ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো হুমকিতে শিশু ও রোগীরা সেবা পাচ্ছে না

সিরিয়ায় জ্বালানি পরিবহনে আইএসের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২০ জুন ২০১৫

সিরিয়ায় জ্বালানি পরিবহনে আইএসের নিষেধাজ্ঞা

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গীরা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোতে জ্বালানি পরিবহনে বাধা দিচ্ছে। এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, মেডিক্যাল সেন্টারগুলো তাই অচল হয়ে পড়ছে এবং রুটির কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারবিরোধী মানবাধিকার কর্মী ও ত্রাণ কর্মীরা এ কথা বলেছেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অলাইনের। আন্তর্জাতিক ত্রাণ গ্রুপগুলো বলেছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সৈন্যরা বিরোধী এলাকাগুলোতে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করায় দুর্দশা আরও বেড়ে গেছে। এখানে নিহত হয়েছেন কয়েকজন ত্রাণকর্মী এবং কর্মীরা ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। সিরিয়ায় চার বছরের বেশি সময় ধরে দেশটির অর্থনীতি কীভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জ্বালানি সঙ্কটে তা স্পষ্ট বোঝা যায়। আইএস সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তেল-সমৃদ্ধ এলাকাগুলো দখল করে নেয়ার পর থেকে একটি ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অর্থায়নের জন্য দেশের এ অপ্রতুল সম্পদ ব্যবহার করে এসেছে। সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহী-অধিকৃত এলাকাগুলোর মতো দেশের অন্যান্য স্থানের ব্যবসায়ীরা আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় স্থানীয়ভাবে শোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয় করে এসেছেন এতদিন ধরে এবং ট্রাকে করে এ পণ্য নিয়ে গেছেন নিজেদের এলাকায়। এভাবে সচল রেখেছেন তারা তাদের গাড়ি ও জেনারেটরগুলো, রুটির কারখানা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কারখানাগুলোতে। কিন্তু জিহাদীরা এ মাসে জ্বালানি বোঝাই ট্রাকগুলোকে তাদের এলাকা ত্যাগে বাধা দেয়া শুরু করেছে। মানবাধিকার কর্মী, ত্রাণকর্মী ও ট্রাক মালিকরা এ কথা জানিয়েছেন। কানাডীয় আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল ত্রাণ সংস্থার ড. খালেদ আলমিলাজি বলেছেন, আইএস অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে জ্বালানিকে। সংস্থাটি সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চিকিৎসা ত্রাণ প্রদানে সমর্থন রয়েছে। ড. আল মিলাজি বলেন, আইএস আলেপ্পো প্রদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার পরপরই এ জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তিনি বলেন, ক্লিনিকগুলোতে বিদ্যুতের অভাবে আহতদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। রোগীর ডায়ালিসিস ও অন্যান্য চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না। ইদলিব ও হামা প্রদেশে মেডিক্যাল কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, জ্বালানি না পেলে ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করে দেবেন তারা। ড. আল মিলাজি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এ্যাম্বুলেন্স ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের ট্রাকগুলো। যানগুলো আলেপ্পো ও ইদলিবে চলাচল করতে পারছে না। তাই, এখানে কোন ব্যারেলবোমা ফেলা হলে বাসিন্দাদের উদ্ধারে এ যানগুলো চলাচল করতে সক্ষম হবে না। বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে সিরীয় সরকারের হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ত্রাণ গ্রুপগুলো বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, দক্ষিণাঞ্চলে দারা প্রদেশে এক হাসপাতাল এ সপ্তাহে ৪টি ব্যারেলবোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এ প্রদেশে ডায়ালিসস ও নবজাত শিশু চিকিৎসার জন্য এটা ছিল একমাত্র হাসপাতাল। মানবাধিকার সংস্থার চিকিৎসকরা বলেছেন, ২০১১-এর মার্চে এ সংঘাত শুরু হওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে মেতে যে আক্রমণ চালানো হয় তা ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। ঐ সময় ১৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে এবং নিহত হয়েছেন ১০ চিকিৎসা কর্মী। গ্রুপ বলেছে, এ হামলাগুলোর জন্য দায়ী সিরীয় সরকার।
×