ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১৫ রমজান রাত ১০টা পর্যন্ত পরে ইচ্ছামাফিক দোকান খোলা রাখা যাবে

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৭ জুন ২০১৫

১৫ রমজান রাত ১০টা পর্যন্ত পরে ইচ্ছামাফিক দোকান খোলা রাখা যাবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথম থেকে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত ১০টা এবং ১৫ রমজানের পর থেকে ইচ্ছামাফিক দোকান খোলা রাখতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। দোকান মালিক সমিতির দাবির প্রেক্ষিতে সরকার মঙ্গলবার এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। তবে কোনভাবেই যাতে শ্রম আইন লঙ্ঘন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। আসন্ন রমজানে বিদ্যুত বিতরণ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ওই বৈঠকটির আয়োজন করে বিদ্যুত বিভাগ। এতে দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, বছরের শুরুর দিকে বিএনপি-জামায়াতের টানা হরতাল অবরোধে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন সেই ক্ষতি তারা পুষিয়ে নিতে চান। এজন্য রাত আটটায় দোকান বন্ধের নির্দেশনা রমজানে শিথিল করতে অনুরোধ করা হয়। অন্য বছরগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতো রাত আটটাতে দোকান বন্ধ করতে হতো। তবে ১৫ রমজানের পর এই বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হতো। বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, বছরের শুরুর ৩ মাসে বিএনপি-জামায়াত মিলে দেশে যে সন্ত্রাস চালিয়েছে তাতে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা রমজানের সারামাসে বিপণি বিতানগুলো রাত আটটার পরেও খোলা রাখতে চান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা এই অনাপত্তি দিচ্ছি। রাত দশটা পর্যন্ত তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারবেন। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তবে প্রতিবছর আমরা দেখি রাজধানীসহ সারাদেশে বিপণি বিতানে রমজান মাসজুড়ে বিদ্যুতের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। গুলশান-বনানীর শপিংমলগুলো অহেতুক বিয়ে বাড়ির মতো সাজানো হয়। সারারাত ধরে এসব মার্কেটে অনাবশ্যক আলোকসজ্জা করা হয়। এতে বিদ্যুতের অপচয় হয়। এই অপচয় বন্ধে দোকান মালিকদের ব্যবস্থা নিতে হবে। বৈঠকে বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুত উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, দিনে যেখানে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ছয় হাজার মেগাওয়াট সেখানে রাতে এ চাহিদা পৌঁছায় আট হাজারে। বিদ্যুতের যথেচ্ছ ব্যবহারেও এই অতিরিক্ত চাহিদার কারণ। অপচয় বন্ধে তিনি দোকান মালিকদের এলইডি বাল্ব ব্যবহার, পিক আওয়ারে রি-রোলিং মিল, গার্মেন্টস বন্ধ, বিভিন্ন ব্যাংক এবং সিএনজি স্টেশনগুলোতে অতিরিক্ত আলোকসজ্জা পরিহারের পরামর্শ দেন। দিনের বেলা ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিদ্যুত ব্যবহার বন্ধে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা। এসময় অন্যদের মধ্যে বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব-উল আলম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, পিডিবির চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দোকান মালিক সমিতির পক্ষে এর সভাপতি এস এ কাদের কিরণ, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম খন্দকারসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ রমজান মাসে রাত দশটা পর্যন্ত তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দাবি জানান। এ সময়ে বিদ্যুত অপচয় বন্ধে তারা বিভিন্ন ব্যবস্থা নেবে বলেও অঙ্গীকার করেন। এদিকে বর্তমানে দেশের বিদ্যুত পরিস্থিতি অনেক ভালো বলে বিদ্যুত বিভাগ দাবি করলেও সংশ্লিষ্টদের অনেকে জানান, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই এ কথা সত্য। তবে বিতরণ ব্যবস্থায় ভয়াবহ সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে খোদ রাজধানীরই অনেক এলাকায় দৈনিক এক থেকে দুই ঘণ্টা বিদ্যুত থাকছে না। গ্রামে অবস্থা আরো খারাপ। বিতরণ কোম্পানির বিদ্যুতের বিতরণ লাইনে সমস্যা আছে। অনেক সাবস্টেশন ৪০ বছরের পুরনো। এসব যন্ত্রপাতি অনেক পুরনো আমলের।
×