ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মানবপাচার রোধে সাত বিভাগে ৭ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৮ মে ২০১৫

মানবপাচার রোধে সাত বিভাগে ৭ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবপাচার রোধে দেশের সাত বিভাগে সাতটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বুধবার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। দেশের প্রতিটি বিভাগে ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। বিদ্যমান আইনে এ ট্রাইব্যুনাল পরিচালিত হবে। প্রস্তাব করার কারণ, বিভাগে বিচার হলে ভিকটিমদের বিচার পাওয়া সহজ হবে। সিন্ডিকেটের কারণে যেসব জায়গায় অপরাধ হয় সেসব জায়গায় ( জেলায়) বিচার হলে ভিকটিমদের অভিযোগ প্রমাণ নাও হতে পারে। আমার মনে হয় বিভাগে করলেই বিচার পাওয়া সহজ হবে। অন্যদিকে, সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতকার শেষে আইনমন্ত্রী বলেছেন, মৃত্যুদ- ও সর্বোচ্চ শাস্তি না দেয়ার পক্ষে তারা। আমি বলেছি, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া থেকে সরে আসার কোন সুযোগ নেই। তবে নতুন আইন করার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানান আইনমন্ত্রী। সংগঠনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনেক আগেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি বাজেটের পর মন্ত্রিসভায় উঠবে । ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা এ বিচার কাজ পরিচালনা করবেন। আইনের ২২ ধারায় ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ আইনের বিধান অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের দায়রা আদালতের সব ক্ষমতা থাকবে। আইনের ২১ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ট্রাইবুনাল গঠন না হওয়া পর্যন্ত সরকার প্রত্যেক জেলার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালকে ওই জেলার মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। এ আইনের অধীনে সংঘটিত কোন অপরাধের অভিযোগ গঠনের ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে।’ আইনমন্ত্রী বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে। আইন কার্যকরে বিধিও করা যাবে। মন্ত্রী জানান, মানবপাচারে ৭৫৭টি মামলা হয়েছে, অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে ২০০টির এবং ১২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। অবৈধভাবে যাওয়া লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, অপরাধ না করলে শাস্তি হবে না। যারা পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে তা আমরা কখনও বলিনি। পাচারের শিকার হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না। তবে পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ইয়োহান ফ্রিসেলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুদ- ও সর্বোচ্চ শাস্তি না দেয়ার পক্ষে তারা। আমি বলেছি, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া থেকে সরে আসার কোন সুযোগ নেই। তবে নতুন আইন করার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানান আইনমন্ত্রী। সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার অন্য বিষয়ও তুলে ধরেন তিনি। সংগঠনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সংশোধন প্রস্তাব অনেক আগেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বৈঠকে তোলা হবে। দেরি হওয়ার কারণ নেই। বিষয়টি বাজেটের পর মন্ত্রিসভায় উঠবে বলেও জানান তিনি। মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে ‘সবার মতামতকে’ প্রাধান্য দিয়েই মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে বলেও সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন আনিসুল হক। বর্তমানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ হলেও তা কমিয়ে ১৬ করার একটি পরিকল্পনা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
×