ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৩৫ লাখ মানুষ দুর্ভোগে

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ॥ বিদ্যুত নেই ৪ দিন

প্রকাশিত: ০৬:২২, ২৭ মে ২০১৫

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ॥ বিদ্যুত নেই ৪ দিন

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৬ মে ॥ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের চরম অবহেলা, গাফিলতির কারণে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম দু’টি জেলায় দীর্ঘ ৪দিন ধরে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে দু’টি জেলার ১৪টি উপজেলার প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। পিডিবির নিজস্ব আপতকালীন ৩৩ কেভি সরবরাহ লাইনটি প্রতিবছর সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অথচ দুর্যোগ মুহূর্তে গ্রিড নিয়ন্ত্রণাধীন ১৩২ কেভি বিদ্যুত লাইনটি গত শুক্রবার (২২মে) রাত ৮.৪০ মিনিটের সময় ঝড়ে ১৩১ কেভি বিদ্যুত বিতরণ ও বিপণন লাইনটি তিস্তা সড়ক সেতুর পাশে গ্রিডের টাওয়ার ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। এ কারণে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। সূত্র জানায়, লালমনিরহাট পাওয়ার স্টেশন হতে কুড়িগ্রামসহ দু’টি জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। তিস্তা সড়ক সেতুর স্থানে গ্রিডের ১৩২ কেভি লাইনে তার শুক্রবার রাতে ছিঁড়ে পড়ায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই রকম দুর্যোগের সময় যাতে দু’টি শহরে বিদ্যুত সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা যায় তার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের কাউনিয়ায় সাব স্টেশন জামপার কেটে পিডিপির নিজস্ব লাইনে সংযোগ স্থাপন করে ৩৩ কেভি বিদ্যুত লাইন সচল রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। লালমনিরহাট বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে গত অর্থবছরে এই জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহার করার ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুত লাইনটি মেরামত ও সংস্কার করতে ৬৫ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। গ্রিডের লাইনটি ত্রুটি দেখা দিলে আপতকালীন সময়ের জন্য পিডিবির ৩৩ কেভি বিদ্যুত লাইনটি ব্যবহার করার কথা। সেই লাইনটি ব্যবহার করতে গিয়ে ত্রুটি ধরা পড়ে। এতে করে দু’টি জেলা ৪দিন ধরে অন্ধকারে রয়েছে। দিনের বেলায় বিদ্যুতের অভাবে ব্যাংক, বীমা, অফিস আদালত, মোবাইল নেট ওয়ার্কসহ সকল কার্যক্রম স্থবির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪ দিন ধরে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় দু’টি জেলার প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বিদ্যুত বিহীন অবস্থায় চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগের পড়েছে। ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন বন্ধ করে রেখেছে। ফলে কয়েক হাজার শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। গত ৪ দিন ধরে সন্ধ্যা নামার পরপরই শহর দু’টি ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়। ছিঁচকে চুরি ও নানা ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে লালমনিরহাট শহরের জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা জানান, ৪ দিন ধরে বিদ্যুত না থাকায় ফ্রিজে ও তাপ নিয়ন্ত্রত ওষুধের গুণগতমান বিনষ্ট হচ্ছে। এদিকে একটি সূত্রে জান যায়, পিডিবি ও গ্রিড পৃথক পৃথকভাবে দু’টি বিভাগ নিয়ন্ত্রণ হয়। পিডিবি ৩৩ কেভি বিদ্যুত লাইনটি নিয়ন্ত্রণ করে লালমনিরহাট নির্বাহী প্রকৗশলী। ১৩২ কেভি বিদ্যুত লাইনটি নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিড সংরক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রংপুর। এই দুই বিভাগের টানাহেঁচড়ার কারণে গত ৪ দিনেও ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুত লাইনটি মেরামত করে দুই জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। লালমনিরহাট বিদ্যুত বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসনাত জামান জানান, পিডিপির জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহৃত নিজস্ব ৩৩ কেভি লাইনটির একটি খুঁটি পড়ে গেছে। এ কারণে বিকল্প লাইনে দু’টি জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি।
×