ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিসিএল ॥ সুবিধাজনক অবস্থানে দক্ষিণাঞ্চল

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৫ মে ২০১৫

বিসিএল ॥ সুবিধাজনক অবস্থানে দক্ষিণাঞ্চল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই খেলছেন না রবিবার শুরু হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) চারদিনের ক্রিকেটের শেষ পর্বে। তাতে বিসিএলের আমেজ কমলেও দক্ষিণাঞ্চল-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে শিরোপা জেতার তীব্র আকাক্সক্ষার কমতি নেই। প্রথমদিনে অবশ্য চট্টগ্রামে প্রাইম দক্ষিণাঞ্চলই সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে দিন শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৭০ ওভারে ২৭২ রান করে ফেলেছে দক্ষিণাঞ্চল। মিরপুরে যে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল-বিসিবি উত্তরাঞ্চল লড়াই হচ্ছে, সেই ম্যাচে হার-জিতের চেয়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখানোই মুখ্য হয়ে উঠেছে। এ ম্যাচে জিতলেও যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না। তাতে প্রথমদিনে মধ্যাঞ্চলের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাজিমাত করেছেন। ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছেন। তার এ দুর্দান্ত ইনিংসে মধ্যাঞ্চলও প্রথমদিনে ৮ উইকেট হারিয়ে ৯০ ওভারে ২৭৮ রান করেছে। টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেছিলেন, জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে চান বিসিএলের শেষ পর্বে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলুক। এ জন্য পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে ক্রিকেটারদের বিশ্রাম শেষে এ পর্ব শুরু করা হয়। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আর খেলতে পারলেন কোথায়। সাকিব, তামিম, মুশফিক, রুবেল শেষ পর্বে খেলেননি। সঙ্গে ভারত সিরিজের জন্য যে ২৩ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করা হয়েছে, সেই দলের আরাফাত সানি, জুবায়ের হোসেন, শফিউল ইসলামও খেলছেন না। মাশরাফি বিন মর্তুজা তো দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে খেলেনই না। তাসকিন আহমেদও খেলেননি। দক্ষিণাঞ্চলে ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, মুস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার; পূর্বাঞ্চলে আবুল হাসান রাজু, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক; মধ্যাঞ্চলে রনি তালুকদার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, শুভগত হোম চৌধুরী, মোহাম্মদ শহীদ; উত্তরাঞ্চলে তাইজুল ইসলাম, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মন খেলছেন। ইনজুরি জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারদের এমনভাবে ঘিরে ধরেছে, বিসিএল না খেলে বিশ্রাম নেয়াই এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। তাই করেছেন ক্রিকেটাররা। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে নামার আগে এখন চোট আক্রান্ত ক্রিকেটাররা সুস্থ হয়ে উঠতে পারলেই দলের জন্য ভাল। তবে নিজেদের প্রমাণ করতে, জাতীয় দলে স্থান করে নিতে অনেকেই বিসিএল খেলছেন। টেস্টে নাসির হোসেন আবারও জায়গা করে নিতে চান। এনামুল হক বিজয়ও চান নিজেকে আবার মেলে ধরতে। এ জন্য বিশ্বকাপে যে ইনজুরিতে পড়েছিলেন, তা থেকে মুক্ত হয়ে বিসিএলে দুর্দান্ত খেলেছেন। শেষপর্বেও অংশ নিচ্ছেন। তবে প্রথমদিনটিতে ঝলক দেখাতে পারেননি। ৩৯ রানেই আউট হয়ে গেছেন। তবে ইমরুল কায়েস কিন্তু ঠিকই নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। ৫৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। বিজয় ও ইমরুল আউট হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের আর কোন উইকেটই পড়েনি। শাহরিয়ার নাফিস (৭৯) ও মোঃ মিঠুন (৮৮) দুইজনই ব্যাট করছেন। দুইজন মিলে তৃতীয় উইকেটে ১৬১ রানের বড় জুটিও গড়েছেন। তাতে বৃষ্টির বাধায় দুপুর সোয়া ১২ টায় শুরু হওয়া খেলায় দক্ষিণাঞ্চল প্রথমদিনেই বড় সংগ্রহও গড়ে ফেলেছে। যা দক্ষিণাঞ্চলকে শিরোপা জেতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মিরপুরে হার-জিতের চেয়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখানোই যেখানে লক্ষ্য, সেখানে মধ্যাঞ্চলের রনি তালুকদার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান। শুভগত হোমও ১ রানের বেশি করতে পারেননি। সেই তুলনায় মধ্যাঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন ২১০ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১১৩ রান করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার সঙ্গে মার্শাল আইয়ুবও ৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলায় ৩০০ রানের কাছাকাছি স্কোর গড়ার দিকে এগিয়ে গেছে মধ্যাঞ্চল। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল্লাহ-মার্শাল মিলে ১৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বাঁচিয়েছেন। না হলে ৬২ রানেই ৪ উইকেটের পতন ঘটে যাওয়ার পর বিপাকেই পড়ে যায় মধ্যাঞ্চল। উত্তরাঞ্চলের স্পিনার তাইজুল ইসলাম ঝলক দেখিয়েছেন। একাই ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন। স্কোর ॥ দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস ২৭২/২; ৭০ ওভার (মিঠুন ৮৮*, শাহরিয়ার ৭৯*, ইমরুল ৫৬, বিজয় ৩৯; রাব্বি ১/৪৫)। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ২৭৮/৮; ৯০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ১১৩, মার্শাল ৮৭, শহীদ ২১*, মেহরাব জুনিয়র ১৯, তাইজুল ৪/১০৬)।
×