ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বেচ্ছাসেবক ও আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৩ মে ২০১৫

স্বেচ্ছাসেবক ও আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ও দাউদকান্দি, ২২ মে ॥ কুমিল্লার তিতাসে শাহ আলম সরকার নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার রাতে তিতাস উপজেলার হাড়াইকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহ আলম তিতাস উপজেলার হাড়াইকান্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়া সরকারের পুত্র এবং দৈনিক জনকণ্ঠের অফিস সহকারী নূরে আলম সরকারের ছোট ভাই। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, ছাগলে গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে হাড়াইকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের সঙ্গে শাহ আলমের বাগ্বিত-া হয়। নিহতের বড় ভাই নূরে আলম জানান, রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতা এবং ছাগলে গাছ খাওয়ার বাগ্বিত-ার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে শাহ আলম সরকার (৪০) কলাকান্দি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাড়াইকান্দি গ্রামে মাসুকের পুকুরপাড়ে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা বিএনপি দলীয় আলাউদ্দিন, মাসুক, আরিফ, হুমায়ুন, শরীফ, লিটন, হেরন, আতাউর, শাওনের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা দা, ছেনী, টেঁটা, বল্লম, হকিস্টিক নিয়ে শাহ আলমের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সে গুরুতর আহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় স্থানীয়ারা কলাকান্দি গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার পুত্র খোকনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে শুক্রবার তিতাস থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহত শাহ আলম স্থানীয় আ’লীগ নেতা বাহার-নাছির গ্রুপের কর্মী। হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে কলাকান্দি গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে খোকনকে আটক করেছে পুলিশ। অপর একটি সূত্রে স্থানীয় জহিরের ছেলে রনিকে আটক করার বিষয়টি জানিয়েছে। নিহতের বড় ভাই নূরে আলম জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আমার ছোট ভাই শাহ আলম ও সোলেমান কলাকান্দি বাজার থেকে হাড়াইকান্দি নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে সাহেববাড়ি পুকুরপাড়ে পৌঁছামাত্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কলাকান্দি ও হারাইকান্দি গ্রামের বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন ও মাসুকের নেতৃত্বে লিটন, আরিফ, খোকন, হুমায়ুন, কাউছার, হারুন ও রুবেল তার গতিরোধ করে এলোপাতাড়িভাবে কুপাতে থাকে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় রাতে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপের আঘাত রয়েছে। তিতাস থানা পুলিশ রাত ১০টায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে। দুপুর ২টায় লাশ হাড়াইকান্দিতে এসে পৌঁছলে নিহতের ছোট ছোট ৩ সন্তান শাকিব (১৩), রাকিব (৯), চাঁদনীর (৫) কান্নায় আশপাশের লোকজনও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নিহতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, গত কয়েকদিন যাবত আলাউদ্দিন ও মাসুক বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার সকালে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন, মুরাদনগর সার্কেল ইকবাল হোসেন হাজারী ও তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে, স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের মুখোশধারীদের এলোপাতাড়ি কোপে নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক স্থানীয় নেতা। নিহত মোঃ কামাল উদ্দিন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় এক জামায়াত নেতাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান সাংবাদিকদের জানান, চরম্বা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ মুখোশধারী কয়েকজন এসে তার ওপর হামলে পড়ে। তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে কামাল উদ্দিনকে। স্থানীয় লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। রাত সাড়ে এগারটার দিকে তিনি মারা যান। লোহাগাড়া থানা সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় চরম্বা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শামসুজ্জামান হেলালী ও স্থানীয় জামায়াত কর্মী মোঃ আবসারকে আটক করা হয়েছে। এ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামাল উদ্দিন চরম্বা ইউনিয়নের নাসির মোহাম্মদপাড়া গ্রামের রহমত আলীর পুত্র। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
×