ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি বিভিন্ন সংগঠনের

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ৩১ মে ২০১৫

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি বিভিন্ন সংগঠনের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জনস্বাস্থ্যের সব দিক বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি দূর করতে হবে বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আর ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন (নিরাময়মূলক) ও সামাজিক উপাদান (প্রতিরোধমূলক) উভয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। গত ১২ বছরে মোট জাতীয় বাজেট বরাদ্দের তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের হার বরাবরই অবহেলিত হয়ে আসছে। অথচ প্রতি অর্থবছরেই মোট বাজেটের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। যত দিন যাচ্ছে ‘বছরওয়ারি’ স্বাস্থ্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির হার প্রায় ৫০ ভাগ হারে কমে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বরাদ্দ খুব বেশি বাড়েনি। সার্বিক উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে এ খাতের জন্য ১১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়, যা মোট বাজেটের ৪.৪০ শতাংশ। অথচ ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৪.৮৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট বাজেটের ৪.২৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, স্বাস্থ্য খাতে গত মেয়াদের অর্জন ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ খাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতি ৬ হাজার জনের জন্য ১টি হিসেবে ১৩ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ইতোমধ্যে ১২ হাজার ৫৫৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে, নির্মাণাধীন রয়েছে ৯৪৩টি। এ ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে প্রসূতিদেরও চিকিৎসাসেবা প্রদান কর হচ্ছে। এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৪৩- এ নামিয়ে আনাই মূল উদ্দেশ্য। শিশুমৃত্যু হার কমানোর ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলেও এ হার আরও কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে গড় আয়ু ৭২ বছরে উন্নীত করা হবে, জন্মহার হ্রাসের লক্ষ্যে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার প্রচেষ্টা চালানো হবে। এবারে দায়িত্ব গ্রহণ করেই মাঠ পর্যায়ে ডাক্তারের উপস্থিতি নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি টেলিমেডিসিন সেবা আরও সম্প্রসারণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসা সেবার খরচ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাগালে আনতে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে সামাজিক স্বাস্থ্য বীমা চালুর উদ্যোগ নেয়া হবে। আনুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক স্বাস্থ্যবীমা চালুর প্রাথমিক উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। সরকারের সহায়ক নীতি-পরিবেশের কারণে ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে বেশ ক’টি সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট ও মেডিক্যাল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত শিক্ষা সম্প্রসারণের পাশাপাশি এর মানোন্নয়নের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে চিকিৎসা ও চিকিৎসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে। ইউনানি, আয়ুর্বেদ ও হোমিওপ্যাথিসহ দেশজ চিকিৎসার উন্নয়নে কাজ করা হবে। ভেষজ ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। ইতোমধ্যে জাতীয় ওষুধনীতি- ২০০৫ যুগোপযোগীকরণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কাজ চলছে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি আধুনিকায়নের। এদিকে, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করার আহ্বান জানান।
×