ছোট ছোট ভূমিকম্পে যতটুকু না কাঁপছে মাটি, তারচে’ বেশি কাঁপছে আমাদের মন! অজানা আতঙ্কে ভুগছি আমরা, ভুগছে প্রতিটা মানুষ। এ আতঙ্ক হঠাৎ করে হাজার মাইল দূরের নেপাল থেকে উড়ে এসেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে এখন ভূমিকম্প আতঙ্ক বিরাজমান। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের ওপর বড় ধরনের একটি ভূমিকম্প বয়ে যেতে পারে! এর ফলে, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সীমাহীন ক্ষতি সাধিত হওয়ার প্রকট আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের এ আগাম বার্তা আসন্ন বিপদগামীদের সতর্ক হওয়ার জন্য জানানো হলেও মূলত এতে মানুষের মনে ভয় ঢুকে গেছে। চায়ের দোকান থেকে অফিস-আদালত, রিক্সা শ্রমিক থেকে বিমানের পাইলট সবার কাছে আলাপচারিতার মুখ্য বিষয় এখন ‘আসন্ন (?) ভূমিকম্প।’ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে ভূমিকম্প মোকাবেলার ‘আগাম মহড়া’। প্রশ্ন হচ্ছে, এ মহড়া কতটুকু কার্যকর হবে, যদি না মানুষ নিজ উদ্যোগে আগে সচেতন না হন? রানা প্লাজার মতো একটি ভবন ধসের উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেখানে অর্ধ মাস অতিক্রম করেছে, সেখানে ‘দেশব্যাপী ভয়াল ভূমিকম্প’ মোকাবেলা করতে কতটুকু প্রস্তুত আমাদের প্রশাসন? রানা প্লাজায় প্রশাসনের উদ্ধার অভিযানের কোন গাফিলতি ছিল না, তাদের প্রচেষ্টার ঘাটতি ছিল না, উৎসুক জনতারও আন্তরিকতার অভাব ছিল না, কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর সতর্কতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় ওইসব মানুষ কি প্রশিক্ষিত ছিল? কেন কোম্পানি কর্র্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেননি, কেন প্রশিক্ষণ নেননি শ্রমিকরা? এখানে প্রশ্ন রাখছি না, তবে জানার ইচ্ছা রয়েছে। আমি বলছি না, প্রশিক্ষিত হলে ওই ভয়াবহ ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটত না; ঘটত তবে তা সংখ্যায় কম হতে পারত। ঠিক একইভাবে আমরা যদি নিজ উদ্যোগে সচেতন না হই, তাহলে আসন্ন ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবেলা করাটা আমাদের জন্য কঠিন হতে পারে। আমরা ভূমিকম্প নিয়ে আজ আতঙ্কিত। তবে এ ভূমিকম্প কেন হচ্ছে? কাটা হচ্ছে গাছ-পালা, ভরাট হচ্ছে নদ-নদী, অপরিকল্পিতভাবে উঠছে ইট-বালু-লোহা-সিমেন্টের বসতি। এর ফলে, দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে মাটি দেবে যায়, এটিও সম্ভাব্য ভূমিকম্পে অতিরিক্ত ক্ষতির কারণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: