ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে কিউবিজম ধারায় সাদাকালোর প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৪ জুন ২০১৫

গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে কিউবিজম ধারায় সাদাকালোর প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে কিউবিজম শিল্পধারার বিকাশ ঘটেছিল ইউরোপে। এই শিল্পধারাটি আলোচিত হওয়ার পেছনে রয়েছে বিশেষ আরেকটি কারণ। বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো এই ধারায় দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন। আর শিল্পী জর্জ ব্র্যাকের সৃষ্টির অন্বেষায় প্রবর্তিত এই হয়েছিল এই ধারা। মূলত জ্যামিতিক ফর্মে উপস্থাপিত হয় এই শিল্পধারাটি। এ দেশেও কিউবিজম অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করেছেন অনেক শিল্পী। আর সেই সব শিল্পীর কিউবিজম ধারার সৃজনকর্মের বিশেষ নমুনা এখন শোভা পাচ্ছে ধানম-ির গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে। এখানে চলছে ফ্যাশন হাউস সাদাকালো আয়োজিত কিউবিজম ধারার প্রদর্শনী। পোশাকের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে কিউবিজম ধারার চিত্রকর্মের প্রিন্ট কপি। এই প্রদর্শনীতে সহযোগিতা করেছে গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ান। ক্যানভাস ) বা চিত্রপট নয়, মূলত পোশাকে উপস্থাপিত হয়েছে এই শিল্পধারা। বিশাল গ্যালারিজুড়ে ছড়িয়ে জ্যামিতিক নকশার নানা পোশাক। আর আসন্ন ঈদকে উপলক্ষ করে তৈরিকৃত পোশাকগুলো সহজেই আকর্ষণ করছে দর্শনার্থীদের। আর শিল্পের ছোঁয়ামাখা পোশাকগুলো দারুণ নজরকাড়া। সাদা আর কালোর মিশেলে তৈরি শাড়িতে নান্দনিকভাবে উঠে এসেছে ত্রিভুজ। আবার কোন শাড়ির জমিন কিংবা পাড়ে ঘটেছে চতুর্ভুজের সম্মিলন। কোথাও বা মিলেছে বৃত্তের সন্ধান। আর শুধু শাড়ি নয়, জ্যামিতির এই মজার মজার নকশাগুলো জুড়ে গেছে মেয়েদের সালোয়ার, কুর্তা, টপস ও পালাজোর জমিনে। একইভাবে জ্যামিতিক রকমারি নকশার স্পর্শ পেয়েছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট কিংবা ফতুয়ায়। শিল্প-আশ্রিত নারী-পুরুষের এই পোশাকগুলোর নকশা নেয়া হয়েছে দেশবরেণ্য পাঁচ শিল্পীর কিউবিজম ধারায় সৃষ্ট শিল্পকর্মের ফর্ম থেকে। এই শিল্পীরা হলেনÑ দেবদাস চক্রবর্তী, মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর, আমিনুল ইসলাম ও কাজী আবদুল বাসেত। প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে কথা হয় মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সামেরা জামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই ঈদের পোশাক কিনতে হবে। আর সেই পোশাকটিতে যদি শিল্পের ছোঁয়া থাকে বেড়ে যায় সেটার নান্দনিকতা। এ কারণেই প্রদর্শনী দেখার পাশাপাশি ঈদের পোশাক সংগ্রহের কাজটিও সেরে নিচ্ছি এখান থেকে। প্রদর্শনীতে পোশাকের পাশাপাশি উপস্থাপিত হয়েছে দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের কিউবিজম ধারার চিত্রকর্মের প্রিন্ট সংস্করণ। জানালা দিয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে জ্যামিতিক গড়নে চিত্রিত এক মানবী। ফুল মুন শিরোনামের ছবিটির চিত্রকর মোহাম্মদ কিবরিয়া। মাথায় মাছ নিয়ে দাঁড়িয়ে দুই নারীÑমাছ বিক্রেতা শীর্ষক এ ছবিটির স্রষ্টা কাজী আবদুল বাসেত। মুর্তজা বশীরের চিত্রিত ছবিতে নারীর হাতে ধরা দিয়েছে সূর্যমুখী ফুল। আমিনুল ইসলামের আঁকা ছবিটির শিরোনাম মাছ বিক্রেতা। উপস্থাপিত হয়েছে টাইম এ্যান্ড স্পেস শিরোনামের দেবদাস চক্রবর্তীর ছবি। থ্রি মিউজিশিয়ানস শিরোনামে পাবলো পিকাসোর ছবিটির প্রশান্তি ছড়ায় নয়নে। গিটার, বেহালা ও স্যাক্সোফোন নিয়ে সুরের মূর্ছনায় মেতেছে তিন সঙ্গীতশিল্পী। জর্জ ব্যাকের ছবিটির শিরোনাম ভায়োলিন এ্যান্ড ক্যান্ডেলস্টিক। প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে ২৭ জুন বিকাল ৪টায় সাদাকালো ও গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানের আয়োজনে অনুিষ্ঠত হবে ‘জীবনযাপনে শিল্পের ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা। দেশের বরেণ্য শিল্পীরা এই আলোচনায় অংশ নেবেন। গত ১২ জুন থেকে শুরু হওয়া প্রদর্শনী চলবে আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গ্যেটে ইনস্টিটিউটে স্টর্ম স্টিলের পরিবেশনা কাল সাহিত্য, সঙ্গীত ও অভিনয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা স্টর্ম স্টিল। অস্ট্রেলিয়ান লেখক পিটার হ্যাংকের স্টর্ম স্টিল উপন্যাস অবলম্বনে সাজানো হয়েছে পরিবেশনাটি। উপন্যাসটিকে মঞ্চ উপযোগী করেছেন সঙ্গীতকার ভারুন কিশোর এবং অভিনয়শিল্পী তানাজি দাসগুপ্তা। উপন্যাসটিকে সঙ্গীতে রূপান্তর করেছেন ভারুন আর দৃশ্যানুভূতি তৈরি করেছেন তানাজি। কাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় রাজধানীর গ্যেটে ইনস্টিটিউ মিলনায়তনে উপস্থাপিত হবে সবার জন্য উন্মুক্ত পরিবেশনাটি। একই সময়ে শুক্রবার বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিয়ের যাত্রা বিরতির ছাদে মঞ্চস্থ হবে এটি। গ্যেটে ইনস্টিটিউটের এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে যাত্রা বিরতি।
×