ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বল্প খরচে কক্লিয়ায় ইমপ্লান্ট সার্জারি চিকিৎসা দেবে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৩১ মে ২০১৫

স্বল্প খরচে কক্লিয়ায় ইমপ্লান্ট সার্জারি চিকিৎসা দেবে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বল্প খরচে কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি চিকিৎসাসেবা দেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে ৭২ জন রোগী নির্বাচন করা হয়েছে। বাইরে এই চিকিৎসা গ্রহণ করলে একেক জনের পেছনে খরচ পড়বে প্রায় ১১ লাখ টাকা। আগামী ২০১৬ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। এর আগে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৫৪ জনকে এ সেবা দেয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪৮ জন ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকার চিকিৎসাসেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেয়েছেন। ৬ জনকে নামমাত্র মূল্যে শ্রবণযন্ত্রের ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১২ জন রোগী নিজ খরচে ডিভাইস ক্রয় করলে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে তাঁদেরও এ চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। শনিবার ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (২য় পর্যায়) উদ্যোগে আয়োজিত ২ দিনব্যাপী ৩য় কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারি কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল-ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আবু সফি আহমেদ আমিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (২য় পর্যায়ে) কর্মসূচী পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবুল হাসনাত জোয়ারদার। নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ নাসিমা আখতার অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্লিয়ার ইমপ্লান্টের ওপর বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও ইমপ্লান্ট সার্জন ডাঃ জহিরুল হক সাচ্চু। এছাড়া বিদেশ থেকে আগত চিকিৎসকবৃন্দ, কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট গ্রহীতা ও অভিভাবকরা বক্তব্য রাখেন। সচিব তারিক-উল-ইসলাম বলেন, শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ সকল প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসাসেবায় সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়েও তা অব্যাহত থাকবে। উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সব সময়ই অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অটিজম বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল এ্যাডভাইজরি কমিটি অন অটিজম এ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্জারের চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে অপরিসীম অবদান রেখে চলেছেন। শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসাসেবার জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় এখন পর্যন্ত খুব কমসংখ্যক শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট সার্জারির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। তাই এ সেবা আরও সম্প্রসারণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য। উল্লেখ্য, কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট হলো সার্জারির মাধ্যমে বধির ও কানে একবারেই কম শোনা রোগীর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শ্রবণযন্ত্র স্থাপন করে শোনার ব্যবস্থা করা। এটা একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। বিদেশে এ চিকিৎসা করাতে একজন রোগীর অর্ধ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়। ডেভেলপমেন্ট অব কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট প্রোগ্রাম ইন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (২য় পর্যায়) মোট ৭২ জনকে নামমাত্র মূল্যে এ চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে। প্রথম বছর ৩৬ জন রোগীকে এ চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে। রোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
×