ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাঙ্গন শুরু ॥ ঝুঁকিতে ১ গ্রাম

পটিয়ায় বাঁধের টাকা লোপাট

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৯ জুন ২০১৫

পটিয়ায় বাঁধের টাকা লোপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, ২৮ জুন ॥ প্রতিবছর পাহাড়ী ঢলের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে শ্রীমাই খালের দু’পাশে ইতোমধ্যে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত অর্থবছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের টাকা হরিলুটের কারণে উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণের মধ্যে বসবাস করছে। যে কোন মুহূর্তে পুরনো রাস্তা ভেঙ্গে পানির প্রবল স্রোতে পুনরায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার সকালে ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন ভাটিখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছত্রছায়ায় থেকে দলীয় লোকজন বেড়িবাঁধ নির্মাণের লাখ লাখ টাকা হরিলুট করেছে। এসব অনিয়ম, দুর্নীতিতে সহযোগিতা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘুষখোর কর্মকর্তারা। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের ৮টি স্থানে মারাত্মকভাবে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে ভাটিখাইন-ছনহরা সীমান্তে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি বাড়িঘরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ওই বছরেই বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, স্লুইস গেট নির্মাণ মেরামত ও খাল-খননের কাজ শুরু করে। কাজের কার্যাদেশে শ্রীমতি খালের ভাটিখাইন ও ছনহরা এলাকায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ও অনিয়ম করে টাকা উত্তোলন করে হরিলুটের কারণে পাহাড়ী ঢলের পানি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ভাটিখাইন ও ছনহরা গ্রামে ঢুকে পড়ছে। পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপজলার শোভনদ-ী, খরনা, কচুয়াই এলাকায় ২৫ কিলোমিটার খাল খনন, পাঁচটি স্লুইস গেট মেরামত ও ভাটিখাইন-ছনহরা এলাকায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের টেন্ডার হয়। মূল ঠিকাদার ইউনুচ এ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থাকলেও সরকারী দলের প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট করে সাফ ঠিকাদার হিসেবে এ কাজ ভাগিয়ে নিয়ে অনিয়ম ও বেড়িবাঁধের টাকা হরিলুট করেছে বলে ভাটিখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অভিযোগ। কার্যাদেশে বেড়িবাঁধের মাটি মানুষ দিয়ে কাটার কথা থাকলেও তা এ এস্কেলেটর দিয়ে তড়িঘড়ি করে কেটেছে। এ প্রসঙ্গে পটিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভাটিখাইন ও ছনহরা সীমান্তে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জায়গা অধিগ্রহণ করতে না পারায় ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি। বেড়িবাঁধের মাটি মানুষ দিয়ে না কেটে কেন এ এস্কেলেটর দিয়ে কাটা হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগে দ্রুত কাজ শেষ করতে এ এস্কেলেটর ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি। ভাটিখাইন-ছনহরা সীমান্তে ৫শ’ মিটার বেড়িবাঁধের জায়গা বাকি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ওই জায়গাটিই ঝুঁকিপূর্ণ।
×