ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতি মামলায় মায়ার খালাসের রায় আপীল বিভাগে বাতিল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৫ জুন ২০১৫

দুর্নীতি মামলায় মায়ার খালাসের রায় আপীল বিভাগে বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একটি দুর্নীতি মামলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে দেয়া হাইকোর্টের খালাসের রায় বাতিল করে নতুন করে আপীল শুনানির আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। অন্যদিকে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে কমিশনারদের জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের মৌলিক নীতি ও আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে হাইকোর্টের দেয়া খালাসের রায় বাতিল করে নতুন করে আপীল শুনানির আদেশ দিয়েছে আপীল বিভাগ। রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ দুদকের লিভ টু আপীল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেয়। জরুরী অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ১৩ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক নূরুল আলম সূত্রাপুর থানায় আওয়ামী লীগ নেতা মায়ার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে ২৯ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। পরের বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত দুই ধারায় মায়াকে মোট ১৩ বছরের কারাদ- দেয়। সেই সঙ্গে তাকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে খালাস দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপীল বিভাগে গেলে রবিবার পুনঃশুনানির এই আদেশ আসে। আপীল আদালতে মায়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী বাসেত মজুমদার। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশিদ আলম খান। আদেশের পর খুরশিদ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, হাইকোর্ট খালাসের যে রায় দিয়েছিল তা আপীল বিভাগ বাতিল করেছে। আপীল বিভাগ হাইকোর্টে পুনঃশুনানি করতে বলেছেন। তিনি বলেন, যেহেতু হাইকোর্টে তার এভিডেন্সগুলো প্রপারলি একজামিন হয়নি, সে কারণে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ হাইকোর্টে পুনরায় শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। এর আগেও অনেক মামলার ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। বাসেত মজুমদার বলেন, আপীল বিভাগ লিভ টু আপীল মঞ্জুর করেছেন। ধারা কেন বাতিল হবে না ॥ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে কমিশনারদের জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের মৌলিক নীতি ও আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা বাতিল করা হবে নাÑ তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। একটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামালের বেঞ্চ রবিবার এ রুল জারি করেন। ২০০৪ সালের দুদক আইনের ১২(২) ধারা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী মোঃ কামাল হোসেন এ রিট আবেদন করেন। তিনিই আদালতে এ বিষয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। আদেশের পর কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতির সচিব, আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, সব কমিশনার ও দুদক সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ১২(২) ধারায় বলা হয়েছে, চেয়ারম্যানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য কমিশনারগণ তাহাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন এবং সেইরূপ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের নিকট কমিশনারগণের জবাবদিহিতা থাকবে। কামাল হোসেন বলেন, আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা। এর ১৫ ধারা অনুযায়ী এর সব সিদ্ধান্ত হবে কমিশন সভায়। ৫ ধারায় বলা হয়েছে, কমিশনের সদস্য সংখ্যা হবে তিনজন, তাদের মধ্যে একজনকে রাষ্ট্রপতি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেবেন। কিন্তু কমিশনারদের যদি চেয়রাম্যানের কাছে দায়বদ্ধ রাখা হয়, তাহলে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে। ফখরুলের জামিন আবেদন ॥ নাশকতার অভিযোগ এনে পল্টন থানায় পুলিশের দায়ের করা তিন মামলায় জামিন আবেদন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার সুপ্রীমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন ও এ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন দাখিল করেন। আজ সোমবার বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক ও বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
×