ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বপ্নের সফটওয়্যার গলার কাঁটা ॥ বড় লেনদেনে ভোগান্তি বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২ জুন ২০১৫

স্বপ্নের সফটওয়্যার গলার কাঁটা ॥ বড় লেনদেনে ভোগান্তি বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অনেক স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিয়ে নতুন প্রজন্মেও সফটওয়্যার চালু করলেও কোন সুফলই মিলছে না। উল্টো বহুকাক্সিক্ষত এই সফটওয়্যারটি বিনিয়োগকারী এবং স্ট্রেক হোল্ডারদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। লেনদেনের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সফটওয়্যারের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। সফটওয়্যারটি ধীর গতিতে কাজ করার কারণে সময়মতো শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেই ধীর হয়ে পড়ে সফটওয়্যারের গতি। মাঝে মধ্যে এটি হ্যাং হয়েও যায়। এতে লেনদেনসহ বাজার পর্যবেক্ষণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। ব্রোকারেজ হাউস কর্তৃপক্ষ ও বিনিয়োগকারীরা জানায়, ৫০০ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হওয়ার পর থেকে ডিএসইর সফটওয়্যার ধীরগতিসম্পন্ন হয়ে পড়ছে। লেনদেনের শেষ ৩০ মিনিট সমস্যা আরও বেড়ে যায়। মিডওয়ে সিকিউরিটিজ হাউজের এ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হাসান মাহমুদ বলেন, কিছুদিন যাবত দুপুর ২টার পর থেকে লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে। আর বিনিয়োগকারীরা নিটিংয়ের মাধ্যমে সমন্বয় করতে পারছে না। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস ঘুরে দেখা গেছে, ডিএসইর বর্তমান সফটওয়্যার নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সফটওয়্যারটি মাঝেমাঝে সেøা ও হ্যাং হয়ে যায়। কিছুদিন ধরে লেনদেন একটু বেশি হওয়ার পর থেকে এমন হচ্ছে। যত বেশি লেনদেন হয় তত বেশি সেøা হয়। সোমবারে লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় ডিএসইতে মোট ৫শ’ কোটি টাকার লেনদেন হয়। কিন্তু পরের আড়াই ঘণ্টায় সেই ধারা অব্যাহত থাকেনি। সফটওয়্যারজনিত কারণে লেনদেন সেøা হয়ে যায়। যার কারণে দিনশেষে কোনরকমে হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। কিন্তু সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে লেনদেন ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত। কিন্তু তা ঘটেনি। নাম প্রকাশ না করে ব্রোকারেজ হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, সেøা হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। দেখা যায়, একজন বিনিয়োগকারী ১২ টাকা করে ক্রয় অর্ডার দিয়েছে কিন্তু ওই সময় প্রকৃত দর আছে ১১.৮০ টাকা। সেøা হওয়ার কারণে প্রকৃত দর সম্পর্কে জানা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর এক কর্মকর্তা বলেন, এ সমস্যা কিছুদিন আগে ছিল, যা সমাধান করা হয়েছে। তবে নতুন করে এ ধরনের কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নাই। তবে আর এখন যদি হয় তা অবশ্যই সমাধান করা হবে। প্রসঙ্গত, সফটওয়্যারের কারিগরি ত্রুটির কারণে ২৪ মে ও ২৫ মে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতে বিলম্ব হয়। ২৪ মে নির্ধারিত সময়ের ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট পর বেলা ২টা ২০ মিনিটে লেনদেন শুরু করে ডিএসই। আর ২৫ মে পৌনে দুই ঘণ্টা পর বেলা বেলা সোয়া ১২টায় লেনদেন শুরু করে। অথচ লেনদেন কার্যক্রম নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর ডিএসই ‘নেক্সট জেনারেশন’ নামে বর্তমান ট্রেডিং সফটওয়্যারের উদ্বোধন করে। নতুন এ সফটওয়্যারে কারিগরি কোন ত্রুটি নেই বলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. স্বপন কুমার বালা দাবি করেছিলেন। কিন্তু ৬ মাস না যেতেই কারিগরি ত্রুটির কবলে পড়েছে ডিএসই। এ সফটওয়্যারে ব্যয় করা হয় ৩৫ কোটি টাকা। এটি সরবরাহ করেছে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নাসডাক।
×