ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাফল্য ধরে রাখতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৩০ জুন ২০১৫

সাফল্য ধরে রাখতে হবে

সমাজে দারিদ্র্য সমস্যা হিসেবেই চিহ্নিত। আমাদের সমাজে এর মূল অনেক গভীরে। দারিদ্র্যতায় ভুক্তভোগীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সিদ্ধান্তহীনতা, বেকারত্ব ইত্যাদিতে ভুগে থাকেন। দারিদ্র্য বিমোচনে কৃষি ও শিল্প খাতে বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বাড়ানো, সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন, সামাজিক বিভেদ হ্রাস ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা জরুরী। বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে সেই পথেই হাঁটছে। তাই দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও সূচিত হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশ আরও অনেকটা এগিয়ে যাবে, এভাবেই বাংলাদেশ উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছবে। এমনি এক বাস্তবতায় রবিবার জনকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে পাঁচ বছরে দারিদ্র্য হ্রাসের বিস্ময়কর, এক সংবাদ। বিশ্বের বহু দেশের চেয়ে নিম্ন আয় সত্ত্বেও বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাসে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। দেশে দারিদ্র্যের হার ২৩ শতাংশ হলেও অতি দারিদ্র্যের সংখ্যা মাত্র ১২ শতাংশ। এটি বিগত পাঁচ বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতা। পরিসংখ্যান বলে এটি পরিকল্পিত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সুফল। বলা যায়, সরকারের দারিদ্র্যবান্ধব উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের কারণেই দারিদ্র্য হার প্রত্যাশিত মাত্রায় কমে আসছে। দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০১০ সালে ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে কমেছে অতি দারিদ্র্যও। এ হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৩ শতাংশে, যা ২০১০ সালে ছিল ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ। বলা হয়েছে প্রতিবছর দারিদ্র্য কমছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ হারে। দারিদ্র্য কমার কারণ পরিকল্পিত অর্থনৈতিক কার্যক্রম, বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচী যেমন, ভিজিডি, ভিজিএফ, জিআর, ওএমএস কর্মসূচী, টেস্ট রিলিফ, কাবিখা এবং ফেয়ার প্রাইস কার্ড এসবের কার্যকর বাস্তবায়ন। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের এই অর্জন প্রশংসাযোগ্য। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে খাদ্য সরবরাহের পাশাপাশি তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচী রয়েছে। অতি দরিদ্র এলাকা বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল, উপকূলবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী রয়েছে। গত পাঁচ বছরে দেশের উত্তরাঞ্চলে মঙ্গার পদধ্বনি শোনা যায়নি। শ্রমিকদের মজুরিও দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ্যানেট ডিক্সন বলেছিলেন, দারিদ্র্য নিরসন ও মানব উন্নয়নে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতা থেকে অন্য দেশগুলো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। দারিদ্র্য হ্রাসের এই ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিতে হবে। এটাই হোক দারিদ্র্য মুক্তির পথ।
×