ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিরল প্রতিভা তাহিরা মাজহারের বিদায়

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১৪ মে ২০১৫

বিরল প্রতিভা তাহিরা মাজহারের বিদায়

তাহিরা মাজহার আলী ২৩শে মার্চ লাহোরে মারা গেছেন। তিনি ছিলেন এক বিরল প্রতিভার কমিউনিস্ট নেত্রী। ভারতে প্রায় বিস্মৃত একটি নাম। প্রায় ৯০ বছরে মারা গেলেন তাহিরা। ১৯৪৩ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। লাহোরের বিখ্যাত সেন্ট মেরি’জ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এখান থেকেই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভাল ফল করে উত্তীর্ণ হন। তখনই তিনি ছিলেন ছাত্রীদের নেত্রী। ছাত্রীদের একটি সাধারণ সভাতে জওহরলাল নেহরুকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করে। তার স্বামী মজ্আলি লাহোরের প্রখ্যাত মার্কসবাদী। দু’জনেই কমিউনিস্ট পার্টিতে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৪৩ সালে ১৮ বছর বয়সে তাহিরা পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই পার্টির প্রথম সারির নেত্রী হয়ে ওঠেন। যদিও তাহিরা আলী সরাসরি কোন সময় পার্টিতে যোগ দেননি। বরাবর তাহিরা সহযোগী থেকে গেছেন। তাহিরা আলীর জন্ম ১৯১৭ সালে। রুশ বিপ্লবের বছর। তাহিরা এটা গর্ব করে বলতেন এবং পৃথিবী পালটে দেয়া এ বিপ্লবের প্রতি তার এবং মজ্রের আনুগত্য প্রকাশ করতেন। কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেয়ার আগেই তাহিরা পাঞ্জাবের মহিলাদের মধ্যে বৈপ্লবিক কাজ করতে শুরু করেন। তখন পাঞ্জাবে ছিল মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি। তিনি সেই সমিতির অন্যতম প্রধান নেত্রী ছিলেন। দেশভাগের পর তাহিরা পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে গড়ে তোলেন সিপিপি-র গণসংগঠন ডেমোক্র্যাটিক উইমেন্স এ্যাসোসিয়েশন। তাহিরা জন্মেছিলেন এক রাজকীয় পরিবারে। তারা বাবা স্যার সিকান্দার হায়াত খান। ১৯৪০-এ পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউনিয়ানিস্ট পার্টির নেতা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ আসন্ন। কোনভাবেই তাকে ঠেকানো যাচ্ছে না। সে মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র মেনে নেয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করে। সেই প্রস্তাবের অনুলিপি মুসলিম লীগের সভাপতি মুহম্মদ আলী জিন্নার কাছে পার্টির পক্ষ থেকে পৌঁছে দেন তাহিরা আলী। পারিবারিক সূত্রেও জিন্না তাহিরার অত্যন্ত পরিচিত ছিলেন। তাহিরার বাবা জিন্নার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু তার রাজনীতির নয়। তাহিরা ছিলেন কমিউনিস্ট। পার্টি তাকে নির্দেশ দিয়েছিল সাইকেল চড়ে জিন্নাহর সঙ্গে দেখা করতে যেতে। সেটা নাকি সেদিন লাহোর দর্শনীয় বস্তু হয়েছিল। একে মহিলা তার ওপর জমিদার কন্যা। তাঁর মৃত্যুর ২ দিন পর নিউজ ইন্টারন্যাশনাল কাগজের (২৫/৩) সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় Daughter of Sir Sikandar Hayet Khan, Landlord and Premier of Pre-partition Punjab and wife of famous leftist Journalist Mayhar Ali Khan, Tahira Mayhar Ali charted out her own path and some would argue, surpassed the legacy of the two men. আগেই বলেছি তিনি পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক মহিলা আন্দোলন ও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পাকিস্তান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে সেটাই সবার আশা ছিল। অন্তত পাকিস্তান ভাগ করার পরও জিন্নাও সেটা চেয়েছিলেন। -গণশক্তি অনলাইন
×