ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৬ জুন ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

প্রতিবছর ধান কাটার মৌসুমে বিভিন্ন প্রিন্ট ও চলমান মিডিয়ার সংবাদ শিরোনামের মোড়কে একটি খবর চোখে পড়ে, যার সারমর্ম হলো- ধানের ন্যায্যদাম পাচ্ছেন না কৃষক। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। গত কয়েক দিনের বিভিন্ন সংবাদপত্র ঘেঁটে যা পেলাম তা হলো প্রতি মণ ধান উৎপাদন ও ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ পড়ে ৭শ’ টাকা। বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মণ দরে। তবে এলাকাভেদে এই দর কম-বেশি হলেও ধান বিক্রি করে আমাদের কৃষকদের মণপ্রতি কমপক্ষে ১০০-২০০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো- যে দেশে কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচে সে দেশে কৃষক কেন তার পণ্যে ন্যায্যমূল্য পাবেন না। যে কৃষকরা রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে, দিনরাত পরিশ্রম করে ফসলের বাম্পার ফলন নিশ্চিত করতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান, সেই কৃষকরা যখন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না তখন এর দায়ভার কি আমরা এড়াতে পারি? যখন পত্রিকা বা টেলিভিশনের সংবাদে দেখতে হয় ‘দাম না পেয়ে ধান পুড়িয়ে বিক্ষোভ চাষীদের’ কিংবা ‘এক মণ ধানের দাম এক কেজি খাসির গোশতের সমান : বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ’Ñ এমন আর কত শিরোনাম, তখন কি আমাদের একটুও অপরাধবোধ কাজ করে না? এ সবকিছুই অবাক করার মতো নয় কি? যাদের জন্য বছরের পর বছর নানা রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতায়ও আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থাকছে, তাদের প্রতি আমাদের এ কেমন অবিচার? কৃষকদের এই করুণ অবস্থার কি আদৌ অবসান হবে না? নাকি তারা যুগের পর যুগ কেবল বঞ্চিত হতে থাকবেন? আমাদের কৃষকরা প্রতিবছর কেন একই অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছেন? কেন তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? সমস্যা আসলে কোথায় এবং এর সমাধানইবা কী হতে পারে? ধানের দাম কমে আসা এবং ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে কৃষকের বঞ্চিত হওয়ার পেছনে একটি সিন্ডিকেট বেশ সক্রিয়ভাবে কাজ করে। তাছাড়া মজুদ ব্যবস্থার স্বল্পতার কারণেও ধানের যোগান বেড়ে ওঠে মৌসুমের সময়। ব্যবসায়ীরা সে সুযোগটাই নিয়ে থাকেন। কৃষকের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। যেসব কারণে কৃষক ধানের যৌক্তিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তা কারও অজানা নয়। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে কিছু সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। এক্ষেত্রে বেসরকারী খাতও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। সত্য কথা হচ্ছে, সরকারের বেঁধে দেয়া ন্যায্যদাম এই সিন্ডিকেট মানে না। এদের কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক কৃষক সরকারের কাছে ধান বা চাল কখনই বিক্রি করতে পারেন না। এদের দাপটের কারণে কিংবা যোগসাজশে সরকারী কর্মকর্তারাও কখনও সেসব অঞ্চল থেকে ধান সংগ্রহ করার জন্য যান না। যার ফলে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্যে এসব মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে অনেকটা পানির দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন কৃষক। এছাড়া আমাদের অধিকাংশ কৃষক বর্গা বা প্রান্তিক চাষী। বেশিরভাগ কৃষক ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন। ক্ষেতের ধান উঠলে তাদের সে ঋণ শোধ করতে তাগাদা দেন ঋণ প্রদানকারীরা। কৃষকের ধান ঘরে উঠতে না উঠতেই পাওনাদাররা টাকা পরিশোধ করার তাগিদ নিয়ে আসেন। দাদনদাতাদের চাপে অধিকাংশ সময় কৃষকরা সরকারের ন্যায্যমূল্যের আশায় বসে না থেকে অনেক কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়ে থাকেন। তবে সব থেকে হতাশার কথা হলো, পাইকারি বাজারে ধানের দাম কমে গেলেও খুচরা বাজারে চালের দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এর ফলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাম্পার ফলনের সুফল না কৃষক না ভোক্তাÑ কেউই পাচ্ছেন না। চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও নিঃসন্দেহে দায়ী করা যায় মধ্যস্বত্বভোগী সেই শক্তিশালী সিন্ডিকেটকেই, যা ওপেন সিক্রেট সবার কাছে। এ কথা তো দেশের আপামর সকলেই স্বীকার করবে যে, দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, শুনলে সবাই আমরা খুশি হই। কৃষকদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে চাইলে সরকারকে বাজারব্যবস্থার তদারকি ও উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে কৃষিপণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। উৎপাদন বেশি হলে নিজস্ব প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নিতে হবে। তাছাড়া কৃষকদের উৎসাহমূলক দাম নিশ্চিত করার দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকারের। বাজার ব্যবস্থাপনার সংস্কার কঠিন বিষয় হলেও সরকার চাইলে এখানে পরিবর্তন আনা সম্ভব। বেসরকারী খাত কিছু উদ্যোগ নিলেও সেখানে মুনাফার প্রশ্ন থাকায় তেমন সুফল মিলছে না। মৌসুমের সময় ফসলের দাম কমে যাওয়ার কারণ এখন আর কারও অজানা নয়। প্রয়োজন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। সেখানে পণ্যের উৎসাহমূলক দাম নিশ্চিত করতে হলে বাজারের সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক আরও নিবিড় করা যেতে পারে। বিকল্পভাবেও কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের যৌক্তিক দাম নিশ্চিত করা যায়। ধানের দাম তথা খাদ্য নিরাপত্তা এতই সেনসিটিভ একটা ইস্যু, যা আমাদের দেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে। ধানের দাম কম হলে কৃষকের অসন্তোষ, চালের দাম বেশি হলে ভোক্তাদের অসন্তোষ। কাজেই এত নাজুক একটি বিষয় সরকারের নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মোকাবেলা করা দরকার। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের কৃষকরা যাতে ধান উৎপাদন থেকে সরে না আসে সেদিকে সর্বাগ্রে খেয়াল রাখতে হবে সরকারকে। নতুবা খাদ্যে আমদানিনির্ভর দেশ হতে খুব বেশিদিন হয়ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে না। ভুলে গেলে চলবে না যে, কৃষক তথা কৃষিকে অবহেলা করলে আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন থমকে যেতে পারে। মোঃ বশিরুল ইসলাম শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সনধংযরৎ১৯৮৬@ুধযড়ড়.পড়স শুভেচ্ছা স্বাগতম স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন শুভেচ্ছার স্বাগতম। ভরা কলস সঙ্গে নিয়ে মোদি আসছেন বাংলাদেশে। মমতার কাঁখে পিতলের কলসে তিস্তার স্বচ্ছ পানির স্রোতধারার কলকল শব্দে আসছেন খিলখিল শব্দে হেসে হেসে। অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারপ্রধান এবং ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসছেন বাংলা ভাষার বাঙালীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে স্নেহ, ভালবাসা, মায়া-মমতা উজার করে বিলিয়ে দিতে। ছিটমহল, কড়িডর সীমান্ত চুক্তির হতে চলেছে বাস্তবায়ন। সম্মান দেখানো হয়েছে ইন্দিরা-মুজিব স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুমোদনের মাধ্যমে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও নীতির প্রতি ভারতবর্ষের জনগণ সম্মান প্রদর্শন করছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে। বিশ্ব ইতিহাসে দুই প্রধানমন্ত্রীর নাম লিপিবদ্ধ হয়েছে। মেছের আলী শ্রীনগর।
×