ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৩১ মে ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

সালোনা, বলোনা, তক্ষশীলা বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন ভূখ-গুলোর অন্তর্ভুক্ত নরসিংদী অঞ্চল। নরসিংদী শীতলক্ষ্যা নদীর উঁচু-নিচু, লাল-বেলে মাটির ওপর দিয়ে অতিক্রম করে ভাটির দিকে মেঘনা নদীর তীর পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। প-িত-গবেষকদের ধারণা, দশ লাখ বছর পূর্বে বাংলাদেশের প্রাচীনতম ভূখ- হিসেবে নরসিংদীর ভিত রচিত হয়েছিল। পাঁচ লাখ বছর আগে প্রথম বরফ যুগে সমুদ্র থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল এ অঞ্চলটি। বরফ যুগে সমুদ্রের পানি বরফ হয়ে আকাশে উঠে যায় এবং বিশাল সামুদ্রিক হ্রদগুলো শুকিয়ে যায়। বৈজ্ঞানিকদের অভিমত, এ বরফ যুগটির স্থায়িত্বকাল ছিল ৮০ হাজার বছর। তারপর শুরু হয় বরফগলা লাল পানির প্রবাহ। বরফ গলা যুগের লাল পানির প্রবাহে সৃষ্ট মাটির স্তরগুলোও লাল হয়ে যায়। দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এ প্রাচীন ভূখ-টি গভীর অরণ্য ও বনভূমিতে পরিণত হয়। দীর্ঘ সময়ের মধ্যে অসংখ্যবার এসব বনভূমির বিবর্তন ঘটেছে। ভূতাত্ত্বিক স্তর বিন্যাসের জটিলতার দরুন এ অঞ্চলে ভূমির বিপর্যয় ঘটে, যার ফলে বনভূমির বিভিন্ন অংশ মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। চাপা পড়া বনভূমি হাজার হাজার বছরের ব্যবধানে পরিণত হয় কয়লায়। বিভিন্ন স্থানে পুকুর কিংবা কূপ খননকালে আজও এ অঞ্চলে কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়। পৃথিবীর তিনটি বড় সভ্যতা : মেসোপটেমিয়া, মিসরীয় এবং উপমহাদেশের গর্ত বসতিদের সভ্যতার উন্মেষকাল খ্রিস্টপূর্ব ২৭শ’ এবং এর অবসান খ্রিস্টপূর্ব ১৭শ’ সালে। সভ্যতার বিকাশ ও যবনিকাপাত সম্পর্কে জানার একমাত্র হাতিয়ার প্রতœতত্ত্ব। প্রতœতত্ত্ব মানব নির্মিত, ব্যবহৃত এবং প্রভাবিত বস্তুগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে ওই সময়ের ইতিহাস, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি সম্পর্কে তথ্য উদ্ঘাটন করে। মেসোপটেমিয়ার লিপির নাম কিউনিফর্ম। কারও কারও মতে এ লিপির সমসাময়িক প্রায় তিন হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে গর্ত বসতিদের লিখিত লিপি আবিষ্কৃত হয়েছে, তবে পাঠোদ্ধার হয়নি এখনও। প্রতœতাত্ত্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে বলা যায়, মৌর্যদের আমলে এ দেশে লেখার প্রচলন হয়। গর্ত বসতিদের উয়ারী বটেশ্বর সভ্যতা আমাদের জাতীয়তাবোধকে দৃঢ় ভিত্তিতে দাঁড় করছে। জাতি হিসেবে আমরা গর্ব করে বলতে পারছি আমরা আড়াই হাজার বছরের সভ্যতাকে ধারণ করি। প্রতœতত্ত্ব প্রমাণ করে, সোনার দেশ বাংলাদেশের নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বরে যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল আড়াই হাজার বছর আগে তা ছিল খুবই উন্নত এবং প্রাযুক্তিক। আমরা দক্ষ জনশক্তি ছিলাম, সংগঠক ছিলাম, আমাদের রাষ্ট্র ছিল, যা নিরাপত্তা দিয়েছিল বণিকদের। আঠারো লাখ বছরের পুরনো প্লে-ইস্টোসিন যুগের মধুপুর গড়ে বন্যামুক্ত উঁচু ভূমিতে গড়ে ওঠা উয়ারী-বটেশ্বর দুটি গ্রাম। যুদ্ধবাজ, বম্বেট, শক্তিমান গ্রীক আলেকজান্ডার যে জাতির ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, সে জাতির বসবাস ছিল এ গ্রামেই। সেই জাতির নাম গঙ্গারিডি। নরসিংদীতেই ছিল তাদের বসবাস। মাত্র ১০ হাজার বছর আগে বর্তমান ইরান, ইরাক, মিসর, ফিলিস্তিনের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কৃষির উদ্ভব ঘটেছিল বলে ধরা হয়। ভারতবর্ষে কৃষির উদ্ভদ ঘটেছিল আরও পরে। