ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কখনও তিনি জিনের বাদশা কখনও পদস্থ কর্মকর্তা

বরিশালে ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রতারক রহিম

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৬ জুন ২০১৫

বরিশালে ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রতারক রহিম

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ বিভিন্ন নাম্বারে ফোন দিয়ে কখনও তিনি হয়ে যান কথিত জিনের বাদশা। জটিল ও কঠিন রোগব্যধি নিরাময়সহ আপদ-বিপদ কাটানোর ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে নিরীহ জনসাধারণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। আবার কখনও মোবাইল ফোনে প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে মিথ্যে তথ্য দিয়ে হয়রানি করছেন দেশের বিভিন্ন থানার ওসি এবং এসআইদের। ইতোমধ্যে ওই দলের দু’সদস্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করলেও কথিত জিনের বাদশা রহিম সরদার (৪৮) রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। জানা গেছে, প্রতারক রহিম সরদারের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলার গৌরনদী উপজেলার টরকীরচর এলাকায় ভুক্তভোগী দু’শ পরিবারের সদস্য। অভিযোগে জানা গেছে, একসময়ের বেদে সর্দার আব্দুর রহিমের তত্ত্বাবধানে নৌকায় বসবাস করত গত ১০ বছর থেকে টরকীরচরে স্থায়ী বসবাস করা প্রায় দু’শতাধিক বেদে পরিবারের সদস্যরা। সেই থেকে অদ্যবধি বহরের মাত্র ২০টি পরিবার নিয়ে মৃত সেকান্দার সরদারের পুত্র রহিম সরদার ঝালকাঠী সদরের কৃষ্ণকাঠী গ্রামে বসবাস করে আসছেন। অভিযোগে আরও জানা গেছে, দু’ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই বেরিয়ে আসতে থাকে রহিম সরদারের নানা কু-কর্মের কাহিনী। তার এসব অপর্কমের তথ্য ফাঁস করায় ইতোমধ্যে ১২টি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় টরকীরচর এলাকায় স্থায়ী বসবাস করা বেদে সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের। সূত্রমতে, মাদক বিক্রির স্বর্গরাজ্য, জিনের বাদশা পরিচয়ে জটিল ও কঠিন রোগব্যধি নিরাময়সহ আপদ-বিপদ কাটানোর নামে প্রতারণার মাধ্যমে নিরীহ জনসাধারণের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদ করার কারণেই ওই বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। যেকারণেই তারা দু’দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এক সময়ের বেদে সর্দার আব্দুর রহিম মাত্র কয়েক বছরের ব্যববধানে প্রতারণার মাধ্যমে হয়েছেন কোটিপতি। নৌকার বহর ছেড়ে এখন তিনি বসবাস করেন সুরম্য অট্টালিকায়। তার দলে রয়েছে প্রশিক্ষিত ২২ জন নারী ও পুরুষ। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম সরদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, টাকা পয়সা আল্লাহ তায়ালার দান, যখন যাকে ধরা দেবে তখন সেই মালিক হবেন। অন্যকোন প্রসঙ্গে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
×