ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বার কাউন্সিল নির্বাচন স্থগিতের বিরুদ্ধে আপীল

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২২ মে ২০১৫

বার কাউন্সিল নির্বাচন স্থগিতের বিরুদ্ধে আপীল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছে তার বিরুদ্ধে আপীল করা হয়েছে। বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এ জে মোহাম্মদ আলী ও বার কাউন্সিলের সচিবের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দু’টি আপীল দায়ের করেন। আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে ২৪ মে রবিবার আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু প্রমুখ। এর আগে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সঙ্গত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন নিয়ে যান বার কাউন্সিলের সচিব আলতাব হোসাইন ও প্রার্থীদের পক্ষে আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। এর আগে আইনজীবীদের সনদসহ পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চে বার কাউন্সিলের নির্বাচন নিয়ে আনা আলাদা দুইটি রিটের শুনানি করে আদেশ দেন। গত রবিবার হাইকোর্টে নির্বাচন স্থগিত ও তফসিল অবৈধ ঘোষণা চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ। রিট আবেদনের পক্ষে পিটিশনার নিজেই গত সোমবার শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস শুনানিতে অংশ নেন। আইনজীবী ড. ইউনূস আলী আকন্দ বলেন, বার কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটার তালিকা ও ভোট পদ্ধতি নিয়ে এ রিট দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে আদালত নির্বাচন ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে বার কাউন্সিল নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ২০০৩ সালে সংশোধিত বার কাউন্সিল অধ্যাদেশের ৩ ধারা কেন অবৈধ ও সংবিধানের সহিত সংঘর্ষিক হবে না-তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুলও জারি করা হয়েছে। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আইনজীবীদের সনদসহ পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ এ সংস্থার নির্বাচন আগামী ২৭ মে হওয়ার কথা ছিল। এর আগে ২০ মে এ নির্বাচনের জন্য দিন ধার্য ছিল। বার কাউন্সিলের এক ‘জরুরী সভায়’ নেয়া সিদ্ধান্তে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হয়। বার কাউন্সিল সূত্র জানায়, নির্বাচনের ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বার কাউন্সিলের বর্তমান সদস্য সৈয়দ রেজাউর রহমান, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরসহ পাঁচ জন নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে আবেদন জানান। এ আবেদনের প্রেক্ষিতেই বার কাউন্সিল জরুরী সভায় মিলিত হয়। ওই সভায় নির্বাচন সাতদিন পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সভাপতিত্বে কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ নির্বাচিত ১৩ সদস্য সভায় অংশ নিয়েছিলেন। ভোটার তালিকায় থাকা কিছু ত্রুটি হালনাগাদ করার জন্য সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নির্বাচনে মোট ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে গত ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাতে কোন কোন আইনজীবীর একাধিক আইনজীবী সমিতির ভোটার থাকার বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। ভোটার তালিকায় ‘অস্পষ্টতা ও একই নাম একাধিকবার’ থাকার কথা জানিয়ে ১০১ জন আইনজীবী গত ২৯ এপ্রিল আলাদাভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও বার কাউন্সিল নিজস্ব নথিপত্রের সাহায্য না নিয়ে আইনজীবী সমিতিগুলোর পাঠানো সদস্য তালিকা ধরেই ভোটার তালিকা তৈরি করেছে। এরই মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন করে করা হয়েছে ৪৭ হাজার ২৪। পূর্বের তালিকায় যা ছিল ৪৮ হাজার ৪৬৫। আগামী ২৭ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বার কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীগণ জেনারেল আসনে ৭ জন এবং ৭টি গ্রুপ আসনে প্রত্যেকটির এলাকার লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যগণের মধ্য থেকে একজন করে ৭ জনকে নির্বাচিত করবেন। