ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ওরা মানবতার শত্রু

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৯ জুন ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

আমাদের সমাজে একটা কথা চালু আছে তা হলো- মানুষ যখন রাতারাতি বিত্তশালী হয়ে ওঠে তখন কটাক্ষ করে বলতে শুনেছি, মনে হয় লোকটি আদম ব্যবসায় জড়িত। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে একটি বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে যে সহজেই অবৈধভাবে আয়ের একমাত্র পথ হচ্ছে এই আদম ব্যবসা যা ভাষার পরিবর্তনে আজকে হয়েছে মানবপাচার ব্যবসা। যদিওবা আজকের সমাজে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার অনেক পথই মানুষ বের করেছে। তথাপি সভ্য জগতে পৃথিবীর বহু দেশে আদি দাস প্রথাকেও হার মানিয়ে আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়েছে এই মানবপাচার। তেমনিভাবে আমাদের দেশেও উদ্বেগজনক হারে অমানবিক এই পেশায় যুক্ত হয়েছে সমাজের কিছু মানুষ। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সমুদ্র উপকূলীয় সীমান্তের গহীন জঙ্গলে মানবপাচারকারীদের আস্তানা থেকে মৃত মানুষের হাড়-গোড় উদ্ধারের পর সে দেশের পুলিশ অনুসন্ধান করে অসংখ্য গণকবরের সন্ধান পায়। যার বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলমান কিংবা ভাগ্য বিড়ম্বিত বাংলাদেশী মানব সন্তানের। সমুদ্রপথে বিভিন্নভাবে পাচার হওয়া এই মানুষগুলো রোগে-শোকে, খাদ্যের অভাবে কিংবা পাচারকারীদের হাতে নির্যাতিত হয়ে মারা গেছে। মালয়েশিয়ার উপকূলীয় সীমান্তের সংরক্ষিত একটি এলাকায়ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধান পাওয়া গণকবরে উদ্ধার হওয়া দুইশ’ জনই বাংলাদেশী নাগরিক। থাইল্যান্ডে প্রথম গণকবর আবিষ্কার হওয়ার পর বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হলে বাংলাদেশেও এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। কেননা পাচার হওয়া মানুষের মধ্যে অসংখ্য বাংলাদেশী নাগরিকও রয়েছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এ ঘটনায় সাগরে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে উঠে আসে মাসের পর মাস ভাসতে থাকা পাচার হওয়া হাজার হাজার নারী-পুরুষের জীবন-মৃত্যুর করুণ কাহিনী। বিশ্ব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার পেয়েছে এ অমানবিক ঘটনার। আর তখনই ঘুম ভাঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। যদিওবা এই দেরিতে ঘুম ভাঙ্গার কাহিনী আজ এদেশের কারোরই অজানা নয়। নড়ে-চড়ে উঠে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র। পাচারকারীদের গ্রেফতার অভিযানে নামে পুলিশ-বিজিবি। গ্রেফতার করা হয় কিছু পাচারকারীকে। ক্রসফায়ারে মারাও যায় কয়েকজন পাচারকারী। পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হয় দুয়েকজন এবং সাগরে ভাসমান কিছু মানুষকে উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, এই পাচারকারীরা এতদিন কিভাবে বহাল তবিয়তে সমাজে চলাফেরা করেছে? কিভাবে তারা হাজার হাজার নারী-পুরুষকে পাচার করে সাগরে ভাসিয়ে দিল আর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কিভাবে এতসংখ্যক মানুষ নিখোঁজ হয়ে গেল আর আমাদের রাষ্ট্র কিছুই জানল না! শহীদুল আলম শহীদ রাউজান, চট্টগ্রাম সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো ড. আর এম দেবনাথ। প্রথমেই আপনাকে সাধুবাদ জানাই ‘সঞ্চয়পত্রে সুদ হ্রাস ॥ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপেষু’ শিরোনামে লেখাটির জন্য যা সম্প্রতি দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত চাকুরে, কর্মহীন মানুষ, অসহায়, বিধবা, যারা জীবনের সঞ্চিত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে সাধারণভাবে খেয়ে পরে বেঁচে আছে, তাদের আরও কষ্টের মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এখন থেকে যারা পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করবে তারা ১০৭০ টাকার স্থলে ৯২০ টাকা পাবে। যে অসহায় মহিলা ৫ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করবে, সে প্রতি মাসে কম পাবে ৭৫০ টাকা। যারা তিন মাস অন্তর মুনাফা সঞ্চয়পত্র করবে সে পাবে ১০০০ টাকার স্থলে ৮৫০ টাকা। এই সঞ্চয়পত্রে মুনাফা হার কমিয়ে লাখ লাখ গরিব মানুষের ক্ষতি করার বুদ্ধি সরকারকে কে বা কারা দিল। সরকার কি জানে না, এই সিদ্ধান্তের ফলে কত পরিবার সরকারের ওপর নাখোশ হবে। আর নাখোশ হলেই বা সরকারের কি যায় আসে! কাজেই আমরা সাধারণ মানুষ যারা এর ওপর নির্ভরশীল তারা সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর এই সিদ্ধান্তে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। কারণ আমাদের কর্মহীন মানুষরা প্রতিবাদ করতে পারবে না। সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে সরকার ভাল করল না মন্দ করল তা সরকার ভেবে দেখুক। নাজনীন আক্তার আসাদগেট, ঢাকা।
×