ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবশেষে জ্বলে উঠল আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২ জুলাই ২০১৫

অবশেষে জ্বলে উঠল আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোপা আমেরিকার গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচে চার গোল করে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। আর শেষ আটে নির্ধারিত সময়ে কোন গোলই করতে পারেনি জেরার্ডো মার্টিনোর দল। অথচ সেই দলকেই সেমিফাইনালে ভিন্নরূপে দেখা গেল বুধবার। প্রথম চার ম্যাচে মাত্র চার গোল করা আর্জেন্টিনা প্যারাগুয়ের জালে জড়ালো ৬ গোল। এদিন মেসি-এ্যাগুয়েরো আর মারিয়াদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে রীতিমতো উড়ে যায় প্যারাগুয়ে। দারুণ এই জয়ে আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ নিয়ে দারুণ তৃপ্ত কোচ জেরার্ডো মার্টিনো। দলের স্কোরলাইন প্রসঙ্গে প্যারাগুয়ের সাবেক এই অভিজ্ঞ কোচ বলেন, ‘প্যারাগুয়ের বিপক্ষে স্কোরলাইন ৬-১ হওয়ায় আমি খুবই সন্তুষ্ট। সেই সঙ্গে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠতে পেরেও আমি আনন্দিত।’ তবে সাবেক বার্সিলোনার এই অভিজ্ঞ কোচের আফসোস কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচের নিষ্প্রভ পারফরমেন্স নিয়ে, যেখানে নির্ধারিত সময়ে প্রতিপক্ষের জালে কোন গোল করতে পারেনি তারা। সে প্রসঙ্গ উঠলেই মার্টিনো বলেন, ‘টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত যদি আমাকে কোনকিছু সংশোধনের জন্য বলে তাহলে আমি কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রটার কথাই বলব। সেটা হার কিংবা জয় যাই হোক।’ গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচেও প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচটা কিন্তু দুর্ভাগ্য জেরার্ডো মার্টিনোর। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়। সেই ম্যাচের গোল দুটি করেছিলেন দলের সেরা দুই তারকা লিওনেল মেসি আর সার্জিও এ্যাগুয়েরো। সেই ম্যাচে প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ড্রয়ে আটকে যায় মার্টিনোর শিষ্যরা। দ্বিতীয় ম্যাচে মেসি-মারিয়াদের প্রতিপক্ষ ছিল উরুগুয়ে। জয়ের ব্যবধানটা ছিল ১-০। গোলদাতা সেই এ্যাগুয়েরো। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যানচেস্টার সিটির তারকা ফুটবলারের গ্রুপপর্বে গোল সংখ্যা ২। আর শেষ ম্যাচে গোল পাওয়া গঞ্জালো হিগুয়াইন ও মেসির সেমির আগে গোল সংখ্যা সমান ১টি করে। অথচ সেমিফাইনালেই জ্বলে উঠল আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি গোল না পেলেও পুরো ম্যাচেই তার পারফরমেন্স ছিল মুগ্ধ করার মতো। প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ের জালে জড়ানো ছয় গোলের তিনটিতেই তার অবদান, যে কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও নিজের ঝুলিতে তোলেন টানা চারবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। প্যারাগুয়েকে গোলবন্যায় ভাসানোর ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা ফুটবলার এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, ওল্ড ট্রাফোর্ডে যার সময়টা মোটেও ভাল কাটছে না। এছাড়া প্যারাগুয়ের লক্ষ্যভেদ করেছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্কোস রোজো, জ্যাবিয়ের পাস্টেরো, এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, সার্জিও এ্যাগুয়েরো ও গঞ্জালো হিগুয়াইন। ১৯৯৭ সালে কোপা আমেরিকায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল পেরুকে। আর সেই সেমিফাইনালের পর বুধবার প্যারাগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়টাই বড় ব্যবধানের জয়। আর ১৯৪৭ সালের পর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে এটাই আর্জেন্টাইনদের বড় জয়ের ইতিহাস। এর আগে আর্জেন্টিনা ৬-০ গোলে হারিয়েছিল প্যারাগুয়েকে। ইকুয়েডরে সেই হারের পর আরও একবার বড় ধাক্কা খেল প্যারাগুয়ে। কোপা আমেরিকার দীর্ঘ ৯৯ বছরের ইতিহাসে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২৪ বার খেলেছে আর্জেন্টিনা, যার সবকটিতেই জয়ের দেখা পেয়েছে ম্যারাডোনার দেশটি। এবার তাদের সামনে শিরোপা জয়ের হাতছানি। লিওনেল মেসি, এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, গঞ্জালো হিগুয়াইন আর সার্জিও এ্যাগুয়েরোদের নিয়ে সাজানো আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ যে কোন দলের জন্যই রীতিমেতা হুমকি। ডি মারিয়া আর হিগুয়াইনের গত মৌসুমটা ভাল কাটেনি। আর শিরোপা জিততে না পারলেও ব্যক্তিগত পারফরমেন্সে ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির এ্যাগুয়েরো। অন্যদিকে লিওনেল মেসির পারফরমেন্সেই তো ত্রিমুকুট জেতে বার্সা। সেই পারফরমেন্স এখন ফাইনালেও দেখার অপেক্ষা।
×