ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে নদী ভাঙ্গন

বর্ষায় উত্তাল পদ্মায়ও চলছে সেতুর মহাকর্মযজ্ঞ

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২৪ জুন ২০১৫

বর্ষায় উত্তাল পদ্মায়ও চলছে সেতুর মহাকর্মযজ্ঞ

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ বর্ষায় পদ্মা উত্তাল। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে পুরোদমে। পদ্মায় বিশাল বিশাল ক্রেনের ব্যস্ততা আর ভারি ভারি সব যন্ত্রপাতি দেখেই তা স্পষ্ট হবে। ইতোমধ্যেই মূল সেতুর প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। অন্য সব মিলে গড়ে সেতুর কাজ প্রায় ২৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। দেশের সর্ববৃহত প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। ঝড়বৃষ্টি কোনভাবেই কাজের গতি থামাতে পারেনি। তবে কুমারভোগে সেতুর কনস্টাকশন ইয়ার্ডে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে এই ভাঙ্গন দেখা দেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ভাঙ্গনে ১৫০ ফুট দীর্ঘ এলাকায় ১০ ফুট প্রশস্ত এলাকা বিলীন হয়েছে। তাই পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলামসহ একটি উচ্চপর্যায়ের টিম বুধবার প্রকল্প এলকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন এই ভাঙ্গন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বর্ষা এবং পানি বৃদ্ধিতে এমন ভাঙ্গন হতেই পারে। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতা নেয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম সেতুর কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বর্ষা শুরু হলেও পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সেতুর কাজে কোন সমস্যা নেই। ইতোমধ্যে তিনটি ট্রায়াল পাইল এবং চারটি ভয়াডাক পাইল স্থাপন হয়ে গেছে। এদিকে মূল পাইলিংয়ের প্রস্তুতি চলছে। মূল পাইলের হ্যামার মাওয়ায় পৌঁছার পর এই প্রস্তুতি বেড়ে গেছে। আগামী অক্টোবরে মূল পাইলিং শুরু হবে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে চার বছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে এই কাজ। এখনও পর্যন্ত সিডিউল যথাযথভাবেই এগুচ্ছে। কোথাও বিচ্যুতি হয়নি। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতুর কাজ সম্পন্ন হবে। প্রকল্প এলাকায় চীনা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করেও জানা গেছে পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতির চিত্র। দেশী-বিদেশী এবং সামরিক বেসামরিক মিলে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার লোক কাজ করছে এখানে। সরেজমিন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- স্বপ্নের এই সেতুর বাস্তবায়নের মহাযজ্ঞ। নির্ধারিত ২০১৮ সালের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হতে পারে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ নবেম্বরের থেকে ক্ষণ গণনার পরই থেকেই চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি পুরোদমে শুরু করেছে এই কাজ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ না হলে দিনপ্রতি গুনতে হবে বড় অঙ্কের জরিমানা। তাই কাজের গতি না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। ব্যয় বাড়লেও সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় সমৃদ্ধি ছাড়াও নিজস্ব অর্থে সেতু করার চ্যালেঞ্জ জয়ে অগ্রগতির চাকা আরও সফলভাবে অগ্রসর হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। তবে এখন এই ব্যয় আরও তিন হাজার কোটি বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। বহুমুখী সেতুর দ্বিতল এই সেতু উপরের তলায় থাকবে চার লেনের মহাসড়ক। নিচে রেললাইন। ট্রেনের গতিসীমা হবে ১৬০ কিলোমিটার। থাকবে গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ। দেশের দক্ষিণ পশ্চিম গ্যাস সরবরাহের জন্য থাকবে হাই প্রেসার গ্যাস পাইপ লাইন। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর মঙ্গলা সমুদ্রবন্দরের ব্যবহার বাড়বে। পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ বাড়বে। বাড়বে জীনযাত্রার মান ও মাথাপিছু আয়। তাই আনন্দে উদ্বেল এই অঞ্চলের মানুষ। ২৬ নবেম্বর মূল সেতু কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে চার বছরের জন্য। এদিন থেকেই ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে তারা কাজের অগ্রগতি রিপোর্ট পেশ করছে। হ্যামারসহ ৭৫০টিরও বেশি ছোট বড় যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে মাওয়ায় পৌঁছছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়া ডাক্টর (সংযোগ সেতু) কাজও চলছে সমান গতিতে। মাওয়া প্রান্তে দেড় কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষার তীব্র স্রোত আর উত্তাল পদ্মায় নদী শাসনে পরীক্ষামূলক অনেক কিছুই প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই কাজে প্রায় ১৫ শ’ বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। পদ্মা সেতু হচ্ছে ৫টি অঙ্গে ॥ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মোট ৫টি অঙ্গ রয়েছে। ১. মূল সেতুর চুক্তি মূল্য ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ২. নদী শাসন কাজের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। ৩. জাজিরা সংযোগ সড়ক (সার্ভিস এরিয়া-৩সহ) কাজের চুক্তি মূল্য ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। ৪. মাওয়া সংযোগ সড়কের (সার্ভিস এরিয়া-১সহ) চুক্তি মূল্য ১৯৩ কোটি টাকা। ৫. সার্ভিস এরিয়া-২ এর চুক্তি মূল্য ২০৮ কোটি টাকা। এছাড়া দুটি পরামর্শক এর মধ্যে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশনের চুক্তি মূল্য ৩৮৩ কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠান মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকি করছে। দ্বিতীয় পরার্মশক প্রতিষ্ঠান স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী) এর চুক্তি মূল্য ১৩৩ কোটি টাকা। তারা মাওয়া সংযোগ সড়ক, জাজিরা সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ এর কাজ তদারিক করছে। মূল সেতুর কাজ পেয়েছেÑ চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। নদী শাসন কাজ পেয়েছে- চায়নার সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। সার্ভিস এরিয়া-২ এর কাজ পেয়েছে এককভাবে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম। বাকি দুটি কাজ পেয়েছে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম এবং মালেশিয়ার এইচসিএম যৌথভাবে। সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সমস্ত কর্ম প্রক্রিয়াকে ৬টি ভাগে ভাগ করে ক্লান্তিহীনভাবে কাজ চলছে। নির্দিষ্ট ছকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহত প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ। চলছে সেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য রাস্তা নির্মাণ, মাটি পরীক্ষা, নদীর ওপর প্লাটফর্ম নির্মাণ, পাইল তৈরিসহ বিভিন্ন কাজকর্ম। এছাড়া নদী তীর থেকে বিশাল ক্রেনের মাধ্যমে মালপত্র ওঠানামার কাজ চলছে। পদ্মা নদীর দুই পাড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মেদিনীম-ল ও কুমারভোগ দুটি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই সংযোগ সড়ক। অপরপ্রান্তে শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার নাওডোবা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে সাড়ে ১০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। চার লেনের এ সংযোগ সড়কের মাটির ফেলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কোথাও বিটুমিন ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। এই সড়কের মধ্যে ৯৭০ মিটারের ৫টি ছোট সেতু, ১৯টি বক্স কালভার্ট, ৮টি আন্ডার পাস ও টোলবুথ নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে। এজন্য রড, পাথর, বালু, সিমেন্টসহ অন্যান্য উপকরণ জড়ো করা হয়েছে নদীর পাড়ে। নৌপথে আনা বিভিন্ন উপকরণ খালাস কাজ চলছে। এদিকে প্রায় ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার মাওয়ার সংযোগ সড়কের নির্মাণে মাটি ফেলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মেধ্যেই চলছে টোল বুথ, কলভাটসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ প্রক্রিয়া। তাই ইট, সুরকি, পাথর, বালু প্রভৃতি জড়ো করা হয়েছে প্রকল্প এলাকায়। প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করছে প্রকল্প এলাকায়। এ সব শ্রমিক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কর্মকর্তাদের থাকার জন্য মাওয়া ও জাজিরা এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে আবাসিক ভবন। এছাড়া প্রকৌশলীদের থাকার জন্য মাওয়া ও জাজিরায় ভাড়া করা হয়েছে ২০টি বাড়ি। শ্রমিকদের থাকার জন্য দুই পাড়ে টিন শেডের প্রায় ২শ’ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতল বিশিষ্ট সেতুটি নির্মিত হবে কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে। এর