ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ২৫ জুন ২০১৫

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও আমরা বাঙালি। হাজার বছরের শত লাঞ্ছনা অত্যাচার সহ্য করে আজ আমরা স্বাধীন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে পরিগণিত। জাতিসংঘের সকল পর্যায়ে বাংলাদেশের রয়েছে সদর্প পদার্পণ। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ইত্যাদি বাঙালির অহংকার। বাঙালির এই অহংকার অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান চিরকালীন, অবিনশ্বর। ক) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম কোন সালে, কোথায়? খ) ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না’ কেন এই অনিচ্ছা? গ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপাটটি কী? ঘ) ৭ই মার্চের ভাষণের তৎপর্য বর্ণনা কর। উত্তর : ক) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। খ) ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। নিয়ম অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রি হওয়ার কথা। কিন্তু পাকিস্তানি সরকার নানা কারণ দেখিয়ে সংসদ অধিবেশন ডাকতে বিলম্ব করে।তৎকালীন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট প্রথমে ৩রা মার্চ সংসদ অধিবেশন আহ্বান করেন। কোন কারণ ছাড়া ৩রা মার্চের অধিবেশন করা হয় ২৫ মার্চ। কিন্তু এর মধ্যে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু তাই ২৫ মার্চের অধিবেশনে যোগদানে প্রেসিডেন্টকে চারটি শর্ত বেঁধে দেন। শর্তগুলো হল : ক. মার্শাল ’ল তুলে নেয়া খ. সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত নেয়া গ. সকল হত্যাকা-ের তদন্ত করা এবং ঘ) জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। উপরোক্ত দাবি পূরণ না হলে বঙ্গবন্ধু পার্লামেন্ট অধিবেশনে যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে বলেন ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না।’ কারণ তিনি চেয়েছিলেন বাংলার মানুষের অধিকার। তাই যতদিন এই অধিকার প্রতিষ্ঠা না পাবে ততদিন তিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন না। গ) বাঙালির ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। প্রাচীন কাল থেকে বাঙালিরা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সামাজিক নানা অন্যায়, মোকাবেলা করে আসছে। কিন্তু স্বাধীকারের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেনি তারা দীর্ঘ দুইশত বছর ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেছে। ১৯৫২ সালে ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আত্মত্যাগ করেছে। সামরিক শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের আইয়ুব খানের পতন ঘটে। আইয়ুব খান পদচ্যুত হলে ক্ষমতাসীন- ইয়াহিয়া খান। তিনি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। গণতন্ত্রের ধারা অনুসারে পাকিস্তানের শাসনভার পাওয়ার কথা আওয়ামী লীগের অর্থাৎ বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ও গণতন্ত্র হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়। এই প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় দশ লক্ষ লোক সমাগমে বাঙালির ভবিষ্যৎ ভাগ্যনিয়ন্ত্রণমূলক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাষণ ‘৭ই মার্চের ভাষণ’ হিসেবে খ্যাত। ঘ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার সনদ। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের দিকদর্শন। বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সামগ্রিক রূপরেখা, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আশা আকাক্সক্ষার ডানা বেঁধেছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তৈরি হয়েছিলো তা ইয়াহিয়া খানের কূট-ষড়যন্ত্রের ভূলুণ্ঠিত হয়ে যায়। অপরিহার্য হয়ে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের। ১৯৫২ সালে বাঙালির মধ্যে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয় ৭ই মার্চের ভাষণের পর তা পল্লবিত হয় বিকশিত হয়। লাল সবুজের পতাকায় শোভিত আজকের বাংলাদেশ ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেরই প্রতিফল। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম শেখ মুজিবুর রহমান বহুনির্বাচনী প্রশ্ন- ১.জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদান করেন-
×