ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বার্সিলোনার বিরুদ্ধে বাঁচা মরার লড়াইয়ে বেয়ার্ন মিউনিখ

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১২ মে ২০১৫

বার্সিলোনার বিরুদ্ধে বাঁচা মরার লড়াইয়ে বেয়ার্ন মিউনিখ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রীতিমতো পাহাড় ডিঙাতে হবে। প্রথম লেগে বড় ব্যবধানে হারের কারণে খাদের কিনারায় জার্মান পরাশক্তিরা। ফাইনালে খেলতে হলে অবিশ্বাস্য সাফল্যই পেতে হবে। অন্যদিকে বড় জয়ে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা আছে সুবিধাজনক অবস্থায়। এমন অবস্থায় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে আজ রাতে মুখোমুখি হচ্ছে বেয়ার্ন মিউনিখ ও বার্সিলোনা। মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ অ্যারানায় অনুষ্ঠিত হবে ধুন্ধুমার এই দ্বৈরথ। ন্যুক্যাম্পে সেমির প্রথম লেগে বেয়ার্নকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে খেলার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে বার্সা। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের ফাইনালে খেলা অনেকটাই সময়ের ব্যাপার। এর পরও দলটির কোচ লুইস এনরিকে প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা হওয়ায় কিছুটা হলেও সতর্ক আছেন। অন্যদিকে বাভারিয়ান শিবিরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়। কোচ পেপ গার্ডিওলা থেকে শুরু করে দলের ফুটবলাররা কোয়ার্টার ফাইনালের মতো মিরাকল ঘটানোর আশায় আছেন। দুরূহ লক্ষ্যে ময়দানী যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছে বেয়ার্ন। পোর্তোর মাঠে প্রথম লেগে ৩-১ গোলে হেরে সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ফিকে হয়ে গিয়েছিল বুন্দেসলীগার চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু ঘরের মাঠের ফিরতি পর্বে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৬-১ ব্যবধানের জয় তুলে নেয় বেয়ার্ন। বার্সার কাছে সেমির প্রথম লেগে তিন গোলে হারের পর এবারও একই সমীকরণের সামনে বাভারিয়ানরা। দলটির কোচ পেপ গার্ডিওলা ছক কষছেন বিশাল জয়ের। প্রথম লেগে হারের পর অনেকটাই হাল ছেড়ে দেয়া স্প্যানিশ এই কোচ এখন শেষ চেষ্টা করতে চান। কিন্তু পোর্তোর চেয়ে বার্সিলোনার রক্ষণ যে বেশ শক্তিশালী তা সব আসর মিলিয়ে সর্বশেষ সাত ম্যাচে স্পেনের দলটির কোন গোল না খাওয়াই প্রমাণ দেয়। টানা এত ম্যাচে গোল না খাওয়াটা ক্যাটালানদের ইতিহাসের একটি রেকর্ডও। বাঁচা মরার ম্যাচের আগে নিজেদের রক্ষণ নিয়েও বাড়তি পরিকল্পনা করতে হচ্ছে গার্ডিওলাকে। কারণ কোন গোল না খাওয়া ওই সাত ম্যাচে আবার দারুণ উজ্জ্বল ছিল বার্সিলোনার আক্রমণভাগ। এই সময়ে মোট ২৫ গোল করেছে তারা। দলটির আক্রমণভাগের মূল তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ বছরের শুরু থেকেই অসাধারণ ফর্মে আছেন। এই আক্রমণত্রয়ী কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন, তা একটা পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। তিন জন মিলে এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমে ১১৩ গোল করেছেন। মূলত তিনত্রয়ীর কাঁধে ভর করে এরই মধ্যে লা লিগার শিরোপা জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে বার্সিলোনা। বাকি দুই ম্যাচের একটিতে জয় পেলেই শিরোপা পুনরুদ্ধার নিশ্চিত হবে ক্যাটালানদের। ফলে ট্রেবল জয়ের স্বপ্নে বিভোর এখন বার্সিলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে এক পা রাখা লুইস এনরিকের দল স্প্যানিশ কাপেরও ফাইনালেও উঠেছে। এমন দুর্দান্ত একটা দলের বিরুদ্ধে কমপক্ষে চার গোলের ব্যবধানে জিততে হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করে দেখাতে হবে বেয়ার্নকে। সেখানে চোট সমস্যা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে গার্ডিওলাকে। আক্রমণভাগের দুই পরীক্ষিত তারকা ফ্রাঙ্ক রিবেরি ও আরিয়েন রোবেন এবং রক্ষণভাগের ডেভিড এ্যালাবা হোলগার বাডস্টুবার চোটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে খেলবেন না। তবে স্বাগতিকদের সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ত কোচ গার্ডিওলার বার্সা অভিজ্ঞতা। ২০০৮-২০১২ সাল পর্যন্ত এই চার বছরে ক্লাবটির হয়ে ১৪টি শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তাদের খুব কাছ থেকে দেখায় তাদের শক্তি আর দুর্বলতা সম্পর্কে ভালভাবেই জানেন তিনি। অবশ্য এই জানাটা গত সপ্তাহের ম্যাচে কোন কাজেই লাগেনি। এবার পারেন কিনা সেটাই দেখার। কিন্তু দলটির সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে হতাশ হতেই পারেন ভক্ত-সমর্থকরা। এতটাই বাজে পারফরমেন্স যে, খোদ বেয়ার্ন সমর্থকেরাই হয়ত চমকের স্বপ্ন দেখতে ভয় পাচ্ছেন! কেননা চার ম্যাচে হাতে রেখে বুন্দেসলীগার শিরোপা জেতার পর থেকে এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি তারা। টানা চার ম্যাচে হেরেছে দলটি। এ কারণেই কাজটা সহজ হবে না বলে মনে করছেন গার্ডিওলা। বলেন, প্রথম লেগে তারা (বার্সা) এগিয়ে যেতেই আমরা ম্যাচে আমাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি। এটা লজ্জার যে, আমরা তৃতীয় গোলটি খেয়েছি। কারণ ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও ফিরতি লেগে সুযোগ থাকে। কিন্তু ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পর কাজটা অত্যন্ত কঠিন। বার্সা কোচ এনরিকে বলেন, আমাদের অবশ্যই দ্বিতীয় লেগে ফাইনাল নিশ্চিত করতে হবে। আমি নিশ্চিত, এটা খুব কঠিন একটি ম্যাচ হবে। প্রথম লেগে সহজ জয়ে এগিয়ে থাকলেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
×