ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক প্রকাশের দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১০ জুন ২০১৫

ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক প্রকাশের দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়াকে সরকারের ব্যর্থতা বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। মোদির সফরকে কিভাবে মূল্যায়ন করে বিএনপি এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, এখনই বলা যাচ্ছে না মোদির সফর ব্যর্থ কী সফল হয়েছে। তবে ভারতের জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদির সফরকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। বিএনপি মনে করে এতে করে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে রিপন বলেন, তিস্তার চুক্তি হবে, হওয়ার কথা। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং গতবার চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক প্রায় তৈরি করে ফেলেছিলেন। এটার অগ্রগতিটা অনেক দূর হয়েছিল। ভারতের স্থানীয় রাজনৈতিক কৌশলের কারণে ওই সময়ে তিস্তা চুক্তি হয়নি। কিন্তু এবার তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণে আমরা আশাহত হয়েছি। এটা সরকারের ব্যর্থতা। রিপন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে দুই দেশের মধ্যে ২২টির মতো চুক্তি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানতে পেরেছি। তবে এ সব চুক্তিতে কী আছে বিএনপি এবং দেশের সাধারণ মানুষ জানে না। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সব চুক্তি হয়েছে তা স্বচ্ছতার জন্য জনগণের সামনে সরকারকে অবিলম্বে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি। আশা করছি, সরকার দ্রুত এ সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করবে। তখন আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানাব। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশীদের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয় কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, বিএনপি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। অভিযোগ ও নালিশের রাজনীতি করে না। তিনি বলেন, বিএনপি ৩ বার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। তাই নির্বাচনের বাইরে ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে কখনও প্রশয় দেয়নি। অথচ কী করে বিরোধীদলকে নির্মূল করা যায় সেই পথেই হাঁটছে সরকার। সরকার দমন পীড়নের নীতি অবলম্বন করেছে অভিযোগ করে পবিত্র রমজানের আগে কারাবন্দী বিএনপির সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন রিপন। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ট্রানজিটসহ দু’দেশের মধ্যে কানেক্টিভিটির বিষয়টি ইতিবাচক। ট্রানজিট হয়েছে। এখন গ্লোবাল ভিলেজে যোগাযোগ থাকতে হবে। একটা রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা থাকবে। আমার যা নেই আর আরেকজনের যা আছে তার বিনিময় হবে। সবই ঠিক আছে। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপি সহিংসতায় বিশ্বাস করে না। তাই বিএনপি নেতাকর্মীরা কোন সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু সরকার আজ্ঞাবহ প্রশাসন দিয়ে মামলায় জড়িয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে নিয়ে হয়রানি করছে। তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হয় ভোটের মাধ্যমে। তবে বর্তমান সরকার জানে ভোট হলে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না। তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে তছনছ করে দিয়েছে সরকার। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। তারা নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন চায়। অন্যভাবে ক্ষমতায় আসতে চায় না। বিএনপি অভিযোগ ও নালিশের রাজনীতিও করে না। তবে বাংলাদেশে ভোট ও নির্বাচনের নামে যে তামাশা হয় তা গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তাদের (ভারত) জানা উচিত বলে আমরা মনে করি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুববিয়ষক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন, দলের নেতা অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিন, সেলিম রেজা হাবিব, আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ।
×