ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

একনেকে কোস্টগার্ড উন্নয়নসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২০ মে ২০১৫

একনেকে কোস্টগার্ড উন্নয়নসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সমুদ্র পথে মানবপাচার রোধ, অবৈধ পণ্য ও মৎস্য আহরণ এবং সমুদ্রে জলদস্যুতা প্রতিরোধে কোস্টগার্ড অধিদফতরকে আরও শক্তিশালী করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য কোস্টগার্ড উন্নয়নসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৯১ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ১ হাজার ৫৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আজম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, আইএমইডি সচিব সহিদুল্লাহ খন্দকার ও ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান প্রমুখ। সূত্র জানায়, একনেক বৈঠকে সরকারী অর্থের অপচয় কমাতে এখন থেকে শীতকালে নদী ভাঙ্গন সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগেই বর্ষাকালসহ বছরের অন্য সময় প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া সমাপ্তকরণসহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করতেও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের রেট সিডিউল সমন্বয় করে একটি রেট সিডিউল তৈরির জন্য পরিকল্পনা কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্ষাকালে নদী ভাঙ্গন সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় এটির গুণগত বাস্তবায়ন এবং প্রকৃত বাস্তবায়নের মাপকাঠির কোন নির্দেশক থাকে না। ফলে ব্যাপক অপচয় হয়। এসব কারণেই প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, কোস্টগার্ড উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের জলসীমায় অবৈধ মৎস্য আহরণ, অবৈধভাবে মানবপাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ করার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমা ও উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জলদস্যুতা প্রতিহত করতে এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, রাজশাহী কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই সড়ক উন্নয়ন, (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ১৩৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। গাজীপুর-আজমতপুর ইটাখোলা সড়কের চরসিন্দুর শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ১১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এনহ্যান্সমেন্ট অব অপারেশনাল ক্যাপাবিলিটি অব বাংলাদেশ কোস্টগার্ড প্রকল্প, এর ব্যয় ৪৬৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলাধীন সোনাহাট ব্রিজের সন্নিকটে ভুরুঙ্গামারী-মাদারগঞ্জ সড়ক পথকে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা এবং কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ হতে বজরা সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত তিস্তা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা এবং কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ হতে বজরা সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত তিস্তা নদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৪২০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। চট্রগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার পোল্ডার নং ৫৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১ সি এর সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প, এর ব্যয় ২০৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। কোস্টগার্ড উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩টি ইনশোর পেট্রোল ভেসেল, ৬টি বড় হাই স্পিড বোটসহ একটি ভাসমান ক্রেন কেনা হবে বলে একনেক পরবর্তী সম্মেলনে উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিডিয়ার দেখছি মানবপাচার বেড়ে গেছে। এজন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোস্টগার্ড অধিদফতরকে শক্তিশালী করার। মন্ত্রী জানান, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলাধীন সোনাহাট ব্রিজের সন্নিকটে ভুরুঙ্গামারী-মাদারগঞ্জ সড়ক পথকে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা এবং কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ হতে বজরা সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত তিস্তা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা এবং কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ হতে বজরা সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত তিস্তা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ নামক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কুড়িগ্রামে যদিও মঙ্গা এখন নেই তারপরও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ জেলাটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তাই কুড়িগ্রামসহ দেশের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আগামীতে বিশেষ প্রকল্প নেয়া হবে।
×