ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানের চাহিদা নির্ধারণ, পিক আওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়ার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১১ জুন ২০১৫

রমজানের চাহিদা নির্ধারণ, পিক আওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়ার প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন রমজানে দেশে পিক আওয়ারে আট হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুত চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুত কেন্দ্র প্রস্তুত থাকলেও বিতরণ ত্রুটির কারণে বিদ্যুত বিভ্রাটের শিকার হতে পারেন গ্রাহক। তবে সেহরি, ইফতার এবং তারাবির নামাজের সময় রোজাদারদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, রমজানে বিদ্যুত চাহিদা অন্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি থাকে। রমজানে কোন মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেই দিক বিবেচনা করেই অতিরিক্ত বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। এবার গ্রীষ্মে যেখানে আট হাজার মেগাওয়াটের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেখানে রমজানে গিয়ে আরও ৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৮ জুন থেকে প্রথম রমজান শুরু হচ্ছে। এই সময়েও বেশ উষ্ণ আবহাওয়া থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা এখনের তুলনায় বেশি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম জানান, রমজানে কারও যাতে বিদ্যুতের কোন সঙ্কট না হয় এজন্য আট হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় পরিস্থিতি ভাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পিডিবি সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদনের পরিমাণ সাত হাজার ৮১৭ মেগাওয়াট। ওই দিন প্রাথমিক ব্যবহার এবং সঞ্চালন ক্ষতি বাদ দিয়ে সাবস্টেশন প্রান্তে গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করা হয় সাত হাজার ৩৭১ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে গিয়ে দেখা গেছে দেশের সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থা উপযোগী নয়। এতে করে রমজানে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হলেও সঙ্কট তৈরি করবে সরবরাহ ব্যবস্থাপনা। যাতে পর্যাপ্ত উৎপাদন করতে পারলেও গ্রাহকের কাছে বিদ্যুত দিতে দেয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে লোডম্যানেজমেন্টের আশ্রয় নেয়া হবে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে লোড ম্যানেজমেন্ট করলেও গ্রাহকের যাতে কষ্ট না হয় সে বিষয়টি মাথায় রাখা হবে। দীর্ঘক্ষণ যাতে গ্রাহক বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন না থাকে সে ব্যবস্থা করা হবে। রমজানে বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ রেশনিং করা হতে পারে। শহরের বিপণী বিতানগুলো রাত ৮টার পর দোকান বন্ধের ব্যবস্থা করা হবে, কোন বিপণী বিতানে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা দেয়া হবে। বিতরণ কোম্পানি ইতোমধ্যে রমজানের আগেই অধিক ত্রুটিপূর্ণ বিতরণ লাইন পরিবর্তন শুরু করেছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, গ্রাহক অন্যদের বিদ্যুত পাওয়ার সুযোগ করে দিতে এয়ারকন্ডিশন, পানির মোটর, আয়রন পিক আওয়ারে চালানো থেকে বিরত থাকবেন। এমন সচেতনতামূলক কর্মসূচী হাতে নেয়া হবে। পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, এলাকা ভিত্তিক উৎপাদন এবং সরবরাহের জন্য পৃথক পৃথক তদারকি দল গঠন করা হবে। তারাই দেখবেন কীভাবে এসব বিষয় সমন্বয় করা যায়। কোথাও কোন সমস্যা হলে এই কমিটি দ্রুততম সময়ে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবেন। এছাড়া কোথাও ট্রান্সফরমার বিকল হলে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার বসিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা প্রতিস্থাপন করা হবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, খুব শিঘ্রই রমজানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে একটি বৈঠক করা হবে। সেখানে সকল বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। যেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার নির্দেশনা দেবে বিদ্যুত বিভাগ।
×