ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত প্রীতি হ্যান্ডবল ম্যাচ, অভিমত পশ্চিমবঙ্গ হ্যান্ডবল দলের কোচ ও খেলোয়াড়ের

‘অসাধারণ খেলেছে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ’

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২৮ মে ২০১৫

‘অসাধারণ খেলেছে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বুধবার। বিকেল। জ্যৈষ্ঠের প্রাণ ওষ্ঠাগত গরম। স্থান পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম মনসুর হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম। প্রীতি হ্যান্ডবল ম্যাচে মুখোমুখি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হ্যান্ডবল (পুরুষ) দল বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। হাড্ডহাড্ডি লড়াইয়ে বিজিবি জিতল ৩৩-৩০ পয়েন্টে। অথচ শুরুতে অনেকক্ষণ বিজিবি পিছিয়ে ছিল প্রতিপক্ষের চেয়ে। প্রথমার্ধে অবশ্য ড্র রাখতে সক্ষম হয় বিজিবি (১৫-১৫)। দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই নিজেদের উজার করে দিয়ে খেলতে থাকে তারা। একপর্যায়ে বিজিবি এগিয়ে যায় ১৮-১৭ গোলে। সেই লিড জয়ের আগ পর্যন্ত ধরে রাখে তারা। গোল করার প্রাপ্ত সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের একাধিক গোলপ্রচেষ্টা সফলভাবে নসাৎ করে দেয় তারা। ফলে মধুর জয় ধরা দেয় তৃষ্ণার্ত হাতের মুঠোয়। এ জয়ে অনাবিল আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে বিজিবি দল এবং তাদের সমর্থকরা। জয়ধ্বনিতে কেঁপে ওঠে স্টেডিয়াম। ২৯ বছর পর শুরুটা হলো মধুর জয় দিয়ে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ হ্যান্ডবল দল বাংলাদেশে এসে প্রীতি ম্যাচ খেলে গিয়েছিল সেই ১৯৮৬ সালে। খেলা শেষে কথা হয় পশ্চিমবঙ্গ দলের ৬ নম্বর জার্সিধারী দর্শন বুরার সঙ্গে। বয়স ২৪, অবিবাহিত। দিল্লী নিবাসী সুঠামদেহী এবং সুদর্শন এই হ্যান্ডবলার ভারত নৌবাহিনীতে চাকরি করেন গত ১৫ বছর ধরে। আর হ্যান্ডবল খেলছেন ১২ বছর ধরে। এত খেলা থাকতে হ্যান্ডবল খেলাটাকে কেন বেছে নিলেন? ‘হ্যান্ডবল খেলা হচ্ছে বেস্ট খেলা, অনেক দ্রুতগতির খেলা। তাই এ খেলাটি আমার অনেক পছন্দ।’ দর্শনের জবাব। বাংলাদেশের বিজিবির সঙ্গে তো ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও ম্যাচে হেরে গেলেন। কেন হারলেন? গলদটা আসলে কোথায় ছিল? ‘ম্যাচে হার-জিত থাকবেই। আমরা আজ ম্যাচে অনেক মিস পাসিং করেছি। ঠিকমতো ডিফেন্স করতে পারিনি। তাছাড়া আমাদের দলের এক খেলোয়াড় চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। সব মিলিয়ে ম্যাচে সেগুলোরই প্রভাবে হেরেছি।’ দমের কি কোন ঘাটতি ছিল? ‘না, একদমই নয়।’ বাংলাদেশের আবহাওয়া বা তাপমাত্রা এখন অনেক। এ গরমে কি খেলতে কোন সমস্যা হয়নি? ‘মোটেও না। এখানকার আবহাওয়া তো অনেক ভাল, সহনীয়। আমাদের কোন অসুবিধেই হয়নি।’ দর্শনের ভাষ্য। বিজিবি ম্যাচে অনেক ভাল খেলেছে বলে স্বীকার করলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানালেন, এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। এর আগে ভারত জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন। তবে মূল দলে খেলা হয়নি। ভারতের মণিপুরের নয়াচন্দ্র নাইসকে নিজের আদর্শ হ্যান্ডবলার মানেন দর্শন। ছোট ভাই নরেন্দর বুরাও হ্যান্ডবল খেলেন। দর্শনের ভবিষ্যত লক্ষ্য এশিয়ান গেমস খেলা। পশ্চিমবঙ্গ দলের কোচ ফিরোজ খানও একমত দর্শনের সঙ্গে, ‘বিজিবি খুবই ভাল খেলেছে। আমরাও সমান সমান খেলেছি। তবে আমরা ভুল করেছি বেশি, ওরা কম। তাই ওরাই জিতেছে। আশা করি পরের ম্যাচে এমন ভুল আর হবে না।’ বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনারও বেশ প্রশংসা করলেন ফিরোজ খান। ভারত থেকে আগত পশ্চিমবঙ্গ (পুরুষ ও মহিলা) হ্যান্ডবল দল খেলবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। মোট ম্যাচ হবে আটটি। বাংলাদেশের পক্ষে পুরুষ বিভাগের খেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ পুলিশ এবং মহিলা বিভাগের খেলায় বিজেএমসি ও বাংলাদেশ আনসার অংশ নেবে। এই ম্যাচগুলো পরিচালনার জন্য ছয় লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা বাজেট ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে পৃষ্ঠপোষক বাবদ দ্য এশিয়ান এইজ দুই লাখ টাকা, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (কিউট) এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং ওরিয়েন্ট ব্রেড এক লাখ টাকা প্রদান করবে। অবশিষ্ট অর্থ (দুই লাখ পঁচিশ হাজার টাকা) ফেডারেশন থেকে নির্বাহ করা হবে।
×