ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রী নির্যাতনের দায় স্বীকার সাংবাদিক মুকুলের, জেলে প্রেরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩০ জুন ২০১৫

স্ত্রী নির্যাতনের দায় স্বীকার সাংবাদিক মুকুলের, জেলে প্রেরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারণে-অকারণে স্ত্রী নাজনীন আখতার তন্বীকে নির্যাতনের দায় স্বীকার করেছেন সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুল (৩৭)। এছাড়া স্ত্রীর দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। রিমান্ড শেষে মুকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে মুকুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেননি। মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে আবারও রিমান্ডে আনা হতে পারে। এদিকে সোমবার বেসরকারী চ্যানেল গাজী টেলিভিশন (জিটিভি) মুকুলকে বার্তা সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। গত ২৫ জুন স্ত্রী নাজনীন আখতার তন্বী (৩৭) মিরপুর মডেল থানায় নারী নির্যাতন আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামি মুকুলের পরকীয়া প্রেমিকা ঢাকা ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ প্রধান কর্মকর্তা (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) রাজিউল আমীনের স্ত্রী ও ছায়ানটের রবীন্দ্র সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেরুন বিনতে ফেরদৌস সিঁথি। মুকুল ও সিঁথি বনশ্রীর একটি বাসায় এক বছর ধরে একত্রে বসবাস করছিলেন। এছাড়া মুকুল স্ত্রী তন্বীর দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়ে পূর্বাচলের সাড়ে সাত কাঠার প্লটটি কেনার কথা স্বীকার করেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি তন্বীর দুলাভাইকে ২৬ লাখ টাকা ফেরত দেবেন। কিন্তু তারা ৬০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। তবে এ প্রসঙ্গে মুকুলের স্ত্রী নাজনীন জানান, দুই পক্ষের ডিড অনুযায়ী তার দুলাভাই মুকুলের কাছ থেকে ৩ কাঠা জমির মূল্য চেয়েছেন। তবে মুকুল তাদের জানিয়েছেন, তিনি তিন কাঠার দাম দেবেন না। তার কাছ থেকে টাকা নিতে হলে আদালতে গিয়ে আদায় করতে হবে। ২৬ লাখ টাকা দেবেনÑ এ ধরনের কিছুই মুকুল বলেননি। উল্লেখ্য, প্রায় দুুই কোটি টাকায় ওই প্লটটি মুকুল স্ত্রীর অজান্তে বিক্রি করে দেয়। পরকীয়া ও আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে কথা বললেই স্ত্রীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাত মুকুল। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও মুকুল তাকে শারীরিকভাবে বহুবার নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের কারণে তাকে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন নাজনীন নিজের ও সন্তানের প্রাণনাশের আশঙ্কায় দেড় মাস মায়ের বাসাতেও অবস্থান করেছিলেন। ওই মামলায় গত ২৬ জুন রাত আড়াইটায় সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেফতার করা হয় মুকুলকে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ পারভেজ আসামিকে ২৭ জুন ঢাকার সিএমএম আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত মুকুলকে একদিনের রিমান্ডে পাঠায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, রিমান্ডের প্রথম দিনেই আসামি মুকুল স্ত্রীকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করার দায় স্বীকার করেছেন। এমনকি প্লট বিক্রি করা, স্ত্রীর কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়াসহ সব অভিযোগই অবলীলায় স্বীকার করেছেন। অভিযোগ স্বীকার করায় গত ২৮ জুন রবিবার আসামিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে এ সংক্রান্ত ফরোয়ার্ডিং দেয়া হয়েছে। তবে আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়নি। আসামিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা তদন্তের স্বার্থে এবং আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আসামিকে আবারও রিমান্ডে আনার প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য আদালতের কাছে আসামিকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে পাঠানোর আবেদন করা হতে পারে।
×