ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জেএমবির নাশকতায় অর্থ যুগিয়েছে জামায়াত

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৬ মে ২০১৫

জেএমবির নাশকতায় অর্থ যুগিয়েছে জামায়াত

শংকর কুমার দে ॥ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবির নাশকতা ও সহিংসতা চালানোর জন্য অর্থের সংস্থান করেছে জামায়েতে ইসলামী। গত ৩ বছর ধরে বাংলাদেশে যে নাশকতা ও সহিংসতা চালানো হয়েছে তা জামায়াতে ইসলামের মদদেই সংগঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইসলামের শত্রু উল্লেখ করে তার সরকারকে উৎখাত করাই ছিল জামায়াত ও জঙ্গীদের টার্গেট। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণ কা-ের চার্জশীটে এই ধরনের তথ্যের কথা উল্লেখ করেছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। বর্ধমান খাগড়াগড়ের কা-ের অভিযুক্ত ২১ জঙ্গীর মধ্যে বাংলাদেশের ৪ জঙ্গীকে আসামি করে দেয়া চার্জশীটে জেএমবির সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। চার্জশীটভুক্ত ৪ বাংলাদেশী জঙ্গীসহ ৪ শতাধিক সাক্ষীকে জেরা করে এই ধরনের চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বর্ধমান খাগড়াগড় কা-ের চার্জশীটে। তদন্ত সংস্থা এনআইএ-এর দেয়া চার্জশীট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ এর দেয়া চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে, জেএমবির মতো জঙ্গী সংগঠনটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পর বেশ কোণঠাসা অবস্থায় ছিল। জেএমবির অর্থের উৎস কোথায় ছিল তা জানতে অনুসন্ধান করে এনআইএ জানতে পেরেছে তাদের অর্থের উৎস ছিল জামায়াতে ইসলামী। চার্জশীট দেয়ার আগে তদন্তের পর্যায়ে তদন্ত সংস্থা এনআইএ যে শ’চারেক সাক্ষীকে জেরা করেছে তাতে গত ৩ বছরের বাংলাদেশের নাশকতা ও সহিংসতার প্রসঙ্গে ওঠে এসেছে। বর্ধমান খাগড়াগড়ের বোমা বিস্ফোরণ কা-ের ঘটনার আগে থেকে বাংলাদেশের মাটিতে নাশকতা ও সহিংসতা চালানোর জন্য জামায়াতে ইসলামী জঙ্গী সংগঠন জেএমবির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল। এ জন্য জঙ্গী সংগঠন জেএমবি-কে প্রচুর অর্থ দেয়া হয়েছিল, এমন কী বহু ক্ষেত্রে বিস্ফোরক বানানোর দায়িত্বও দেয়া হয়েছিল জেএমবিকেই। বর্ধমান খাগড়াগড়ের চার্জশীটে যে ছবিটা দেয়া হয়েছে তার বাইরেও গোয়েন্দারা নানা তথ্য জানতে পেরেছেন বা আরও অনেক কিছুর আভাস পেয়েছেন। কিন্তু কোথাও অকাট্য তথ্য প্রমাণের অভাবে, আবার কোথাও কূটনৈতিক সংবেদনশীলতা বা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কারণে সেই সব তাদের চার্জশীটে আড়াল করে যেতে হয়েছে। সেগুলো কী? আটক জেএমবি জঙ্গীদের অনেকেই বলেছেন, ‘ইসলামের প্রধান শত্রু’ শেখ হাসিনাকে খতম করাটা ছিল তাদের সংগঠনের একটা প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু দুটো কারণে গোয়েন্দারা চার্জশীটে এই ব্যাপারটা উল্লেখ করতে পারেননি। এক, তারা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি এরকম বড় মাপের হামলা চালানোর ক্ষমতা জেএমবির আদৌ ছিল কি না; আর দুই, ভারতের মাটিতে বসে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছিল এটা ভারতের পক্ষে প্রকাশ্যে ঘোষণা করাটা একটু অস্বস্তিকর। এই কারণেই গোটা বিষয়টা নিয়ে তারা নীরব থাকাই শ্রেয় মনে করেছেন। যদিও বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের বিষয়টা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনআইএ কর্মকর্তারা।
×