ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ সফরে ভারতের কোচ রবি শাস্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৪ জুন ২০১৫

বাংলাদেশ সফরে ভারতের কোচ রবি শাস্ত্রী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিচক্ষণ ব্যক্তি কখনও করিয়া ভাবেন না, বরং ভেবে চিন্তে শুরু করেন। জাগমোহন ডালমিয়া জ্ঞানী মানুষ। শোনা যাচ্ছিল, সৌরভ গাঙ্গুলীর ‘প্রধান কোচ’ বা ‘ডিরেক্টর’ হওয়াটা সময়ের বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশ সফরে ভারত জাতীয় দলের অন্তর্বর্তী কোচ করা হয়েছে রবি শাস্ত্রীকে! দুই গ্রেট শচীন টেন্ডুলকর ও সৌরভ গাঙ্গুলীকে ভারতীয় বোর্ডের (বিসিসিআই) পরামর্শক করার ঠিক দু’দিন পর এই সিদ্ধান্ত নিলেন ডালমিয়া। বোর্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শাস্ত্রীর প্রশংসা করেছেন টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলি। কে হচ্ছেন ক্রিকেটের ক্ষমতাধর ভারতের নতুন কোচ? গত বেশ কিছুদিন এ নিয়ে সরগরম দেশটির গণমাধ্যম। নাম এসেছিল গ্রেট শচীন-সৌরভদের। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আপাতত শাস্ত্রীর ওপর আস্থা রাখল বিসিসিআই। সাবেক এই অলরাউন্ডার ও তুখোড় ধারাভাষ্যকারের ওপর অস্থায়ী দায়িত্ব তুলে দিল ডালমিয়া এ্যান্ড গং...। আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এক টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনিদের পরিচর্যার দায়িত্ব থাকছে ৫৩ বছর বয়সী শাস্ত্রীর কাঁধে। এর আগে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ান গ্রেগ চ্যাপেল পদত্যাগ করার পরও একবার অস্থায়ী কোচ হয়েছিলেন তিনি। গ্যারি কার্স্টেনের তত্ত্বাবধানে ২০১১ বিশ্বকাপ জয় করে ভারত। ওই দক্ষিণ আফ্রিকান নতুন করে চুক্তিবদ্ধ না হলে কোচ করা হয় ডানকান ফ্লেচারকে। কিন্তু ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে দুটি টেস্ট সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয় ক্রিকেটের মোড়লরা। এরপর গত বছর আগস্ট থেকে এবারের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ‘ডিরেক্টর’র দায়িত্বে ছিলেন শাস্ত্রী। বিশ্বকাপে ডানকানের মেয়াদ শেষ হলেও, তার মেয়াদ বাড়ায়নি বিসিসিআই। সেই থেকেই কোচশূন্য ভারতকে পথ দেখাচ্ছিলেন শাস্ত্রী। এবার স্বল্প সময়ের জন্য হলেও স্বীকৃত কোচ হিসেবে দায়িত্ব পেলেন। বিসিসিআইর সচিব অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, ‘অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কোচ হিসেবে শাস্ত্রীকে নির্বাচিত করেছেন ডালমিয়া। কেবল বাংলাদেশ সফরেই তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সফর শেষে ভবিষ্যতের জন্য স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ এক টেস্ট ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে খেলতে ৮ জুন বাংলাদেশে আসবে ভারত। সফরে দলটির ব্যাটিং ও বোলিং কোচ হিসেবে থাকবেন সঞ্জয় বাঙ্গার ও ভরত অরুণ। ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর। আর প্রশাসনিক ব্যাবস্থাপক হিসেবে বিশ্বরুপ দে’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ১৯৮১ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত ১১ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৮০ টেস্টে ৩ হাজার ৮৩০ রান করেন শাস্ত্রী, সেঞ্চুরি ১১। বাঁহাতি স্পিনে নিয়েছেন ১৫১ উইকেট। এ সময় ১৫০ ওয়ানডে খেলে ৩ হাজার ১০৮ রান করার পাশাপাশি শিকার ১২৯ উইকেট। ১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন শাস্ত্রী। তবে তার খেলোয়াড়ি জীবনের বড় কীর্তি ১৯৮৫Ñএ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বেনসন এ্যান্ড হেজেস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ। ‘মিনি বিশ্বকাপ’ নামে পরিচিত টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন শাস্ত্রী। ফাইনালে চিরশত্রু পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপার আনন্দে ভেসেছিল ভারত। শাস্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে টেস্ট অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘শাস্ত্রীর আমাদের সঙ্গে থাকাটা টিমের জন্য দুর্দান্ত মোটিভেটিং-ফ্যাক্টর!’ এখানেই শেষ নয়, ক্রেজি হিরো আরও যোগ করেন, ‘শাস্ত্রী হচ্ছেন সেই মানুষ, যিনি কখনই দায়িত্ব নিতে পিছপা হন না। দলে কোন আঘাত এলে যিনি নিজে সেটা বুক পেতে নেন। ক্রিকেটারদের ওপর আঁচড় পড়তে দেন না। আর যে কোন পরিস্থিতিতে সামনে তাকাতে পছন্দ করেন।’ শাস্ত্রীতে মুগ্ধ কোহলি বলেন, ‘তিনি কখনও দুই রকমের চিন্তা করেন না। একজন অসাধারণ মানুষ। এই মুহূর্তে আমাদের তারুণ্যনির্ভর দলটির আত্মবিশ্বাস যোগানোর জন্য তার চেয়ে যোগ্য আর কেউ হতে পারতেন না। উনি যখন কথা বলেন, সবাই তার কথা মন দিয়ে শোনেন, তাকে সম্মান করেন।’
×