ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাড়তি অর্থ গুনতে হবে মধ্যবিত্তকে ॥ বেসরকারী শিক্ষায় মূসক

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২১ জুন ২০১৫

বাড়তি অর্থ গুনতে হবে মধ্যবিত্তকে ॥ বেসরকারী শিক্ষায় মূসক

প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর দশ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব প্রতিবাদমুখর অভিভাবকরা বিভাষ বাড়ৈ ॥ প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ বাড়ছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে। শিক্ষা ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কর প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে কয়েকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছেন তারা। প্রতিবাদমুখর হচ্ছেন অভিভাবকরাও। এ কর আরোপকে অগণতান্ত্রিক ও উচ্চ শিক্ষার অগ্রগতি বিরোধী অভিহিত করে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। দাবি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সমিতির নেতৃবৃন্দ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করের কারণে সঙ্কটে পড়বে শিক্ষার্থীরা। এতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়বে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্যেক্তা থেকে শুরু করে এ সেক্টরের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল উচ্চবিত্তের সন্তানরাই পড়ছে না, উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য মফস্বল থেকে আসা এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকের সন্তানরাও ভর্তি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি পরিশোধের জন্য অভিভাবকরা জমিজমা বন্ধক এমনকি বিক্রি পর্যন্ত করছে। এ অবস্থায় ১০% কর আরোপ করা হলে শিক্ষা ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যাবে, যা শিার্থীদেরই পরিশোধ করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রকে আরও সঙ্কুুচিত করবে। এবার প্রস্তাবিত বাজেটে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও প্রকৌশল কলেজের ওপর সঙ্কুচিত মূল্যভিত্তিতে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করে বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বিপরীতে বর্তমানে সঙ্কুচিত মূল্যভিত্তিতে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ কর প্রযোজ্য থাকলেও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর বর্তমানে কর আরোপিত নেই। আমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পাশাপাশি এই খাতগুলোকেও করের আওতায় আনার প্রস্তাব করছি। তবে করভার সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এ ক্ষেত্রে সঙ্কুচিত মূল্যভিত্তিতে ১০ শতাংশ মূসক নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। বাজেট প্রস্তাবের দিনই অবশ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এ কর আরোপের নেতিবাচক ফল সম্পর্কে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানান। তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর কর বসালে তা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই কোন না কোনভাবে আদায় করা হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের পেছনে অভিভাবকদের ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। এরপর গত এক সপ্তাহে বাজেটের এ দিকটি নিয়ে অসন্তোষ ক্রমশই বাড়ছে করের আওতায় আসা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এর উদ্যোক্তাদের মাঝে। প্রথমেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন এক বিবৃতিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, কর আরোপ করা হলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সঙ্কুচিত হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বাড়বে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে এবং তার অতিরিক্ত অর্থ মূলত শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। যা শিক্ষার্থীর পরিবারের ওপর যেমন বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে তেমনি উচ্চশিক্ষার অগ্রগতিতে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করবে। জানা গেছে, গেল সপ্তাহেই ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের বিষয়ে নিজেদের করণীয় নির্ধারণে এক সঙ্গে বৈঠক করেছেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তারা। এরপর সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসের, সাধারণ সম্পাদক বেনজির আহম্মেদ, ভাইস- চেয়ারস্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতারা সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাত করে অবিলম্বে বাজেটে আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান সরকার উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে যুগান্তকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উদ্যোক্তারাও যথেষ্ট অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন এবং তা অব্যাহত রাখা খুবই জরুরী। তারা বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে রীতিমতো জুয়েলারি ব্যবসায়ী, রং মিস্ত্রিসহ ব্যবসায়ীদের তালিকায় ফেলে দেয়া হয়েছে। এখান থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাতে হবে। তারা আরও বলেছেন, কর আরোপ করা হলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে এবং তার অতিরিক্ত অর্থ মূলত শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীর পরিবারের ওপর যেমনি বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে তেমনি উচ্চশিক্ষার অগ্রগতিতে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করবে। তাছাড়া অভিভাবকরা উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে পোষ্যদের ভর্তি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন। কেবল উদ্যোক্তারাই নয় শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, শিক্ষায় এভাবে কর আরোপ করা যায় না। এটা ঠিক নয়। খোদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা সীমিত। তাই অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। এখানে কেবল ধনীদের সন্তান নয়। বহু গরিবের ছেয়েমেয়েরা পড়ছে। সরকারের উচিত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। কিন্তু তা না করে কর আরোপ করছে। এটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, জার্মানিতে উচ্চশিক্ষায় কোন টিউশন ফি নেই। যুক্তরাজ্য বছরে ৩৭ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বেসরকারী শিক্ষায়। আর যুক্তরাষ্ট্র