ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুধু বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ মে ২০১৫

শুধু বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমুদ্র পথে পাচার হওয়া নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার আগে ‘বাংলাদেশী পরিচয়’ নিশ্চিত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেবলমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকদেরই ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের চার রাষ্ট্রদূতকে ঢাকায় ডেকে এনে এক বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশের কোন নাগরিকই যেন অবৈধ পথে এসব দেশে যেতে না পারে সেজন্য বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় মানবপাচার বেড়েছে। কোন কোন দেশে বাংলাদেশীদের গণকবরও পাওয়া যাচ্ছে। এই অবস্থায় কোনভাবেই যেন এসব দেশে মানবপাচার না হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই চার দেশের রাষ্ট্রদূতকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়। একই সঙ্গে এসব দেশে আশ্রয় পাওয়া নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার আগে পরিচয় নিশ্চিত করতে বলা হয়। কেবলমাত্র বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই দেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের উপস্থিতিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের ওই চার দেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেন। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও ওই বৈঠকে অংশ নেন। ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম ও কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম, নেপি’ডতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান ও জাকার্তায় নিযুক্ত বাংলাদেশের দূত নাজমুল কাওনাইনকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়া এবং তাদের ফেরত আনার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকে ওই চার দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূতরা জানান, মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই বেশি সতর্ক হতে হবে। এছাড়া মানবপাচার ঠেকাতে হলে জনসচেতনতাও বাড়ানোর পরামর্শ দেন কেউ কেউ। এভাবে মানবপাচারের ঘটনায় বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণœ হচ্ছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূতরা। বৈঠকে বলা হয়, মানবপাচার বন্ধে সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে। যে কোন উপায়ে মানবপাচার প্রতিরোধ করতে হবে। এছাড়া মানবপাচার বন্ধে আগামী ২৯মে ব্যাংককে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ থেকে সাগর পথে থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে দেশে-বিদেশে তোলপাড় শুরু হয়। তবে মানবপাচারের দায় নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব সময় অনীহা ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছিল, বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। বিদেশে কোন বাংলাদেশী নাগরিক সমস্যায় পড়লে সেটা দেখার দায়িত্ব আবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তবে বিভিন্ন দেশ থেকে চাপ আসার পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নড়েচড়ে বসে। সে কারণে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে চার দেশের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
×