ওপর দিয়ে গাড়ি ও নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। এছাড়া অন্যান্য প্রকল্পে কাজ করছে আলাদা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাই পদ্মা সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরার বিশাল এলাকাজুড়ে চলছে ব্যাপক কর্মতৎপরতা। পদ্মা সেতু ৪২টি পিলারের ওপর নির্মিত হবে। ১৫০ মিটার পর পর পিলার বসানো হবে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ১ মার্চ সেতুর এ্যাংকর পাইল বসানো শুরু হয়। এছাড়া সেতু এলাকার এ্যালাইনমেন্টের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। গত বছর ১ নবেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় এবং ১৩ নবেম্বর শরীয়তপুরের জাজিরায় মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। তাই ইতোমধ্যে ২৫০ মিটার প্রশস্ত করে চর কাটার কাজ শুরু হয়েছে। তাই দ্রুতই মূল সেতুর কাজ শুরু হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রায় ১ হাজার ১শ’ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে চারটি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। ২০১৮ সালে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে যানবাহন ও রেল এই কর্মপরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছে সবকিছু। নিরলসভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সংযোগ সড়ক, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকদের আবাসন, সংযোগ সড়কে থাকা কালভার্ট, সংযোগ সড়কের পাশের সার্ভিস রোড তৈরি, ওয়ার্কশপ, টোল প্লাজা, ড্রেজিং ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কাজ। ভারি ভারি নির্মাণ যন্ত্র দিয়ে চলছে পাথর কাটা, মাটি কাটা, মাটি ভরাট, রাস্তা সমান করার কাজ। ওয়েল্ডিংয়ের আলোর ঝলকানি আর ভারি যন্ত্রপাতির শব্দে মুখরিত জাজিরার পদ্মাপাড়। চীন থেকে ইতোমধ্যে তিনশ’ অধিক প্রকৌশলী এসেছেন আরও কয়েক শতাধিক আসার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্তে সংযোগ সড়ক ও টোল প্লাজা নির্মাণ কাজ করেছে যৌথভাবে আবদুল মোনেম নিমিটেড ও মালয়েশিয়ার এইচসিএম নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২৫ মিটার প্রস্থ মোট ১২.১৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের মধ্যে জাজিরা পয়েন্টে সারে দশ কিলোমিটার দৈঘ্যের ৪ লেন বিশিষ্ট সংযোগ সড়কের কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন করে তা মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার বিষয়টি ভেবে দেখছে সরকার। ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে ঢাকার গে-ারিয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২.৩২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। যার জন্য রেল বিভাগ ৩৬৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করছে। জাজিরার নাওডোবায় সার্ভিস এরিয়া-২ এর অধীনে পদ্মা রিসোর্ট নির্মাণ করা হবে। এখানে ১টি মোটেল ম্যাস, ১টি রিসোর্ট অভ্যর্থনা কেন্দ্র, ১টি সুপারভেশন অফিস ও ৩০টি ডুপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এদিকে প্রকল্পের সকল কাজ তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে নদী ভাঙ্গন ॥ লৌহজং উপজেলার কুমারভোগে পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনে এ পর্যন্ত তিনটি স্থানে ১৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ১০ফুট প্রস্ত এলাকা বিলীন হয়ে যায়। তবে তাৎক্ষণিক বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) আব্দুল কাদের জানান, সেতুস্থল থেকে এক কিলোমিটার ভাটিতে সোমবার এক পয়েন্টে এবং মঙ্গলবার কাছাকাছি আরেকটি পয়েন্ট ভাঙ্গন দেখা দেয়। এর আগে রবিবার প্রথম ভাঙ্গন দেখা দেয় মূল সেতুর ৫শ’ মিটার ভাটিতে নদীশাসন এলাকার সিনোসাইড্রো সাবস্টেশনের কাছে। তিনটি পয়েন্টে মোট ১৫০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে পদ্মা সেতুর জন্য কোন সমস্যা নেই। পানি বৃদ্ধির সময় উত্তাল পদ্মার তীরে এ রকম ছোটখাটো ভাঙ্গন থাকতেই পারে। এসব এলাকায় কোন পাইলিং চলছে না। মূল সেতু এলাকায় পাইলিংসহ সব রকম কাজই স্বাভাবিক চলছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলামসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম বুধবার প্রকল্প এলাকা পরির্দশনে আসছেন। তবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভাঙ্গনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বর্ষা এবং পানি বৃদ্ধিতে এমন ভাঙ্গন হতেই পারে।
×