ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় বাজেট

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২ জুলাই ২০১৫

জাতীয় বাজেট

সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির উচ্চতর সোপানে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে গৃহীত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট কার্যকর হয় বুধবার থেকে। দুই লাখ পঁচানব্বই হাজার এক শ’ কোটি টাকার উচ্চাভিলাষী বাজেট গত ৩০ জুন জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিশাল ব্যয়ের এ বাজেটে কর সংস্কারের পাশাপাশি কর আদায়ের এক সাহসী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বাজেটের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থই রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে মধ্যবিত্তকে যেমন করছাড় দেয়া হয়েছে, তেমনি কর্পোরেট কর কমিয়ে শিল্প মহলের গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশে কর্মসংস্থানমুখী শিক্ষা গড়ে তোলার জন্য অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। গৃহীত বাজেটের লক্ষ্যই হচ্ছে প্রবৃদ্ধির উচ্চতর সোপানে পৌঁছা। সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্ন দেখানো হয়েছে বাজেটে। আর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। বাজেটে বিপুল ব্যয়ের বিধান যেমন আছে, তেমনি রয়েছে উপার্জনেরও পথনির্দেশ। গৃহীত এবারের বাজেট এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে অর্থমন্ত্রী বাজেটে একটি পথনক্সাও দিয়েছেন। এই নক্সায় তিনি স্বপ্নপূরণের কৌশল দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। এ জন্য তিনি উচ্চতর প্রবৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতাসমূহ চিহ্নিত করে তা দূরীকরণের উদ্যোগের কথা দেশবাসীকে অবহিত করেছেন। বাজেটে অবশ্য আয়-ব্যয়ের তারতম্যও বিশাল। এই বিপুল ঘাটতি মেটাতে বিদেশী ঋণ, দেশের ব্যাংক ও ব্যাংকের বাইরে থেকে ঋণ নেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে বাজেটের ইতিবাচক দিকই বেশি। প্রথমবারের মতো শিশু বাজেট রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুতায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর বিশ্বাস, সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির এক সম্ভাবনার দরজা উন্মোচিত হয়েছে। এতে চলতি মেয়াদে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দেশের কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের ব্যাপক হারে প্রসার ঘটবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। অন্যবারের তুলনায় এবারের বাজেট আকারে বড় হলেও এটি বিগত ছয়টি বাজেটের ধারাবাহিকতারই অংশ। ইতোপূর্বে প্রতিটি বাজেটেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আকার বেড়েছে। এবারের বাজেটকে সার্বিক অর্থেই বলা যায় জনবান্ধব বাজেট। অর্থমন্ত্রী সব ধরনের অকল্যাণকর ও জনবিরোধী কর্মকা- থেকে বিরত থেকে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, উন্নয়নকামী সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তাই বিশাল এ বাজেট বাস্তবায়ন একটি চ্যালেঞ্জই বটে। এটা বৃত্তভাঙ্গার চ্যালেঞ্জ। অবশ্য এই চ্যালেঞ্জ যুগেরই দাবি। বাজেটে রয়েছে দেশের উন্নয়নের নানা স্বপ্ন। এ স্বপ্ন সফল হোক এটাই জাতির কাম্য।
×