ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেন শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১ জুলাই ২০১৫

ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেন শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননা অভিযোগ থেকে রক্ষা পেলেন ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল জব্বার ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। দুই শিবির নেতাকে ভবিষ্যতে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক করে দিয়ে ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়েছে। ৪ মে জারি করা রুলে শিবিরের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। গত ১৪ জুন তাদের পক্ষে রুলের জবাব দাখিল করেন তাদের আইনজীবী এ্যাডভোকেট এ ওয়াই মশিউজ্জামান। এরপর শুনানিতে তাদের পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চান অপর আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মুনির। একই অভিযোগসহ রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকায় গত ১২ জানুয়ারি শো’কজ (কারণ দর্শাও) নোটিস জারি করা হয়েছিল শিবিরের দুই নেতাসহ জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম এবং তিন জামায়াত নেতার বিরুদ্ধেও। বিভিন্ন সময়ে ওই ছয়জন এ নোটিসের জবাব দেন। জবাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে এবং ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তিন জামায়াত নেতাকে গত ৪ মে ক্ষমা করে দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের ভবিষ্যতের জন্য এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করে দেয়া হয়। ক্ষমাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতারা হচ্ছেন- জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুর রহমান। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-াদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়ের প্রতিবাদে ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি দু’দিনের হরতাল ডাকে জামায়াত। বিবৃতিতে এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নানা বিরূপ কথা বলেন, জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা। অন্যদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজহারের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো’। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় যে সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে তা এক ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলেও মন্তব্য করেন তাজুল। আজহারের এই আইনজীবী বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে ট্রেন থেকে আজহারকে নামতে যে তিনজন দেখেছেন বলে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের কেউ দেখেছেন ৬ কিলোমিটার দূর থেকে, কেউ ৩ কিলোমিটার ও আবার কেউ দেখেছেন দেড় কিলোমিটার দূর থেকে। এসব সাক্ষ্যের মাধ্যমে মৃত্যুদ- ঘোষণা করা ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলে আমরা মনে করি। এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, যেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে আজহারুল ইসলামকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, সেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক কাগজপত্র যদি ডাস্টবিনে ফেলা হতো তাতে সুবিচার হতো।
×