণে কারও কারও বেশি হয়ে থাকে। ঘর-বাড়ির ধুলো ময়লায় মাইট জিবাণু, ফুলের বা ঘাসের পরাগ রেণু, পাখির পালক, জীব-জন্তুর পশম, ছত্রাক, কিছু কিছু খাবার, কিছু কিছু ওষুধ, নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি থেকে এলার্জিজনিত এ্যাজমা হয়ে থাকে। এ্যাজমা রোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষণগুলো হলো বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ হতে পারে। শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হয়। ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারে না রোগী। ঘন ঘন কাশি। দম বন্ধ ভাব দেখা দেবে। রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকতে হয় অনেক সময়। আগে ধারণা ছিল এ্যাজমা একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত এ্যাজমা রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু দেশের সর্বত্র পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে ভুগতে হয় এ্যাজমা রোগীদের।
×