ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৩০ জুন ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

চকবাজারে হতো দাস কেনাবেচা বাংলার বারো ভূঁইয়াদের বিদ্রোহ দমনে মোগল সেনাপতি মানসিংহ বাংলায় আসেন ১৬০২ সালে। তিনি বাংলায় এসে ঢাকায় দুর্গ বানিয়ে তার সদর দফতর ভাওয়াল থেকে সরিয়ে স্থানান্তর করলেন। সেই দুর্গের চারপাশে গড়ে উঠেছিল বড় এক বাজার। মানসিংহ এই দুর্গ নির্মাণের এক শ’ বছর পর ১৭০২ সালে মুর্শিদ কুলি খাঁ এই বাজারটির নাম বদলে ‘পাদোশা’ বা ‘বাদশাহী বাজার’ রাখেন। প্রখ্যাত চার্লস ড’য়লি এই বাজার সম্বন্ধে লিখেছেন, “বাজারটি আগে ‘নাখাস’ নামে পরিচিত ছিল। এটি ছিল নিচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ২শ’ ফুটের একটি চৌকোনা চত্বর। আরবিতে ‘নাখাস’ কথাটির অর্থ দাস-বিক্রেতা।” চার্লস ড’য়লির লেখার সূত্র ধরে পরবর্র্তীতে ইতিহাসবিদরা এ নিয়ে গবেষণা করেছেন। সেসব গবেষণা থেকে এই সত্যটি বেরিয়ে এসেছে যে, সে সময়ে ‘নাখাস’ কিংবা ‘পাদোশা’ কিংবা ‘বাদশাহী বাজারে’ দাস কেনা-বেচা হতো। মুর্শিদ কুলি খাঁর জামাতা দ্বিতীয় মুর্শিদ খুলি খাঁ ১৭৩৩-৩৪ সালে বাজারটি সংস্কার করেন। ঐতিহাসিকদের মতে, সে সময় থেকে ‘পাদোশা’ কিংবা ‘বাদশাহী বাজার’ একটি পূর্ণাঙ্গ বাজার হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে এই বাজারের নাম বদলে হয়ে যায় চকবাজার। আঠারো শতকেও চকবাজারের জৌলুস ও ঐতিহ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। চার্লস ড’য়লি তুলিতে সে সময়ের চকবাজারের স্বর্ণালী বিভা ধরা পড়ে। সময়ের পরিবর্তনে চকবাজারের জৌলুস কমে যায়। তবে এখনও চকবাজার তার পুরনো সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। হাজী মোখলেস লালবাগ, ঢাকা পরীক্ষায় দুর্নীতি পরীক্ষা ছাত্র জীবনের মেধা বিকাশে বিশেষ সহায়ক। শ্রেণীকক্ষে তার জ্ঞান ছাত্রছাত্রীদের মাঝে কতটুকু প্রয়োগ করতে পেরেছেন এবং ছাত্রছাত্রীরা কতটুকু শিক্ষা অর্জনে সক্ষম হয়েছে সেটি পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়। পরীক্ষায় যখন একটি ছাত্র বা ছাত্রী তার প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করে এবং প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য নিজের মেধাকে কাজে লাগায় তখন তার মেধাকে সে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করতে সাহায্য করে। তবে ছাত্রছাত্রীদের সুন্দর ভবিষ্যতকে বিসর্জন দিয়ে যদি কোন শিক্ষক নিজেই উত্তর প্রদান করেন, তাহলে কেমন হয়? তাহলে শিক্ষক জাতিকে নিজে হাতে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেন। সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। খুলনা জেলা ডুমুরিয়া থানার শাহ্্পুর কেন্দ্রে এবং চুকনগর কেন্দ্র ছাড়াও আরও নাম না জানা অনেক পরীক্ষা কেন্দ্রে এই ধরনের ঘৃণ্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে ওই কলেজের শিক্ষকরা। বাংলা দ্বিতীয়পত্রের ব্যাকরণ ইংরেজী ‘প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় শিক্ষকরা উত্তরপত্র তৈরি করে দিয়েছেন। শাহ্্পুর কেন্দ্রে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের ২-৩ বার উত্তর বলা হয়েছে যাতে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারে এবং ওই কেন্দ্রের সুনাম হয়। আর চুকনগর কেন্দ্রেও একইভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ দুটি কেন্দ্র ছাড়াও আরও অনেকগুলো কেন্দ্রে এ ধরনের দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। এই ধরনের ঘৃণ্য ও জঘন্য দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য সরকারের কী কোন পথ খোলা নেই? এই অনিয়ম ও দুর্নীতি যদি চলতে থাকে তাহলে এ দেশের শিক্ষার মান কমে যাবে এবং মেধাবী অধ্যবসায়ী ছাত্রছাত্রীর রেজাল্ট অধ্যবসায়হীন ছাত্রছাত্রীর সমান হবে। তাহলে পরিশ্রম করে পড়াশোনার করার কী প্রয়োজন? পরীক্ষায় শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে পরীক্ষা দেয়ার মানসিকতা তৈরি হবে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর মাঝে। যা ছাত্রছাত্রীদের জীবন এবং জাতীয় জীবনের উন্নতির অন্তরায়। যে সমস্ত কেন্দ্র বা শিক্ষকরা এ ধরনের কাজে লিপ্ত তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করে এ দেশের ভবিষ্যতের কর্ণধাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খুলনা
×