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবন, দেশের সকল জেলা সদরে দেওয়ানী আদালত প্রাঙ্গণে একটি করে ভোট কেন্দ্র থাকবে। এ ছাড়া বাজিতপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাঙ্গা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছায়সহ ৭৭টি কেন্দ্র্রে ভোট প্রদান করা যাবে। এ গ্রুপের মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর ঢাকা জেলার সকল লোকাল আইনজীবী সমিতি, গ্রুপ বি তে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত সকল লোকাল আইনজীবী সমিতি, সি গ্রুপে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলা, ডি গ্রুপে বৃহত্তর কুমিল্লা ও সিলেট জেলা, ই গ্রুপে বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী জেলা, এফ গ্রুপে বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া এবং এফ গ্রুপে বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার অন্তর্গত সকল লোকান আইনজীবী সমিতির। বার কাউন্সিলের নির্বাচনে যার প্যানেল দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সমন্বয় পরিষদের প্যানেলে রয়েছেন এম আমীর-উল-ইসলাম, আব্দুল বাসেত মজুমদার,রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আব্দুল মতিন খসরু, পরিমল চন্দ্র গুহ, জেড আই খান পান্না, শ.ম রেজাউল করিম। গ্রুপ অনুযায়ী রয়েছেন গ্রুপ এ ঢাকা আসনে কাজী মোঃ নজিবুল্লাহ হিরু, গ্রুপ বি আসনে আলহাজ এইচ আর জাহিদ আনোয়ার, গ্রুপ সি আসনে মোঃ ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, গ্রুপ ডি আসনে সরোয়ার আহম্মেদ চৌধুরী আবদাল, গ্রুপ ই আসনে পারভেজ আলম খান, গ্রুপ এফ আসনে মোঃ ইয়াহিয়া ও গ্রুপ জি আসনে মোঃ রেজাউল করিম। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল রয়েছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, এএম মাহবুব উদ্দিন (খোকন), মোঃ সানা উল্লাহ মিয়া, মোঃ বদরুদ্দোজা (বাদল), আলহাজ মোঃ বোরহান উদ্দিন, মোঃ মহসিন মিয়া, গ্রুপ এ আসনে রয়েছেন গোলাম মোস্তফা খান, বি আসনে মোহাম্মদ আব্দুল বাকী মিয়া, সি আসনে কবির চৌধুরী, ডি আসনে মোঃ কাইমুল হক, ই আসনে আব্দুল মালেক, এফ আসনে মোঃ ইসহাক ও জি আসনে একে এম হাফিজুর রহমান। ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী সমাজের প্যানেলে রয়েছেন সুব্রত চৌধুরী, শাহ মোঃ খসরুজ্জামান, একেএম জগুলল হায়দার আফরিক, সরওয়ারুই-দীন, মোঃ হেলাল উরদ্দিন, আব্দুল মোমেন চৌধুরী, মোঃ জহিরুল ইসরাম, গ্রুপ অনুযয়াী আসনে রয়েছেন এ আসনে এস এম আলতাফ হোসেন, বি আসনে নজরুল ইসলাম খান, সি আসনে আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর, ডি আসনে শান্তিপদ ঘোষ, ই আসনে আব্দুল আজিজ, এফ আসনে ডি এম বারী ও জি আসনে এটিএম এনামুল হক। এই তিনটি প্যানেলের বাইরে আরা যারা আছেন তাদের মধ্যে সাধারণ আসনে রয়েছেন আলহাজ মোঃ ইস্রাফিল, ড: মোঃ ইউনুস আলী আকন্দ, নাসির উদ্দিন আহম্মেদ (অসীম), মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ আবুল হোসেন, মোঃ এনামুল কবির হাওলাদার, মোঃ দেলোয়ার হোসেন মল্লিক, মোঃ মাহবুব মিয়া, মোঃ শওকত হায়াত, মোঃ সামছুল হক, সুলতান এ সবুর। গ্রুপ এ আসনে রয়েছেন সায়মা খান, ডি আসনে মাছুদ সালাউদ্দিন, মোঃ আখতার বকস জাহাঙ্গীর, এফ আসনে মোঃ মাহাবুবুল হক জোয়াদ্দার, জি আসনে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বুলু, মোঃ রফিকুল ইসলাম সরকার, মোঃ শহীদুল্লাহ বিশ্বাস হেলাল, শাকিল মোঃ শরিফুল হায়দার।
×