ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের ব্যাটিং নিয়ে সতর্ক মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৩০ মে ২০১৫

ভারতের ব্যাটিং নিয়ে সতর্ক মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের বাংলাদেশ সফর যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তুঙ্গ হাওয়া বইছে ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের মনে। দুটি কারণে আসন্ন সিরিজ ঘিরে তর না সওয়া অবস্থায় সবাই। প্রথমত, অবশ্যই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মোড়ল ভারতীয়দের সেই ‘বিতর্কিত-কা-’। দ্বিতীয়ত, মাত্রই কয়েক দিন আগে সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে ‘টগবগ’ করে ফুটছে টাইগাররা। আত্মবিশ্বাসে পারদ চড়লেও ভারতের ব্যাটিংকে যথেষ্ট সমীহ করছেন রঙিন পোশাকের বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি-বিন মর্তুজা। পাশাপাশি বিশ্বকাপের বিতর্ক নিয়ে বরাবরের মতোই খুব বেশি মন্তব্য করতে রাজি নন সর্বসাধারণের কাছে তুমুল জনপ্রিয় তুখোড় এই পেস তারকা। ‘দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত এবারও খেলেছে সেমিফাইনালে। ওদের ব্যাটিং লাইনআপ খুবই শক্তিশালী। যেখানে রয়েছেন বিরাট কোহলি-অজিঙ্কা রাহানের মতো ম্যাচ-উইনার পারফর্মার। আছেন রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ানরা। সবাই ভাল ফর্মে। গত প্রায় এক দশক ধরে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সুতরাং কাউকেই ছোট করে দেখার উপায় নেই। আসন্ন সিরিজে আমাদের ভারতীয়দের ব্যাটিংকে গুরুত্ব দিয়েই প্রস্তুতি নিতে হবে’Ñ বলেন মাশরাফি। ধোনির বোলিং-লাইনকেও ছোট করে দেখছেন না তিনি। ম্যাশ আরও যোগ করেন, ‘স্পিনের সঙ্গে পেস মিলিয়ে ওদের বোলিং লাইন যথেষ্ট সমৃদ্ধ। বিশেষ করে পেস আক্রমণের কথা আলাদা করে বলতে হয়। সামি হয়ত খেলছে না; তবে উমেষ যাদব, ভূবনেশ্বর, মোহিত শর্মাদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণও বিশ্বমানের।’ বিশ্বকাপে ভারতীয়দের অনেকে দল নিয়ে খুব বেশি আশা করেননি। এরপরও সেমিতে টেনে নেয়ার রূপকার পেসার সামি, মোহিত শর্মা ও উমেষ যাদব। মূলত সেদিকে ইঙ্গিত করেই এ কথা বলেন মাশরাফি। বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে যায়, যা নিয়ে ক্ষোভে ফুসে ওঠে গোটা বাংলাদেশ। আ হ ম মুস্তাফা কামাল পদত্যাগ করেন আইসিসি থেকে। আসন্ন সিরিজে ওই ঘটনা গ্যালারির মতো মাঠে কতটা প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নে যথারীতি মন্তব্যহীন ম্যাশ, ‘ম্যাচ শেষে সেদিনই বলেছি, কী ঘটেছে, তা সারাবিশ্ব দেখেছে। এ নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য ঘরের মাটিতে ভাল ক্রিকেট খেলা। সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা কেবল সিরিজে মনোযোগ দিতে চাই।’ সিরিজে ডিআরএস নিয়েও চিন্তিত নন তিনি। মাশরাফি ‘স্পোটিং পারর্সন’-এর বড় উদাহরণ। মাঠ ও মাঠের বাইরে এমন নিপাট ভদ্রলোক খুব কমই আছে। তাই সব বাদ দিয়ে খেলায় মনোযোগ দিতে চান তিনি। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্বকাপের অনাকাক্সিক্ষত ওই ঘটনা আসন্ন সিরিজে যথেষ্ট উত্তাপ ছড়াবে। ম্যাশ কথা বলেছেন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর দেশের মাটিতে এই ভারতের বিপক্ষেই ঐতিহাসিক প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর কত সফর, কত সাফল্য, দেখতে দেখতে কেটে গেছে ১৫টি বছর, কিন্তু এখনও ভারত তাদের মাটিতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি! মাশরাফির আশা দ্রুতই অপেক্ষার অবসান হবে। ভারতের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে সতীর্থদের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো দলের বাকি ক্রিকেটাররাও ভারতের মাটিতে খেলতে চায়। হয়ত অল্প দিনের মধ্যেই সেই সুযোগ আসবে।’ তবে এ নিয়ে খুব বেশি মাথাব্যথাও নেই তার। লক্ষ্য একটাই মাঠে ভাল ক্রিকেটের এই ধারাটা অব্যাহত রাখা। তবে সুযোগটা আপনা থেকেই আসবে। বহুল আলোচিত সিরিজ খেলতে ৭ জুন বাংলাদেশে পা রাখবে ভারত। ১০ জুন ফতুল্লায় একমাত্র টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ময়দানি লড়াই। ১৮, ২১ ও ২৪ জুন তিনটি ওয়ানডে ম্যাচই হবে ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বৃষ্টির মৌসুমের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ওয়ানডের জন্য একদিন করে রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। তবে মাশরাফির আশা আবহাওয়া ভাল থাকবে এবং ভালভাবেই প্রতিটি ম্যাচ শেষ হবে।
×