বছরে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার শিক্ষা ঋণ দিচ্ছে। আমাদের এখানে তো তা হচ্ছে না। উল্টো শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ কমছে। বিশিষ্ট এ শিক্ষাবিদ বলছিলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ছে তাদের এক প্রকার ফ্রি পড়াচ্ছে সরকার। সেখানে বাজেট দিচ্ছে সরকার। আর কিছুটা কম মেধাবী বা ভর্তি পরীক্ষায় হয়ত একটা খারাপ করার কারণে বেসরকারীতে যারা পড়ছে তাদের ওপর কর বসালে সেটা ভাল দেখায় না। এক দেশে দুইভাবে শিক্ষা হয় না। শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা বলছেন, কর আরোপের ফলে যে সঙ্কট আসছে তা আঁচ করতে পেরেই বাজেট প্রস্তাবের পর থেকে অস্থিরতা বাড়ছে বেশ কিছুৃ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মাঝে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের আগে থেকেই কর আরোপের বিষয়টি থাকায় সেখানে তেমন কোন সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রথমবারের মতো এবং কিছুটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে। এর আগেও একবার এই স্তরের কর আরোপ করার ফলে ব্যাপক আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে কর প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। এবার ১০ শতাংশ কর আরোপের প্রতিবাদে ইতোমধ্যেই রাস্তায় নেমেছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত তিন দিনে অন্তত আটটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বন্ধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর ধানম-ি এলাকার শিক্ষার্থীরা রাজপথে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। যেখান থেকে শীঘ্রই সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এমনিতেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যায়ের পড়ালেখার খরচ লাগামহীন। সরকারও কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেখানে কর আরোপ করা হলে তার পুরো চাপ গিয়ে পড়বে কেবল শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের ওপর। সকল প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। শিক্ষার্থীরা ইংলিশ মিডিয়ামের উদাহরণ টেনে বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তাদের শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক রায়হান তাহারাত লিয়ন জানান, ধানম-ির সব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসেছে। সরকারের নতুন অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শতাংশ মূসক বৃদ্ধি শিক্ষাকে ‘হত্যার শামিল’। আমরা ইতোমধ্যে জানিয়েছি, সরকার এই নীতি থেকে সরে না এলে আরও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। রাজপথে অবস্থান নেব আমরা। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী প্রতিতি রায় বলছিলেন, ১০ শতাংশ মূসক নির্ধারণ অন্যায়। এটা করলে তার পুরো চাপ পড়বে আমাদের ওপর। এর জন্য হয়ত আমাদের পড়াশোনাই ছেড়ে দিতে হবে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের এক শিক্ষার্থী তার প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে বলছিলেন, আমাদের এখানে ১০ মাসের কোর্স শেষ করতে ১৫ লাখ টাকা দিতে হচ্ছে। এই অবস্থায় যদি আবার ১০ শতাংশ কর আরোপ হয় তাতে কর্তৃপক্ষ খরচ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইমরুল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছিলেন, ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হলে স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার খরচ বাড়বে। আর করের বোঝা শিার্থীদের ওপরই পড়বে। ফলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচও বাড়বে। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে ক্ষতির মুখে পড়বে হাজার হাজার পরিবার। ১০ শতাংশ মূসক নির্ধারণের প্রস্তাব দুই ধরনের চাপ তৈরি করবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নুরুল আমীন। ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী নুরুল আমীন বলছিলেন, আমি ভাই সরকার সমর্থক ছাত্রলীগের একজন কর্মী হলেও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কর বৃদ্ধি করা হলে কর্তৃপক্ষ বেতন-ফি বাড়াবেই। শিার্থীদেরই এই চাপ নিতে হবে। অযথা অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচের চিন্তায় এমনিতেই অভিভাবকদের ঘুম আসে না। এ অবস্থায় করের বাড়তি টাকার চিন্তায় শিক্ষার্থীদেরও ঘুম হারাম হয়ে যাবে। ১০ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারিত হলে বিষয়টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ মানবে না। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো অশান্ত হয়ে উঠবে। ছড়িয়ে পড়বে আন্দোলন। তাই সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। এদিকে ইতোমধ্যেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদের বাজেট আলোচনায়ও। বগুড়া ৩ আসনের বিরোধীদলীয় সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার সম্প্রতি বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বাজেটে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ১০ ভাগ কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে সেটা কোন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে না। এটা দিতে হবে আমার-আপনার ছেলেমেয়েদের যারা ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ছে। এর মানে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ওপরই এই করের বোঝা গিয়ে পড়বে। তাই আমি অর্থমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর প্রস্তাবিত এই ১০ ভাগ কর প্রত্যাহার করা হোক। ইতোমধেই করের বিরোধিতা করে বাম ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা আন্দোলন শুরু করেছে। তারা বলেছেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট আরোপের ফলে উচ্চ শিক্ষায় মধ্যবিত্তের শিক্ষা লাভের পথ রুদ্ধ হয়ে এ শিক্ষা ধনিক শ্রেণীর হাতে চলে যাবে। উপলব্ধি করতে হবে, শিক্ষা কোন পণ্য নয়, অধিকার। শিক্ষার্থীদের ভাবার সময় এসেছে যে, তারা কি উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য এসেছে, নাকি ভ্যাট দিয়ে উচ্চশিক্ষা নামক পণ্য কিনতে এসেছে। কিছু কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্যাট প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর শুরু করেছে অভিযোগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে, পাস হয়নি। এর আগেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভ্যাটসহ ফি পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এমন নোটিস দিয়েছে।
×