ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্ভোগ লাঘব হবে ॥ নামকরণ বঙ্গবন্ধুর তিন শহীদ সন্তানের নামে

কলাপাড়ায় শেষের পথে তিন সেতুর কাজ

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৮ মে ২০১৫

কলাপাড়ায় শেষের পথে তিন সেতুর কাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৭ মে ॥ দক্ষিণজনপদে সাগরপারের কলাপাড়ার মানুষ ভাবতেই পারছেন না অবহেলিত এ জনপদের ২২ কিমি. সড়কে তিন নদীতে একই সময় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষের পথে। পর্যটক দর্শনার্থী মুখিয়ে আছেন ব্রিজ পার হয়ে কখন কুয়াকাটায় যাবেন। শেষ হয় না তাদের অপেক্ষার প্রহর। কবে, কখন সেই শুভক্ষণ ধরা দেবে এমন স্বপ্নেই বিভোর এ জনপদের লাখ লাখ মানুষ। মুখিয়ে আছেন সবাই, কবে সেতু পেরিয়ে মুহূর্তেই পৌঁছবেন কুয়াকাটায়। কলাপাড়া উপজেলা সদর থেকে কুয়াকাটা ২২ কিলোমিটার সড়ক। কিন্তু যেতে সময় লেগে যায় প্রায় দুই ঘণ্টা। কখনও তিন থেকে চার ঘণ্টা। বঙ্গবন্ধুর শহীদ সন্তানদের নামে কলাপাড়া শহরের আন্ধার মানিক নদীর উপরে শেখ কামাল, হাজীপুরে সোনাতলা নদীর উপরে শেখ জামাল ও শিববাড়িয়া নদীর উপরে শেখ রাসেল সেতু মহাজোট সরকার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সেতু তিনটির নির্মাণ কাজ শেষের পথে। ইতোমধ্যে শেখ রাসেল সেতুর ৯০ ভাগ, শেখ জামাল সেতুর ৮০ ভাগ এবং শেখ কামাল সেতুর প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সেতু তিনটির নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শুরু করেন বৃহত্তর বরিশালে জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম সেতু তিনটির নির্মাণ কাজ। একই সঙ্গে তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ ছিল এ জনপদের মানুষের কাছে অপ্রত্যাশিত, অবাস্তব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা বাস্তবেই পরিণত হলো। আন্ধার মানিক নদীর উপরে শেখ কামাল সেতুটি নির্মিত হচ্ছে ৮৯১ দশমিক ৭৬ মিটার দীর্ঘ। ১৯ স্প্যানের ওপর সেতুটির রয়েছে আরও ৪০০ মিটার সংযোগ সড়ক। এটির ব্যয় বরাদ্দ ৬৫ কোটি এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ২০১০ সালের ১৬ মে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সোনাতলা নদীর উপরে ১০ স্প্যানের ওপরে নির্মিত হচ্ছে ৪৮২ দশমিক ৩৭৫ মিটার দীর্ঘ শেখ জামাল সেতু। এছাড়া সংযোগ সড়ক রয়েছে ৪০০ মিটার। এটির ব্যয় বরাদ্দ ৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ দরপত্র আহ্বান করা হয়। এটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট। ৪০৮ দশমিক ৩৬ মিটার দীর্ঘ শেখ রাসেল সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে শিববাড়িয়া নদীর উপরে। নয় স্প্যানের ওপরে নির্মিত সেতুটির ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে ২৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এটির দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর। ৪০০ মিটার সংযোগ সড়ক নিয়ে সমস্যার কারণে এ সেতুটির নির্মাণ কাজে বিলম্ব ঘটে। কলাপাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির পন্না মিয়া জানালেন, ২০১৫ সালের মধ্যে সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এখানকার সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যে কাজটি কেউ ৪৪ বছরে করেননি। তা প্রধানমন্ত্রী করেছেন। ইনশআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছরের শেষের দিকে দক্ষিণের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবেন এ সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে।’
×