ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুঙ্গার কাঠগড়ায় ভাইরাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৯ জুন ২০১৫

দুঙ্গার কাঠগড়ায় ভাইরাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চার বছর আগে কোপা থেকে টাইব্রেকারে ছিটকে যাওয়ার ক্ষতটা এখনও তরতাজা। এবার তাই দারুণ সুযোগ ছিল সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার। কিন্তু না, এবারও সেই ২০১১ কোপার চিত্রনাট্য। শনিবার কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল-প্যারাগুয়ে। একই মঞ্চে ঠিক একইভাবে হেরে আরেকবার স্বপ্ন-ভঙ্গের বেদনায় ডুবল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০১১ কোপায় ব্রাজিলের কোচ ছিলেন লুইস ফিলিপ সোলারি। যার অধীনে নিজেদের মাটিতে বিশ্বকাপেও লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। তার উত্তরসূরি হিসেবেই গত বিশ্বকাপের পর ব্রাজিলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন কার্লোস দুঙ্গা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই রীতিমতো উড়তে থাকে ব্রাজিল। গড়ে টানা দশ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডও। কিন্তু কোপা আমেরিকার মূল মঞ্চে এসেই নিষ্প্রভ তার দল। ফেবারিট হিসেবে টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করলেও কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা পেরোতে পারেনি তারা। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে কেন এমন পরাজয়? ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলের কোচ জানালেন, তার দলের খেলোয়াড়রা নাকি শেষ আটের লড়াইয়ের আগে থেকেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কেউ মাথা ব্যথা আবার কেউ বা পিঠের ব্যথায় ভুগছিলেন। যদিওবা সেগুলোকে হারের অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে নারাজ দুঙ্গা, ‘এটাকে হারের অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাব না। কিন্তু এই সপ্তাহে আমাদের ১৫ খেলোয়াড় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। খেলোয়াড়দের অনেকে মাথা এবং পিঠের ব্যথায় ভুগছিলেন। কারও অসুস্থতা অন্যের চেয়ে বেশি ছিল। অনেকে বমিও করেছেন। ম্যাচের প্রথমার্ধের পর উইলিয়ানের অবস্থা ভাল ছিল না। ম্যাচের শেষে রবিনহোরও একই অবস্থা ছিল।’ টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেছিলেন নেইমার। শাস্তি হিসেবে কোপা থেকেই বাদ। ফলে নেইমারবিহীন ব্রাজিল কিছুটা দুর্বলই ছিল প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় নেইমার না থাকায় কিছুটা প্রভাব যে ম্যাচে পড়েছে তা স্বীকার করেছেন দুঙ্গাও। তার মতে, ‘ঐতিহাসিকভাবে কোপা আমেরিকা জটিল একটি টুর্নামেন্ট। ব্রাজিল এখানে কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। যখন আপনি জিতবেন তখন কেউ কিছুই বলবে না। কিন্তু হারলে সবাই বলবে কিছু একটা যেন ছিল না। নেইমার আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন, যেমনটা বার্সিলোনার জন্যও। কিন্তু আমাদের আরও কিছু ভাল মানের খেলোয়াড় ছিল, যারা তাদের নামের সুবিচার করতে পারেনি।’ তারপরও হতাশ হচ্ছেন না ব্রাজিলের কোচ। সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগোনোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দুঙ্গা, ‘আমরা কোপা জিততে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি। তবে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করাই এখন আমাদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য।’ কোপা আমেরিকায় ঢুস-কা-ে নিষিদ্ধ হওয়ার পর ক্ষমা চেয়েছিলেন নেইমার। সেই ঘটনার পর বেফাঁস এক মন্তব্যের কারণে ক্ষমা চাইতে হয়েছে কার্লোস দুঙ্গাকেও। সম্প্রতি পারফর্মেন্সের কারণে ব্রাজিল দলের ওপর যথেষ্ট চাপ ছিল। আর তা ব্যাখ্যা করতে গিয়েই ঝামেলাটা পাকিয়েছেন দুঙ্গা। তিনি বলেছিলেন, ‘৪০ বছর ধরে কোপা আমেরিকা ও ২৪ বছর ধরে বিশ্বকাপ না জেতার চাপ সইতে হয়েছে আমাকে। সবকিছুই তখন বিপক্ষে ছিল। যা করি, তাতেই সমালোচনা। আমি কি আফ্রিকান বংশোদ্ভূত যে আমাকে এত সমালোচনা সইতে হচ্ছে।’ দুঙ্গার এই আফ্রিকান বংশোদ্ভূত শব্দযুগল নিয়েই সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখেই ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতির মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে নেন দুঙ্গা।
×