ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিংড়ায় তিন দিনে ২৫ বাড়ি ভাংচুর

সাইফুল বাহিনী আতঙ্কে ছয় গ্রামের মানুষ ঘরছাড়া

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২১ জুন ২০১৫

সাইফুল বাহিনী আতঙ্কে ছয় গ্রামের মানুষ ঘরছাড়া

সংবাদদাতা, নাটোর, ২০ জুন ॥ চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের ৬টি গ্রামে সাইফুল-রেজা বাহিনী আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে বেড়াবাড়ী আয়েশ, ডাহিয়া ও পারিলের ৩০হাজার মানুষ। সাইফুল-রেজা বাহিনীর ত্রাসের ভয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ছাদে জড়োসড়ো হয়ে রাত যাপন করছেন এলাকবাসীরা। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নাটোরের একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির মদদে এলাকায় তারা এসব অপকর্ম করছে। সম্প্রতি অস্ত্র মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়ে এলাকায় ফিরে পুনরায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। গত তিন দিনে ওই এলাকায় প্রায় ২০-২৫ বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে সাইফুল-রেজা বাহিনী। তাদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে বাস করছে মজনু সর্দার, মধু, জয়নাল, জুয়েল, আঃ রউফ, মুনছুর, মিলন খন্দকার, অলক তালুকদার, আলাল, ম-ল, রানা আহমেদসহ ৫০টি পরিবার। সাইফুল ও তার ভাই রেজার বাহিনীর দাপটে ডাহিয়া গ্রামের শতাধিক মৎস্যজীবী পরিবার তাদের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। চলনবিলের পুকুর দখল, লুটতরাজ, হুমকিধমকি, সুতি দখল, জেলেদের জিম্মি করে ঘের দখলসহ বিভিন্ন প্রকার অন্যায় ও অত্যাচারের খলনায়কে পরিণত হয়েছে এ বাহিনী। তাদের অন্যায় অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষার জন্য সম্প্রতি ডাহিয়া বাজারে পরপর দুইবার ভুক্তভোগী এবং এলাকার সাধারণ মানুষ প্রতিকার চেয়ে শান্তি সমাবেশ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। কিন্তু তাতেও কোন সুফল আসছে না বলে জানান এলাকবাসীরা। দুর্গম এলাকা হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। গত ১৮ জুন পুকুর জবর দখলের জন্য আয়েশ গ্রামের শতাধিক মানুষ সাইফুল-রেজা বাহিনীর বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় অভিযোগ করে। এর আগে গত ১৭মে তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম হতে প্রায় ৩শতাধিক লোকজন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের সাথে দেখা করে এর প্রতিকার চান। আর ওইদিন রাতেই বেড়াবাড়ী গ্রামে বাবু সরদার ও অফিজের বাড়ি লুট করে সাইফুল বাহিনী। চলতি বছর নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও চলনবিলের কৃষকরা ধানের ভাল ফলন পেয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ এসব গৃহস্থের বাড়ি লুটপাট করার জন্য পাঁয়তারা চলছে। তাছাড়া গ্রামে বাস করতে হলে তাদের মোটা অংক চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিয়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়ায় হয়েছে তাদেরকে। ডাহিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম বলেন, এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাদের অপকর্মের সাক্ষী। তাদের অত্যাচারে গ্রামের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
×