ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আপনি এসে দেখে যান

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৪ মে ২০১৫

আপনি এসে দেখে যান

সম্প্রতি একটি সংবাদ ছাপা হয়েছিল দৈনিক জনকণ্ঠে। শেখ হাসিনাকে মোদির ফোন, সুসংবাদ নিয়ে ঢাকায় আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সুসংবাদের বিষয় ছিল (ক) তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি (খ) সীমান্ত চুক্তি (গ) করিডর হস্তান্তর বাস্তবায়ন (ঘ) ভূখণ্ড ব্যবহার চুক্তি এবং (ঙ) নেপাল-ভারত-বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় চুক্তি। বন্ধুসুলভ মনোভাব, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব। খরা মৌসুমে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করে এবং বর্ষায় পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে ভারত সকল বাঁধের মুখ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে অকাল বন্যায় ভাসিয়ে দিয়ে জানমাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন ঘটিয়ে থাকে। তেঁতুলিয়ার উজানে বাংলাবান্ধার সীমান্ত জিরোপয়েন্ট বাংলাদেশ সীমারেখার শেষ প্রান্ত হতে মাত্র এক শ’ গজ দূরে শিলিগুড়ি শহরের কাছে পশ্চিমবঙ্গ মহানন্দা নদে অন্যায়ভাবে বাঁধ নির্মাণ করেছে। পদ্মা এখন চর এবং এর শাখা নদীগুলো মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির পাশ দিয়ে হিমালয় হতে নেমে আসা তিস্তা বাংলাদেশের পাটগ্রামের পশ্চিম ধার দিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীর মধ্য দিয়ে যুমনায় মিলিত হয়েছে। অপরদিকে চীনের দীর্ঘপথ অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্র অরুনাচল রাজ্য ঘুরে একাধিক রাজ্যকে পানিতে ভিজিয়ে কুড়িগ্রামের পূর্বদিক দিয়ে ধুবরীকে অতিক্রম করে সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী এবং রৌমারিতে যুমনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ভারত ট্রানজিট পেলেও নেপাল বাংলাদেশের ওপর দিয়ে মংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্য আনা-নেয়ার অনুমতি পায়নি। ভারতে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কতিপয় মানবিক সমস্যা সমাধান করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। অসহায় মানুষ পানির পিপাসায় কাতর। জীব-জানোয়ার, পশুপাখি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মৎস্য বিলীন হওয়ার পথে। কৃষি খাত যুদ্ধ মোকাবেলায় রত, কৃষকের ক্রন্দনে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে আছে। বেকার সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিন্নমূল হতভাগাদের সংখ্যা গণনার বাইরে চলে যাচ্ছে, রোগবালাই ওদের ঘিরে ধরেছে। খালি পা, উলঙ্গ শরীর, মলিন চেহারা, খালিপেটে শিশু-কিশোরদের চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যুমনা। দু’তীরের চরাঞ্চলের বালুতে বসবাসরত অসহায় সন্তানদের পিতা-মাতা দিশাহারা। এতকিছুর পরও নতুন বাতাসে বাংলাদেশের জনগণ আশাবাদী, ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসবেন। ভালবাসা বিনিময় করবেন। যুক্তিতর্ক পরিহার করে মানবতাকে মেনে নিয়ে হিমালয় থেকে নেমে আসা বড় বড় নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রদানে দ্বিধা করবেন না। ইন্দিরা-মুজিব তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন। মেছের আলী শ্রীনগর।
×