ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা, না’গঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযানে ২২ ডাকাত গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৭ মে ২০১৫

ঢাকা, না’গঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযানে ২২ ডাকাত গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা থেকে ছয় মানব পাচারকারী ও অবৈধ ভিওআইপিসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। আর ঢাকা, নারায়ণঞ্জ ও গাজীপুরে পৃথক অভিযানে ২২ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, যানবাহন ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ থেকে অবৈধভাবে নারী শ্রমিক পাচারের সঙ্গে জড়িত ছয় জনকে আটক করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ জানান, মালিবাগের ডিআইটি রোডের ৪৭৬/বি বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানায়, র‌্যাব-৪ এর একটি দল মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা ও গোড়ান থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে গত সোমবার গভীর রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বছিলা রোড থেকে ডাকাতি প্রস্তুতি নেয়ার সময় মোঃ আবু সাঈদ, মোঃ মিঠু শিকদার, মোঃ আমিন, মোঃ মিজার মোল্লা ওরফে আজাদ, মোঃ জাহিদুল ইসলাম ওরফে পিন্টু, মোঃ বশির শিকদার, মোঃ স্বপন ফকির ও মোঃ আরাফাত আহম্মেদ ওরফে অপুকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশী পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, ১২টি ককটেল, এককেজি গান পাউডার, ১০টি মোবাইল ফোন, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার হয়। অভিযানকালে ৩/ ৪ ডাকাত পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা গত বছরের সেপ্টেম্বরে গাজীপুরের বোর্ড বাজার থেকে গাজীপুর এন এ আর সুয়েটারের কর্মচারীদের বেতন ভাতার ৭২ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ফ্যাক্টরিতে নেয়ার সময় ছিনতাই করে। এছাড়াও তারা আগামী ১ জুন আকিজ গ্রুপের স্টাফদের বেতন ভাতার টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করছিল। সোমবার রাতে ডিবি পুলিশ মতিঝিল থেকে মোঃ আঃ কাদির, মোঃ রাজু হোসেন ওরফে বাপ্পি, মোঃ হুমায়ুন কবির, মোঃ রাজু আহম্মেদ ও মোঃ দাউদ হোসেনকে ১টি মাইক্রোবাস, ১টি চাপাতি, ১টি ছোরা ও ১টি লোহার রডসহ গ্রেফতার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই ডাকাত পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার দুপুর বারোটায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম জানান, প্রথম অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা বহুল আলোচিত রাজধানীর গাবতলী আমিন বাজারে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে ৬ ছাত্রকে হত্যার ঘটনার আসামি। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই পবিত্র শব-ই-বরাতের রাতে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলাচর বালুমাঠে ধানম-ি মাস্টার মাইন্ড স্কুল এ্যান্ড কলেজের এ লেভেলের ছাত্র সামাম (২২), মিরপুর বাঙলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (২৪), একই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর প্রথম বর্ষের ছাত্র কান্ত (২৪) ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের (অনার্স) ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম পলাশ (২৬), তেজগাঁও কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান (২৩) ও মিরপুর কমার্স কলেজ সংলগ্ন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলজির (বি.ইউ.বি.টি.) ছাত্র মনির এবং আল আমিনকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে গ্রামবাসী হত্যা করে। আর দ্বিতীয় অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা অস্ত্রের মুখে প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। তারা ছিনতাইকৃত গাড়ি দিয়ে রাতভর ছিনতাই করে বেড়াত। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ মিডিয়া বিভাগের উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত গাজীপুর ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজধানীর লালবাগ থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক, ৬০ ড্রাম লুণ্ঠিত পামওয়েল, ১৭৯ বস্তা চাল, ডিপফ্রিজ ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়। এ ব্যাপারে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ডাকাত। তারা ডাকাতিকালে বাধা পেলে চালক ও হেলপারদের হত্যা করে থাকে। এরপর ট্রাকের মালামাল দ্রুত অন্য ট্রাকে তুলে বা মালামালসহ ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা মূলত মহাসড়ক ডাকাত চক্রের সদস্য।
×