ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছাত্রলীগের ঢাবি সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১০ জুন ২০১৫

ছাত্রলীগের ঢাবি সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা

মুহাম্মদ ইব্রাহীম সুজন ॥ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। তবে সম্মেলনের দিনই নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হবে কিনা, এ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১০ সালের ১০-১১ জুলাই কেন্দ্রীয় সম্মেলনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রায় দেড় মাস আগেই এই শাখার সম্মেলন হওয়ায় সম্মেলনের দিন নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হবে কিনা, এ নিয়ে সংগঠনটির ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক কানাঘুষা চলছে। অনেকেই বলছেন, অতীতের রেওয়াজ অনুযায়ী আগামী ২৫-২৬ জুলাই কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সঙ্গে ঢাবি শাখার নেতৃত্বে নাম ঘোষণা করা হবে। সংগঠনটির একপক্ষ সম্মেলন হওয়ার পর পরই কমিটি ঘোষণার পক্ষে থাকলেও অন্যপক্ষ বিরোধিতা করছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নেতারাও ক্ষুব্ধ। তারা কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি ঘোষণার পক্ষে। সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ২১নং ধারায় জেলা শাখা ও অন্য শাখাসমূহের নির্বাচন নিয়ে দুটি অনুচ্ছেদে বর্ণনা থাকলেও নাম ঘোষণা নিয়ে কোন কথা বলা নেই। এই সুযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই তাদের ইচ্ছামতো নাম ঘোষণা করে যাচ্ছেন। কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নেত্রকোনা জেলাসহ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাগেরহাট জেলা সম্মেলনেও সম্মেলনের দিন নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়নি। তবে সর্বশেষ ঢাকা মহানগরের (উত্তর-দক্ষিণ) সম্মেলনের দু’দিন পরেই নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে সংগঠনের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ জনকণ্ঠকে বলেন, সম্মেলন সম্পর্কে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনের তারিখ আমি সংবাদ সম্মেলনের দিন জানতে পারি। এ বিষয়ে আমার মতামতের কোন গুরুত্ব নেই। আমি মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঘোষণা করা হলেই সংগঠনের জন্য ভাল হয়। এ বছর কী হবে তা আমি বলতে পারব না। যোগাযোগ করা হলে ঢাবি সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্যা ঠিক একই জবাব দেন। তিনি বলেন, আগে সম্মেলন ঠিকঠাক অনুষ্ঠিত হোক। পরে সবার মতামত নিয়েই নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঘোষণা করা হবে কিনা- এমন প্রশ্ন করলে তিনি আবারও অনিশ্চয়তার কথা জানান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনের সাবেক সভাপতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন ১৫১ জন। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল কমিটির নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। মঙ্গলবার জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়ার শেষ দিন থাকলেও তা আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সহসভাপতি জয়দেব নন্দী। তিনি বলেন, অনিবার্য কারণে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অতীতের রেওয়াজ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনের সময় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা যায়। কিন্তু এবারের সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের তেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। সম্মেলনের পোস্টার গত রবিবার ছাপানো হলেও তা খুব একটা চোখে পড়ছে না। এখন পর্যন্ত প্রার্থিতা দাবি করে কোন বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার চোখে পড়েনি। এমনকি পদপ্রত্যাশীদের পক্ষে কোন প্রচারও দেখা যাচ্ছে না। আমন্ত্রণ কার্ড ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে গতকাল। সংগঠনের বিভিন্ন সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, ঢাবি সম্মেলন শেষ করে নাম ঘোষণার বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হবে। আগামী ২৫-২৬ জুলাই কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সঙ্গে এই শাখাগুলোর সব নাম একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ জনকণ্ঠকে বলেছেন, নাম ঘোষণা করা হবে কিনা, এ নিয়ে আমরা এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। সম্মেলনের দিন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সম্মেলনের দিন নাম ঘোষণার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। না হলে কিছুদিন পরে হলেও নাম ঘোষাণা করা হবে। নতুন নেতৃত্ব কেমন হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ জনকণ্ঠকে বলেন, নির্বাচিত প্রার্থীদের অবশ্যই নিয়মিত ছাত্র হতে হবে। যারা নিয়মিত দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছেন এবং অতীত রেকর্ড ভাল তাদেরই নির্বাচিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে।
×