ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মহেশখালীর রাজাকার শামসুদ্দোহার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৮ মে ২০১৫

মহেশখালীর রাজাকার শামসুদ্দোহার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত মহেশখালীর ৭ রাজাকারের মধ্যে রাজাকার মৌলভী মোঃ শামসুদ্দোহা (৯০) অসুস্থ অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী জানান, গত সোমবার বিকেল তিনটায় শামসুদ্দোহাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর সময় তিনি হাসপাতালের নতুন ভবনের মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর ১৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করার ও নির্দেশ দেযা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ প্রদান করেন। ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়না জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মহেশখালী থেকে তিন রাজাকারকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুহুরীডেল গ্রামের জিন্নাত আলী, পৌর এলাকার ঘরোকঘাটা গ্রামরে মৌলভী ওসমান গনি, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের নলবিলা গ্রামের নুরুল ইসলাম। শনিবারে আরেক রাজাকার মৌলভী মোঃ শামসুদ্দোহা গ্রেফতার করা হয়। সোমবার আন্তর্জাতি অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোন নির্দেশ দেয়া হয। ফরমান আলী আরও জানান, শামসুদ্দোহা কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার বিচারাধীন আসামি ছিলেন। মহেশখালী থেকে গ্রেফতারের পর তাকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। তাকে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। মহেশখালী উপজেলায় একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার ১৯ আসামির মধ্যে একজন শামসুদ্দোহা। ওই মামলায় কক্সবাজার জেলার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের দুইজন সালামত উল্লাহ খান ও মোহাম্মদ রশিদ মিয়াসহ মোট ৭জন গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে বড় মহেশখালীর বড়ডেইল এলাকার মৃত রওশন আলীর ছেলে শামসুদ্দোহাকে শনিবার (২৩ মে) গভীর রাতে একই গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলাটির ১৯ আসামির মধ্যে শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় বড় মহেশখালীর দেবাঙ্কপাড়ার নুরুল আমিন পরিবারে চারজনকে হত্যা, তাদের বাড়ি পোড়ানো এবং লুটপাটের অভিযোগ ছিল। এ ছাড়া সালামত উল্লাহর মামলায় তদন্তে দেখা গেছে প্রায় ৭৫ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৩২ জন রাজাকার ইতমধ্যে মারা গেছেন। প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলায় এর আগে গত ১লা মার্চ কক্সবাজারের তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরোয়ানা জারির পরের দিন ২ মার্চ সালামত উল্লাহ খান ও আব্দুর রশিদ এমপিকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার পরে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পরোয়ানা জারি করার পর থেকে অপর আসামি মৌলভী জাকারিয়া পালাতক রয়েছে। বৃহস্পতিবার আমরা ওই মামলায় আদালত আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের আবেদন করার পর তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন আদালত।
×