ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ছিটমহল দখলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৫ মে ২০১৫

ছিটমহল দখলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগ

তাহমিন হক ববি, নীলফামারী থেকে ॥ ভারতের রাজ্যসভা ও লোকসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ার পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ছিটমহলগুলোতে প্রভাবশালী একটি মহল জমি দখল ও ঘরবাড়ি নির্মাণের পাঁয়তারা শুরু করেছে। ছিটমহলবাসীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণার পর প্রভাবশালী মহলটি উঠেপড়ে লেগেছে। অভিযোগ উঠেছে, ছিটমহলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এদিকে ছিটমহলবাসী যেন কোন সমস্যার সম্মুখীন না হন, সেজন্য গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর ছিটমহলের বাসিন্দাদের খোঁজখবর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবির পক্ষে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ছিটমহলে একটি প্রভাবশালী মহল অনুপ্রবেশ করে জায়গা জমি দখলের পাঁয়তারার অপচেষ্টা খবরে উদ্যোগ প্রকাশ করেছে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ স¤পাদক দীপ্তিমান সেন গুপ্ত। তিনি মুঠোফোনে জনকণ্ঠকে জানান, ৬৮ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ হলেও এখন একটি চক্র ছিটমহল নিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে ছিটমহলে কোন সুবিধাবাদী প্রভাবশালী মহল যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বাংলাদেশের পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীর ছিটমহলগুলোতে অবৈধ ব্যক্তির অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ছিটমহলগুলোতে যাতে কোন অবৈধ ব্যক্তি অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর হস্তে তা দমন করতে হবে। আর এজন্য ২০১১ সালের ১৫ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত উভয় দেশের সরকার পরিচালিত জরিপ ‘হেড কাউটিং’ কে প্রাধান্য দিতে হবে। তিনি জানান, ওই হেড কাউন্টিং অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ ছিটমহলের মোট ১৭ হাজার ১৬০.৬৩ একর ভূমি রয়েছে এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১ ছিটমহলের সাত হাজার ১১০.০২ একর ভারতের ভূমি রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ ছিটমহলের জনসংখ্যা ৩৭ হাজার ৩৬৯ এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ৫১ ছিটমহলের জনসংখ্যা ১৪ হাজার ৯০ জন। এই হেড কাউন্টিংকে যদি নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে হয়, তাহলে উভয় দেশের সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি জানান, বিভিন্নভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি প্রভাবশালী মহলের পেশীশক্তির বলে ছিটমহল দখলের চেষ্টা করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এজন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ছিটমহলগুলোতে বাঁশের খুঁটি আর টিনের চালা দিয়ে বাড়িঘর তৈরি করা হচ্ছে। এদিকে ছিটমহলবাসীরা যেন কোনরকম সমস্যার সম্মুখীন না হন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা পর ছিটমহলের বাসিন্দাদের খোঁজখবর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিজিবির পক্ষে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসান বলেন, কেউ যাতে প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে না পারে, সেজন্য ছিটমহলবাসীদের সতর্ক থাকতে এবং তা পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।
×