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে প্লেটো এথেন্সে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকের দিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ধারণা, তার অনুসরণে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় খ্রিস্টীয় নবম শতকে, বাংলাদেশে উয়ারী বটেশ্বর তক্ষশীলা নামক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী মুখর ছিল। মেধা দক্ষতা প্রতিভা নিয়ে বিশ্বের বুকে দাঁড়িয়েছিল সেই বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮ বছর বয়স থেকে ছাত্রদের শেখানো হতো শিল্পকলা, তীর নিক্ষেপ, শিকার, আইন, চিকিৎসা ও সমরবিদ্যা। শিক্ষকদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা ছিল। প-িতদের কাছে পর্যায়ক্রমে এসব শিক্ষা চলত। বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশের পর থেকে শিক্ষা দেয়া শুরু হয়েছিল বৌদ্ধ দর্শন। উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রগুলো ছিল বেদ, ভাষা ব্যাকরণ, দর্শন, চিকিৎসাশাস্ত্র (আয়ুর্বেদ), ধনুবির্দ্যা, রাজনীতি, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যোতিষশাস্ত্র, হিসাববিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, সঙ্গীত, হস্তশিল্প ইত্যাদি। সুদূর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে নারী-পুরুষ দলবেঁধে এখানে আসত পড়ালেখা করতে। এর প্রায় ২০০ বছর পর একাদশ শতকে আধুনিক ধারার বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় ইতালিতে। এর নাম সালোনা ও বলোনা। এই অঞ্চলের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষা মানবদেহের কোষকলার জেনেটিক্স বংশপরম্পরায় বহন করে। চিকিৎসা কলাকৌশলের দুর্নিবার যাত্রা থেকে বিশ্ববাসী নরসিংদী জেলার উত্থান উপভোগ করে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উয়ারী বটেশ্বর বাঙালীর আড়াই হাজার বছরের মর্যাদা, সম্মান ও শিক্ষা ঐতিহ্য নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যাচ্ছে। মোঃ আবুল হাসান খন রঞ্জন রায় ঢাকা। চলাচলের অযোগ্য ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলার পল্লী বিদ্যুত অফিসের বিপরীত দিক থেকে ধামসোনা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রাস্তাটির পল্লী বিদ্যুত মার্কেটের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমানের বাড়ির সামনে বামে বাঁক নিয়ে পুনরায় পশ্চিম দিক হয়ে উত্তর দিকে ‘শামসুল হক মডেল হাই স্কুল’ এর পাশ দিয়ে গিয়ে তারপর মসজিদের সামনে দিয়ে উত্তর দিকে উকিলের টেকের ওপর দিয়ে উত্তর দিকে আরও প্রসারিত হয়ে এর একটি চলাচলের পথ মানিকদের জমির ওপর দিয়ে গিয়ে ধামসোনা ইউনিয়নের ৫১৪নং হোল্ডিংয়ে শেষ হয়েছে। অতঃপর প্রধান রাস্তাটি আরও উত্তর দিকে প্রসারিত হয়ে চলে গেছে। কয়েক বছর যাবত রাস্তাটি সংস্কারবিহীন থাকায় রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য। রাস্তাটির মাঝে মধ্যে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। স্কুল পর্যন্ত রাস্তাটির ইট ও ইটের খোয়া বিছানো ছিল। রাস্তাটির সঙ্গে আমাদের কবরস্থানটি যুক্ত থাকা সত্ত্বেও আমরা প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করতে পারি না। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি ও চলাচলের যথেষ্ট অসুবিধার সৃষ্টি করে। অনেকে পিচ্ছিল পথে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙ্গে, ভ্যান গাড়ি, রিক্সা যাত্রী ও মালামাল নিয়ে উল্টে যায়। রাস্তাটি ক-া, কাইচাবাড়ি, ভেন্ডাবর ও আশপাশের অন্য গ্রামের মানুষের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জীবন জীবিকার প্রয়োজনে ওইসব গ্রামের মানুষের প্রতিদিনই রাস্তাটির ওপর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা ওই স্কুলে ভর্তি হয়ে শিক্ষা লাভের সুবিধা নিচ্ছে, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে মাত্র আধাকিলোমিটার দূরত্ব ব্যবধানে থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা ওই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এল রহমান ভেন্ডাবর গ্রামবাসীদের পক্ষে।
×