ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিটি এক্সপো

প্রযুক্তির প্রসার, নতুন উদ্ভাবন- অহর্নিশ ব্যস্ত তরুণেরা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৮ জুন ২০১৫

প্রযুক্তির প্রসার, নতুন উদ্ভাবন- অহর্নিশ ব্যস্ত তরুণেরা

এমদাদুল হক তুহিন বলার অপেক্ষা রাখে না, এখন প্রযুক্তির বিশ্ব। জ্ঞানবিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। আর তাই গোটা দুনিয়া এ জায়গাটিতে বিশেষ কাজ করছে। এবং ভাবতে সত্যি খুব ভাললাগে যে, বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এ দেশে প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে। ঘটে চলেছে। নতুন নতুন উদ্ভাবনে অহর্নিশ কাজ করছেন তরুণরা। সেই তাদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো আইসিটি এক্সপো ২০১৫। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হয়। তিন দিনব্যাপী আয়োজনের প্রতিদিনই ছিল সরগরম উপস্থিতি। এখানে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি চলে কেনাকাটা। এক্সপোতে ছিল শতাধিক স্টল। বিশেষ প্যাভিলিয়ন ছিল ৩৫টি। দেশী-বিদেশী দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি স্কুলের শিক্ষার্র্থীরা উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নিয়ে অংশ নিয়েছিল ইনোভেশন জোনে। সম্মেলন কেন্দ্রের দোতলায় সেলিব্রিটি হলে তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পের প্রদর্শনী হয়। সেখানে গিয়ে চোখ ছানাবড়া! সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে ড্রোন উড়ছে। রোবট তো মানুষের মতোই ব্যস্ত! কখনও ফুটবল পায়ে দৌড়াচ্ছে। খেলছে। কখনও বা সে উদ্ধারকারীর ভূমিকায়। হিমালয়কন্যা নেপালকে যে ভূমিকম্প তছনছ করে দিয়ে গেল, একই ভূমিকম্প বাংলাদেশে হবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে? তাই ভূমিকম্পের আগাম বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছেন কয়েক তরুণ। সফলও হয়েছেন। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হাসান শোয়েব সফলদের একজন। তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন ভূমিকম্প মনিটরিং প্রযুক্তির কার্যকারিতা। বলছিলেন, ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পেতে সহায়তা করবে এ প্রযুক্তি। নাসা প্রথমে তাদের বার্তা স্যাটেলাইটে পাঠায়। তবে এ প্রযুক্তি কাজ করবে গ্রাউন্ডে। এর মাধ্যমে সহজেই ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পাওয়া সম্ভব হবে। গেমিং কম্পিটিশন জোনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তরুণ-তরুণীরা এখানে বিভিন্ন খেলায় মেতেছিল। বেশ কয়েকটি সারি। সবারই চোখ কম্পিউটার স্ক্রিনে। হাতে মাউস। এসবের বাইরে সিসি ক্যামেরা, পাওয়ার কুলিং, সার্ভার, ডাটা সেন্টার, নেটওয়ার্ক, ভার্চুয়ালাইজেশন এবং নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর প্রযুক্তির দিকে বিশেষ দৃষ্টি ছিল দর্শনার্থীদের। এক্সপোকে আরও আকর্ষণীয় করতে আয়োজকরা সেলফি কনটেস্টের আয়োজন করেন। মেলায় ছিল ইভেন্ট কর্নার, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি, মেগা সেলস, ডিজিটাল মার্কেটিং, বিজনেস মিটআপসহ অসংখ্য আয়োজন। দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার এক্সপোতে আসা বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফারমার জন জনকণ্ঠকে বলেন, আমি কোর আই-সেভেন ল্যাপটপ খুঁজছি। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে হতে হবে। পেয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক বড় আয়োজন। খুঁজে দেখা শেষ করিনি এখনও। অবশ্য নতুন অনেক প্রযুক্তি বাংলাদেশের বাজারে আসে না বলে অভিযোগ করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ। তার মতে, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে হলে নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হবে। তবে আমাদের দেশে সে সুযোগ এখনও সীমিত। প্রদর্শনী ছাড়াও আয়োজন করা হয় ১০টি সেমিনার। এসবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রযুক্তিবিদরা অংশ নেন। সব মিলিয়ে চমৎকার একটি আয়োজন। তিন দিনের আয়োজন বুধবার শেষ হয়েছে। এমন উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে আরও এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
×