ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোপা আমেরিকা ফুটবল, চার বছর আগের চিত্রনাট্যই মঞ্চস্থ হলো আরেকবার, নায়ক গঞ্জালেজের চোখ শিরোপায়, ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে;###;ব্রাজিল ১(৩)-১(৪) প্যারাগুয়ে

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিতে প্যারাগুয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৯ জুন ২০১৫

ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিতে প্যারাগুয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঞ্চটা ছিল একই। সেই মঞ্চের চিত্রনাট্যও অভিন্ন থাকল। চার বছর আগের মতো এবারও ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা মিশন শেষ হয়েছে প্যারাগুয়ের কাছে হেরে। বাংলাদেশ সময় রবিবার ভোরে চিলিতে চলমান চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আসরের বর্তমান রানার্সআপ প্যারাগুয়ে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে ফলাফল নিষ্পত্তি হয়। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্যারাগুয়ের প্রতিপক্ষ ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ২০১১ সালে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত আসরেও শেষ আটে প্যারাগুয়ের কাছে হেরেছিল ব্রাজিল। সেবারও সেলেসাওদের কাঁদতে হয়েছিল টাইব্রেকারে হেরে। চার বছর পর এবারও ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারল না রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এবারও কান্নায় শেষ হয়েছে ব্রাজিলিয়ানদের কোপা মিশন। সুপারস্টার ও অধিনায়ক নেইমার না থাকলেও ম্যাচের শুরু থেকে প্যারাগুয়ের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে ব্রাজিল। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ফিলিপ কাউটিনহোর দূরপাল্লার শট প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক জাস্টো ভিয়ার কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। ১৪ মিনিটে দানি আলভেজের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান ফরোয়ার্ড রবিনহো। দেশের হয়ে ৯৯ ম্যাচ খেলে রবিনহোর এটা ২৮ নম্বর গোল। ২০১০ সালের পর এই প্রথম ব্রাজিলের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে গোল পেলেন তিনি। এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়াতে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় কার্লোস দুঙ্গার দল। এই সুযোগে মাঝমাঠে জায়গা পেয়ে গোল পরিশোধের জন্য আক্রমণে যায় প্যারাগুয়ে। বিরতির পর ব্রাজিলের অগোছালো ফুটবলের সুযোগ নিয়ে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় প্যারাগুয়ে। ৭১ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলও পেয়ে যায় বর্তমান রানার্সআপরা। এ সময় বক্সের মধ্যে উঁচু হয়ে আসা বল হেড করার চেষ্টা করেন প্যারাগুয়েন ফরোয়ার্ড সান্টা ক্রুজ। একসঙ্গে লাফিয়ে হেড করে বিপদমুক্ত করতে যান দুই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানি আলভেজ ও থিয়াগো সিলভা। কিন্তু বিধি বাম! সিলভার হাতে বল লেগে যায়। সেটা নজর এড়ায়নি উরুগুইয়ান রেফারি আন্দ্রেজ কুনহার। পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি। স্পট কিক থেকে গোল করে প্যারাগুয়েকে সমতায় আনেন ফরোয়ার্ড ডার্লিস গঞ্জালেস (১-১)। এরপর বাকি সময় আর কোন গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে। এই আসরের নিয়ম হচ্ছে নকআউট পর্বে খেলা ড্র হলে অতিরিক্ত সময় খেলা না হয়ে সরাসরি টাইব্রেকার হবে। ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম শটে গোল করেন যথাক্রমে ফার্নান্ডিনহো, অধিনায়ক মিরান্ডা ও ফিলিপ কাউটিনহো। দ্বিতীয় ও চতুর্থ শটে মিস করেন এভারটন রিবেরিও ও ডগলাস কোস্তা। দুজনের বাঁ পায়ের গড়ানো শটই পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। অন্যদিকে প্যারাগুয়ের পক্ষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করেন যথাক্রমে অসভোল্ডো মার্টিনেজ, ভিক্টর কারেরেস ও রাউল বোবাডিলিয়া। সান্তা ক্রুজ চতুর্থ শটে গোল করতে ব্যর্থ হলে জয়ের প্রথম সুযোগ হারায় প্যারাগুয়ে। ক্রুজের ডান পায়ে নেয়া শটটি আকাশে উঠে যায়! তবে পঞ্চম শটে গোল করে ঠিকই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ডার্লিস গঞ্জালেজ। যিনি ম্যাচের ৭১ মিনিটে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। ফলে সন্দেহাতীতভাবেই জয়ের নায়ক বনে যান গঞ্জালেজ। ম্যাচ শেষে প্যারাগুয়ের জয়ের নায়ক গঞ্জালেজ বলেন, আমি আমার সতীর্থদের চোখে পানি দেখেছি। এই অনুভূতির কোন মূল্য নেই। আমরা যখন এখানে এসেছিলাম তখন আমাদের ওপর কারও আস্থা ছিল না। কিন্তু আমার খুবই সংঘবদ্ধ দল। ২১ বছর বয়সী এই তারকা আরও বলেন, এখনও টুর্নামেন্টে আমাদের অনেক কিছুই দেয়ার বাকি আছে। আমরা আরেকবার দ্বিতীয় হতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য শিরোপা।
×