ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ জামাল ২-১ মুক্তিযোদ্ধা

জয়ের ধারায় ফিরল শেখ জামাল

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১১ মে ২০১৫

জয়ের ধারায় ফিরল শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রতিপক্ষকে বাগে পেয়েও যদি তার বিরুদ্ধে জয়লাভ করা না যায়, তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কী হতে পারে? ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে তেমনটাই ঘটেছে রবিবার। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের একমাত্র (লীগের ৪১ নম্বর) ম্যাচে গত লীগের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড ২-১ গোলের কষ্টার্জিত জয় কুড়িয়ে নিয়েছে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের বিরুদ্ধে। ম্যাচের প্রথমার্ধেই সব গোল হয়। জামালের খেলোয়াড়রাই প্রতিটি গোল করেন। গোলদাতারা হলেনÑ এমেকা ডার্লিংটন, ওয়েডসন এ্যানসেলমে এবং নাসির উদ্দিন চৌধুরী। শেষের জনের গোলটি ছিল আত্মঘাতী! ম্যাচের ৫১ মিনিটে জামালের মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজু লালকার্ড (দুইবার হলুদ কার্ড) পেয়ে বহিষ্কৃত হলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ‘বেঙ্গল ইয়োলোস’ খ্যাত শেখ জামাল। কিন্তু তারপরও বাকি ৩৯ মিনিট আপ্রাণ চেষ্টা করে জামালের রক্ষণদুর্গে ফাটল ধরিয়েও গোল করে সমতায় ফিরতে পারেনি ‘অল রেডস্’ খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা। এ জয়ে দুই ম্যাচ পর আবারও জয়ের ধারায় ফিরল মারুফুল হকের শিষ্যরা। আগের দুই ম্যাচে তারা ড্র করেছিল ব্রাদার্স ও মোহামেডানের সঙ্গে। চলমান লীগে উভয় দলই খেলেছে ৯টি করে ম্যাচ। জামাল জিতেছে ৭ ম্যাচে, ড্র করেছে ২ ম্যাচে। পয়েন্ট ২৩। ফলে শীর্ষস্থান অক্ষুণœই আছে তাদের (অবশ্য এ ম্যাচে তারা ড্র করলে বা হারলেও শীর্ষেই থাকত)। পক্ষান্তরে মুক্তি জিতেছে ৫ ম্যাচে, ড্র করেছে ১ ম্যাচে এবং হেরেছে ৩ ম্যাচে। পয়েন্ট ১৬। অবস্থান আগের মতোই, দ্বিতীয়। হেড টু হেডে অবশ্য এগিয়ে জামালই। গত লীগে তারা মুক্তিকে হারায় ১-০, ২-০ এবং ৪-৩ গোলে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই বলে স্বভাবতই ‘হাইভোল্টেজ’ এই ম্যাচের প্রতি ফুটবল অনুরাগীদের ছিল বাড়তি কৌতুহল। মাঠেও তার প্রতিফলন দেখা গেছে। পায়ে চোট পাওয়ায় নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামকে ছাড়াই খেলতে নামে জামাল। খেলার শুরুতেই গোল করে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। দুই মিনিটে মুক্তিযোদ্ধার পেনাল্টি বক্সের মধ্যে লিংকনের ক্রস থেকে হেডে গোল করে জামালকে এগিয়ে নেন নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন (১-০)। লীগে এটা এমেকার ব্যক্তিগত ষষ্ঠ গোল। গোল শোধের চেষ্টা চালায় মুক্তির এনামুলরা। সেই চেষ্টা সফলও হয়। তবে নিজেদের কোন নৈপুণ্যে নয়। শেখ জামালের দলীয় অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী বল ব্যাক পাস করেন গোল মাজহারুল ইসলামকে। গোলকিপার মাজহারুল ‘নিরীহ গতি’র সেই বলটি পা দিয়ে রিসিভ করতে যান। বল ও পায়ের সঠিক টাইমিং না হওয়াতে আত্মঘাতী গোল হজম করতে হয় শেখ জামালকে (১-১)। ম্যাচের ২৩ মিনিটে এমেকার কাছ থেকে পাওয়া বলে পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে শট করে গোল করেন শেখ জামালের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে (২-১)। লীগে এটি ওয়েডসনেরও ষষ্ঠ গোল। তবে গোলটি অফসাইডে হয়েছে বলে অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দলের খেলোয়াড়রা। তারা গোল বাতিলের জন্য রেফারি জালাল উদ্দিনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খেলা বন্ধ থাকে নয় মিনিট। শেষ পর্যন্ত রেফারির সিদ্ধান্ত মেনে নেয় মুক্তি শিবির। আবারও শুরু হয় খেলা। খেলার ৫১ মিনিটে শেখ জামালের মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজু ফাউল করেন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যমাঠের খেলোয়াড় জাহেদ পারভেজকে। ফাউল এর দায়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পান রাজু। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় শেখ জামাল। ম্যাচের বাকি ৩৯ মিনিট ১০ জনের জামালকে বাগে পেয়েও সমতা আনতে পারেনি আবু ইউসুফের শিষ্যরা। এবারের লীগে জামাল হারিয়েছে ফরাশগঞ্জকে ৪-১, রহমতগঞ্জকে ২-১, ফেনী সকার ক্লাবকে ২-০, চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৪-০, টিম বিজেএমসিকে ২-১ এবং শেখ রাসেলকে ১-০ গোলে। ড্র করে ব্রাদার্স (০-০) ও মোহামেডানের (১-১) সঙ্গে। মৌসুম-সূচক ফেডারেশন কাপে শেখ জামালের কাছে হেরে টানা দুইবার রানার্সআপ হওয়া ‘অল রেডস্’ খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লীগে শুরুটা ভালই করে। কিন্তু ভাল খেলেও অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় ব্রাদার্স (২-৫) ও মোহামেডানের (২-৩) কাছে। আর হারায় ফেনী সকারকে ২-১, চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১, বিজেএমসিকে ৩-১, শেখ রাসেলকে ২-১ এবং ঢাকা আবাহনীকে ১-০ গোলে। ১-১ গোলে ড্র করে রহমতগঞ্জের সঙ্গে।
×