ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় সেলিম আল দীনের ‘অমৃত উপাখ্যান’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৪ জুন ২০১৫

শিল্পকলায় সেলিম আল দীনের ‘অমৃত উপাখ্যান’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা থিয়েটারের প্রযোজনায় সেলিম আল দীনের নাটক ‘অমৃত উপখ্যান’ মঞ্চস্থ হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায়। দলটির ৪১তম প্রযোজনায় এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন যৌথভাবে ওয়াসিম আহমেদ ও সাজ্জাদ রাজীব। নাটকটিতে দেখা যায় টেলিভিশন প্রযোজক ও লেখক হাসান তার কৈশোরে লালনের মেলায় গিয়ে এক কালো মেয়ের প্রেমে পড়ে এবং মেয়েটির কাছে সে গল্প শোনে এক সুন্দরীকে একটি পাইথন গিলে ফেলেছিল। মিথ্যের ওই গল্পটিতে সুন্দরী মেয়ে কুট্টমিতা অভিনয় শিখতে আসে নটমুখ ও সুভদ্রার কাছে। তার গুরু নটমুখের প্রেমে পড়ে সে এবং এ প্রেম কামতাড়িত। সুভদ্রার মৃত্যুর পর সে তার কাম চরিতার্থ করার জন্য গুরু নটমুখের শিল্পসাধনা বিনষ্ট করে এবং কুট্টমিতা নিজেকে নিঃশেষ করার বাসনায় পাইথনের কাছে যায়, আর পাইথনটি তাকে গিলে ফেলে। হাসান টেলিভিশনের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দেখা এলিজার প্রেমে পড়ে। এলিজা পারিবারিক কলহে বেড়ে ওঠা একটি মেয়ে, যে তার জীবনের আশ্রয় খুঁজেছিল হাসানের কাছে এবং হাসান তাকে গ্রহণ করতে পারেনি। এলিজা প্রত্যাখ্যাত হয়ে আত্মহত্য করে। এই নাট্যে আধুনিক সময়ের মানবিক সঙ্কট ও মিথ্যের সঙ্কট এক হয়ে যায়। নারী জীবনের অপ্রাপ্তি ও অনিশ্চয়তা মিথ্যা ও আধুনিক বাস্তবতায় মিশে যায়। নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের লেখা একমাত্র উপন্যাস অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দেয়া হয়নি, তার অন্যান্য নাটকের মতো অমৃত উপাখ্যানকে সম্পাদনা করে মঞ্চ সৃজন করা হয়েছে। নাটকটির নির্দেশনায় ঢাকা থিয়েটার সৃজিত বর্ণনাত্মক নাট্যরীতি ও ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যরীতির প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়েছে। নাটকের প্রথাগত কালো উইংসের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে চিরায়ত বাংলার পটচিত্র। ঐতিহ্যবাহী শ্যাডো পাপেটের ফর্মটিও ব্যবহার করা হয়েছে। নাটকটির চতুর্থ এ মঞ্চায়নে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন শিমূল ইউসুফ, মোহাম্মদ শাহ্রিয়ার আখতার, আসাদুজ্জামান আমান, তাহমীদা মাহমুদ, সামিউন জাহান দোলা, সাজ্জাদুর সাজ, মিতালী রানী দেব, রজব আলী, তানজিল আহমেদ প্রমুখ। নাটকের আবহ সঙ্গীতে ছিলেন শিমূল ইউসুফ, মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় ওয়াসিম আহমেদ, পোশাক পরিকল্পনায় সাজ্জাদ রাজীব, পটচিত্র অঙ্কন জয়নাল আবেদীন আজাদ, শ্যাডো পাপেট নির্মাণ সালাউদ্দীন আধীর, বাদ্যযন্ত্রী দেবব্রত সরকার দেব, রজব আলী ও তানজিল আহমেদ। জাদুঘরে চলছে ফোজিত শেখ বাবুর ‘বাঁচাও নদী শীতলক্ষ্যা’ শীর্ষক একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ॥ নারায়ণগঞ্জের প্রাণ হিসেবে পরিচিত শীতলক্ষ্যা নদী হারিয়েছে তার গৌরব। কোন এক সময়ে এ নদীর পানি দুই পাড়ের মানুষ রান্নার কাজে ব্যবহার করতো। বিদেশ থেকে আসা পণ্যবাহী জাহাজগুলো যাওয়ার সময়ে এ নদীর পানি নিয়ে যেত। এসব ঘটনা ৩০Ñ৪০ বছর আগের কথা। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে এসব কথা হাস্যকর মনে হতে পারে। কারণ আজ সেই ঐতিহ্যবাহী শীতলক্ষ্যার পাড় দিয়ে হাঁটতে হলে নাকে রুমাল ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। কুচকুচে কালো পানির পচা পূঁতিময় দুর্গন্ধের কারণে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। শীতলক্ষ্যা এখন আর সেই খরস্রোতা নদী নেই। পরিণত হয়েছে বিষাক্ত বর্জ্যরে ভাগাড়ে। দুই পাড়ে জমে থাকে ময়লার স্তূপ। দেশের দ্বিতীয় দূষিত নদী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে শীতলক্ষ্যা। ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০১৫’ উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান লবিতে নদীতে পরিবেশ বিপর্যয়ের বিভিন্ন চিত্র নিয়ে চলছে আলোকচিত্রী ফোজিত শেখ বাবুর ‘বাঁচাও নদী শীতলক্ষ্যা’ শীর্ষক একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
×